হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা দেন ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা।

সোমবার রাত ৮টার দিকে তালা দেওয়ার আধা ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেটি ভেঙে ফেলেন।

তালা দেওয়া ব্যক্তি বুলবুল রহমান রাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নিয়োগপ্রত্যাশী হিসেবে এই প্রতিবাদ করেছেন।

আরো পড়ুন:

ডাকসুর মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেলে ভিপি-জিএস প্রার্থী চূড়ান্ত 

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ প্রত্যাশী বুলবুল রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী উর্দু বিভাগের ২০২৩ সালের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করেন। যেখানে আবেদনের যোগ্যতা ছিল অনার্স ও মাস্টার্সে সর্বনিম্ন ৩.

৫০ সিজিপিএ। বুলবুল রহমানের মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ ৩.৫০ এর ওপরে থাকলেও অনার্স পরীক্ষার ফলাফল ছিল সিজিপিএ ৩.৩৫। ফলে তিনি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৫ সালে উর্দু বিভাগে তিনজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলে বুলবুল রহমান সেটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট পিটিশন নম্বর ৮৮৩৭। হাইকোর্ট ১৩ জুলাই থেকে ৪ মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন।

বুলবুল রহমানের অভিযোগে, কলা অনুষদ থেকে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সিজিপিএ ৩.৫০ রাখা হলে বাণিজ্য অনুষদের ক্ষেত্রে সেটা ৩.৭৫ বা ৩.৮০ সিজিপিএ রাখা উচিত। কারণ বাণিজ্য অনুষদে রেজাল্ট ভালো করা তুলনামূলক সহজ এবং কলা অনুষদের ক্ষেত্রে আবেদনের যোগ্যতা ৩.৫০ সিজিপিএ রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন।

বুলবুল রহমান আরো বলেন, ‍আমি উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ সম্পর্কে হাইকোর্টে একটি রিট করেছিলাম। রিটে আমার পক্ষে রায় আসে এবং ৬ মাস শিক্ষক নিয়োগ স্থগিতের আদেশ জারি করেন। পরবর্তীতে আমার রিটের বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হাইকোর্টে আপিল করে। সেটাতে তাদের পক্ষেও রায় আসে, আমার পক্ষেও রায় আসে। সেখানে বলা আছে, ৪ মাসের মধ্যে পূর্ণ শুনানি করতে হবে। যেহেতু পূর্ণ শুনানি হয়নি, তাহলে শিক্ষক নিয়োগ তো স্থগিত রাখা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটা অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করছে।

গত ৭ আগস্ট ভাইভাতে (মৌখিক) ১৮ জনকে লিখিত পরিক্ষায় টেকানো হয়েছে এবং ছয়জনকে সিলেকশন করা হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ছিল তিনজন নেওয়ার কথা। এ বিষয়ে আমি উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খান স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কথা বলি। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে ৩ জনের সার্কুলার ছিল এবং ২০২৫ সালে ৩ জনের সার্কুলার হয়। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে আমি ভিসি স্যারের বাস ভবনে তালা দিয়েছি। তার কারণ হলো তারা আইন অবমাননা করে কলা অনুষদের শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন রাবি শাখা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক বুলবুল রহমান।

বি প্রশাসন হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে উর্দু বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে কি না, জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিগ্যাল সেলের প্রশাসক অধ্যাপক আব্দুর রহিম মিয়ার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

রাবির প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থী নিজেকে ভুক্তভোগী মনে করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আজকে সেগুলো চূড়ান্ত করার জন্য সিন্ডিকেটের সভা ছিল। আমার ধারণা, সে উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়ে সিন্ডিকেট সভা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছিল, যাতে সিন্ডিকেট সভার সদস্যরা আসতে না পারেন। তার কথা হচ্ছে, তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

আমার ধারণা, তার যোগ্যতা না থাকায় তার বিভাগ হয়তোবা তার আবেদনপত্র গ্রহণ করেনি। সে মামলাও করেছে, মামলার শুনানিও হয়েছে। মামলার নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিভাগের নিয়োগের সম্পন্ন করেছে। সে চাইলে আবার আপিল করতে পারে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে বিশ্ববিদ্যায়রে একজন সাবেক শিক্ষার্থীর উপচার্যের বাসভবনে তালা দেওয়া সমীচীন নয়। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনকও," যোগ করেন অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।

ঢাকা/ফাহিম/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল চ র য র ব সভবন ন য় গ প রক র য় র য গ যত উপ চ র য ছ ত রদল অন য য়

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে দেড় শ বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট, জনপ্রতিনিধিসহ ৫ জন কারাগারে

চট্টগ্রামের রাউজানে দেড় শ বছরের বেশি পুরোনো পুকুর ভরাট করার অভিযোগে একজন জনপ্রতিনিধিসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদুল হক এই আদেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার করা একটি মামলার শুনানিতে তাঁরা হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন।

কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ খোরশেদুল ইসলাম (৫০), একই ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম (৪৮), আলী আকবর (৬০), মকবুল আহমদ (৫৫) ও মুহাম্মদ খোরশেদ (৫২)। ২০২৩ সালের ৩১ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করেছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন মুহম্মদীয়া দরবার শরিফ–সংলগ্ন ১৬০ বছর আগে খনন করা পুকুরটি ২০২১ সালে ভরাটের কাজ শুরু করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় তা বন্ধ হয়। এরপর ২০২৩ সালের শুরুতে আবারও কর্ণফুলী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে পুকুরটি ভরাটের কাজ শুরু করেন তাঁরা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দেন। সে সময় পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্তে গিয়ে সত্যতা পান। এরপরও তখনকার জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই পুকুর ভরাট করেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দাবি, তাঁরা সামাজিকভাবে কবরস্থান বানানোর জন্য মালিকদের সম্মতি নিয়ে এটি ভরাট করেছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুকুর ভরাটের ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে গেলে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্র সংসদের দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৃঢ অবস্থান
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে তালা দিলেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা
  • ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল
  • রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে: আমীর খসরু
  • রাউজানে দেড় শ বছরের পুরোনো পুকুর ভরাট, জনপ্রতিনিধিসহ ৫ জন কারাগারে
  • চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ
  • ঢাবিতে ছাত্রদলের মৌন মিছিল
  • রাস্তায় মানষিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান প্রসব, যেভাবে বাঁচল নবজাতক