জুলাই ঘোষণাপত্র অপূর্ণাঙ্গ, সংশোধন করতে হবে: জামায়াত নেতা পরওয়ার
Published: 7th, August 2025 GMT
জুলাই ঘোষণাপত্রকে ‘অপূর্ণাঙ্গ’ আখ্যায়িত করে এটির সংশোধন দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। এই ঘোষণাপত্রে একটি নির্দিষ্ট দলের চিন্তা-চেতনা প্রকাশ পেয়েছে বলে রাজনীতির ময়দানে গুঞ্জন উঠেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান স্মরণে ‘ছাত্র-শিক্ষক-জনতার অবদান ও করণীয়’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন।
আলোচনা সভায় জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, বিচারক হত্যা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং শিক্ষকদের অবদান—এসবের কিছুই জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়নি। এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ঘোষণাপত্রটি সংশোধন করতে হবে।
জুলাই ঘোষণাপত্রে ইসলামপন্থীদের অবদান মূল্যায়িত হয়নি বলেও দাবি করেন গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার তৈরি ঘোষণাপত্রটি অসম্পূর্ণ। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে। নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ইতিবাচক বলা হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে।’ নির্দলীয় সরকারের অধীনেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে সেই আলোকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিবাদ লুকিয়ে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। যাঁদের কারণে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল—সেই শ্রমিক, মুটে-মজুর ও শিক্ষকেরা জুলাই ঘোষণাপত্রে উপেক্ষিত। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে অন্তঃসারশূন্য এ ঘোষণাপত্র সংশোধন করতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি এম কোরবান আলী, সঞ্চালনা করেন ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করীম।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক উমার আলী, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নূর নবী, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা শাহজাহান মাদানী, বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যারা মনোনয়ন–বাণিজ্য করতে পারবে না, তারাই পিআর ঠেকাতে চায়: গোলাম পরওয়ার
নির্বাচনে যারা কোটি কোটি টাকার মনোনয়ন–বাণিজ্য করতে পারবে না, তারাই সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি ঠেকাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, সব দলের প্রতিনিধিত্বের মধ্য দিয়ে একটি অংশীদারির সংসদ হলে তারা কর্তৃত্ববাদী শাসন চালাতে পারবে না।
জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ পাঁচ দাবিতে রংপুরে আয়োজিত জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। রংপুর মহানগর ও জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জামায়াতের দাবিগুলো হলো—জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; ফ্যাসিবাদী সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সমাবেশে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বিএনপি পিআর মানতে চায় না। টানা ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না মানতে চায় না। সাংবিধানিক পদগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছামাফিক নিয়োগ বাদ দিতে আলাদা নিয়োগ কর্তৃপক্ষ হবে, সব জায়গায় এটা তাঁরা মানতে চান না। এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তাঁরা আপত্তি করছেন। পিআর তাঁরা এই জন্য মানতে চান না, কারণ যখন দলকে নির্বাচিত করা হয় তখন ব্যক্তির কোনো স্বার্থ থাকে না। এতে কোনো ব্যক্তি কালোটাকা, মাস্তানি, পেশিশক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে কারচুপি করতে কেন যাবে?’
রংপুরে পাঁচ দফা দাবিতে সমাবেশের পর বিক্ষোভ মিছিল বের করেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে নগরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠের সামনের সড়কে