যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। উভয় পক্ষই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে দিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ থামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা জানান। যদিও বুধবার স্বাক্ষরিত সেই চুক্তির বিস্তারিত তিনি প্রকাশ করেননি।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল ইভেন্ট বিলের প্রচারণায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা গতকালই চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। চুক্তিতে, আমরা চীনকে উন্মুক্ত করতে শুরু করছি। এটি এমন কিছু যা আসলে কখনও ঘটতে পারত না।’

এদিকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে চীন। দেশটি জানায়, ওয়াশিংটন ‘নিষেধাজ্ঞামূলক ব্যবস্থা’ তুলে নেবে এবং বেইজিং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের অধীনে থাকা পণ্যগুলো ‘পর্যালোচনা ও অনুমোদন’ করবে।

মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছেন, গত মে মাসে জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একটি বাণিজ্য সমঝোতা চূড়ান্ত করে। তিনি আরও বলেন, খুব শিগগিরই ১০টি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারের সাথে চুক্তিতে পৌঁছানোর আসন্ন পরিকল্পনা রয়েছে হোয়াইট হাউসের।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় নির্ধারিত শর্তাবলীকে সংহত করে দুই দিন আগে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চীন থেকে বিরল খনিজ সরবরাহের প্রতিশ্রুতি যা বায়ু টারবাইন থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান সবকিছুতে ব্যবহৃত হয়।
 
লুটনিকের ভাষ্য, ‘তারা আমাদেরকে বিরল একটি খনিজ সরবরাহ করবে এবং এটি সম্পন্ন হয়ে গেলে, চীনের বিরুদ্ধে নেওয়া আমাদের পাল্টা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করব।’ 
 
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা চীনা পণ্যের ওপর চড়া শুল্ক আরোপ করেন। তবে চীন চুপ থাকেনি। বাণিজ্য যুদ্ধের বিরুদ্ধে সমানভাবে লড়াই চালিয়ে গেছে। এক পর্যায়ে ট্রাম্পের সুর নরম হয়ে আসে। আলোচনায় বসে সমস্যার সুরাহার প্রস্তাব দেন। সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এবং আল-জাজিরা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%

এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের

থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।

থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।

সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এফএওর সূচক কমেছে

প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।

চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের

অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় সমাবেশ 
  • সরবরাহ বাড়ছে শীতের আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপির, কমছে দাম
  • গ্রিস থেকে গ্যাস আমদানিতে সম্মত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
  • থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
  • ইউক্রেনের হামলা: নভোরো-সিয়েস্ক বন্দরের তেল রপ্তানি বন্ধ করল রাশিয়া
  • চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে
  • জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলার বরাদ্দ অর্থের বেশিরভাগ পাচ্ছে উষ্ণায়নে দায়ী দেশগুলো