নারী রাজনীতিতে কীভাবে আসবে, তার ভাগ্য কী হবে, আসন কত পাবে- এসব আলোচনা করছেন পুরুষেরা। মাছের বাজারের মতো দরাদরি করে এসব নির্ধারণ করা হচ্ছে।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে 'জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা  এসব কথা বলেন। এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো। এতে সংসদে নারী আসন নিয়ে ধারণাপত্র তুলে ধরেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।

ঐকমত্য কমিশনের কাছে খুব বেশি কিছু আশা করেননি জানিয়ে সামিনা লুৎফা বলেন,  ‘কমিশনের মিটিংয়ে রাজনৈতিক দলগুলো গিয়ে ওখানে যখন কথা বলে, যে ছবি দেখি, যে পুরো একটা বয়েজ ক্লাব। এখানে চারদিক জুড়ে সব পুরুষেরা বসে আছে এবং তারা ওখানে বসে নারীর ভাগ্য নির্ধারণ করছে।  আমরা খবর পাচ্ছিলাম, যে আপনারা যদি ১৫ চান, ১০ দিতে পারি। এটা কি মাছের বাজারে দরাদরি?’ তিনি আরও বলেন, ‘পুরুষেরা বসে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নারী কীভাবে রাজনীতিতে আসবে। এর চেয়ে হাস্যকর কিছু হতে পারে না।’

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো  নারীকে তার মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সামিনা লুৎফা। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের জায়গা থেকে বিবেচনা করলে, দলগুলো তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর চেয়ে বড় ঐতিহাসিক ভুল বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো আর কখনো করেনি বলে আমার ধারণা। একই সঙ্গে সবাই মিলে একটা ভয়ংকর রক্ষণশীল অবস্থান  নিলেন এবং এর দায় ও খেসারত তাদের দিতে হবে।’

প্রতিক্রিয়া জানাতে দেরি প্রসঙ্গে এই অধ্যাপক বলেন, ‘যখন এই কমিশনের মিটিং গুলো হচ্ছিল তখন আসলে গিয়ে ওইখানে ওনাদেরকে ঘেরাও দিয়ে বসে থাকতে হতো। তাহলে ওনারা বাধ্য হতেন আমাদের কথা শুনতে কিন্তু আমরা তো সেটা করি নাই।’

আরও পড়ুনজুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নারীকে সচেতনভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে: খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম১ ঘণ্টা আগে‘সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে প্রথম আলো.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র জন ত ক প রথম আল দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রসংগঠনগুলোর বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়ানো যেত বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি মনে করেন, ছাত্রসংগঠনগুলোর একটি রূপরেখা প্রণয়ন করে নিজেদের মধ্যে চুক্তি বা বোঝাপড়ায় আসা উচিত ছিল।

আজ শনিবার বিকেলে রাজশাহীর তেরখাদিয়া এলাকায় বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এ মন্তব্য করেন।

প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ-২০২৫–এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম প্রমুখ।

সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক বিক্ষোভের পর প্রশাসন সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমার মনে হয় যে এটা এই পর্যায়ে আসত না, যদি ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেরা বসে একটা সোশ্যাল কন্ট্র্যাক্ট বা নিজেরা একটা বোঝাপড়ায় আসতে পারত। যেহেতু ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় সংস্কার হচ্ছে, ছাত্ররাজনীতির বিষয়েও ছাত্রসংগঠনগুলোর একটা নতুন রূপরেখায় একমত হওয়া উচিত ছিল।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হল ও একাডেমিক এরিয়াতে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি কীভাবে চলবে বা চলবে কি না, এটা যদি আগেই ছাত্রসংগঠনগুলো বসে একটা চুক্তিতে আসত, এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, ছাত্ররাজনীতির প্রতি যে বিদ্বেষমূলক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটা হতো না। আমাদের ছাত্রসংগঠনগুলোর এখানে আরেকটু ম্যাচিউর (পরিপক্ব) হওয়ার সুযোগ ছিল।’

বিশ্ববিদ্যালয় হলে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের ব্যাপারে উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে উপদেষ্টা রাজি হননি।

রাজশাহীতে বিপিএল খেলার আয়োজনের ব্যাপারে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘তিনটি স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও বিপিএলের ম্যাচগুলো হয়ে থাকে। আমরা একটু ডিসেন্ট্রালাইজ করার জন্য উত্তরবঙ্গের দিকে রাজশাহী স্টেডিয়াম, দক্ষিণবঙ্গের দিকে খুলনা কিংবা বরিশাল স্টেডিয়াম নিয়েছি। আর সামনের বছর থেকেই বিপিএল আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি, সংস্কার শেষে রাজশাহী স্টেডিয়ামে বিপিএলের কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে পারব।’

এর আগে সকালে উপদেষ্টা রাজশাহী সার্কিট হাউসে ভার্চ্যুয়ালি স্থানীয় সরকার বিভাগের ১২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। দিনব্যাপী সফরে তিনি নাটোরেও বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ