বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিলে দেরি, ফারইস্ট ফাইন্যান্সকে সতর্কবার্তা
Published: 22nd, September 2025 GMT
পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএফআইএল) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব করেছে। এ কারণে কোম্পানিকে সতর্কবার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতে আইন মেনে চলার কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারে ৩ শতাধিক কোম্পানির দরপতন
জেড ক্যাটাগরিতে দুই কোম্পানি
সম্প্রতি ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিএসইসির পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মাধ্যমে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। সময় মতো প্রতিবেদন জমা না দেওয়া হলে বিনিয়োগকারীরা সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হন, যা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে।
বিএসইসর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর বিধি ১৪(৪) এবং ২০২৮ সালের জারি করা কমিশনের নির্দেশনার শর্ত ৫ অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত বছরের বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন চলতি বছরের ১৪ মের মধ্যে দাখিল করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড উক্ত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন ১৭ মে দাখিল করেছে, যা নির্ধারিত সময়সীমার ৩ দিন পর। এতে প্রতীয়মান হয় যে, কোম্পানিটি উক্ত বিধান এবং নির্দেশনার শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। এই ধরনের অবহেলা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের শামিল, যা ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং মূলধন বাজারের শৃঙ্খলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী সময় থেকে আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষেত্রে সকল সিকিউরিটিজ আইন, বিধি ও নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় কমিশন সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী আপনাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই সতর্কবার্তা প্রতিষ্ঠানটিকে কোনোভাবেই আইনের অধীনে তাদের বৈধ দায়িত্ব বা বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের ত্রুটির কারণে যদি কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তবে তার দায়ভারও বহন করতে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএসইসির এই সতর্কবার্তা অন্যান্য তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একটি বার্তা বহন করে। আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে গাফিলতি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করতে পারে। তাই সময়সীমা মেনে তথ্য প্রকাশ করা কোম্পানিগুলোর জন্য অপরিহার্য।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসিইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, “সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত আইন পরিপালনের বিষয়ে বর্তমান কমিশন আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফারইস্ট ফাইন্যান্সকে যে বিষয়ে বিএসইসি সতর্ক করেছে, সেটা অন্যান্য তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সতর্কবার্তা।”
ঢাকা/এনটি/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ক উর ট জ ব এসইস সতর ক
এছাড়াও পড়ুন:
বড় অর্থায়নে পুঁজিবাজারের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে বড় বড় অর্থায়নের ক্ষেত্রে আয়কর ও ব্যাংকিং খাতের উপর নির্ভর করলে হবে না। এক্ষেত্রে ক্যাপিটাল মার্কেটের (পুঁজিবাজার) ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে। এখান থেকে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রজেক্ট করা সম্ভব।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যৌথভাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
এ সময় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ সদস্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং মার্কেট সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “শেয়ারবাজারের ছোট বিনিয়োগকারীরা মনে করে বিনিয়োগ করলেই মুনাফা নিশ্চিত, এই বাজারে যে ঝুঁকি আছে, তা তারা মানতে চান না।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অনেক খেলাপি হয়েছে। যা বাংলাদেশে ট্রাজেডিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া, বেক্সিমকোর সুকুক বন্ড খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই আগামীতে সুকুক ইস্যুর ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।”
অন্যান্য দেশে আয়কর বেশি দিলেও জনগণ সেবা পায় বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশে মানুষ আয়কর দিয়ে সেবা পায় না। এ কারণে জনগণের মধ্যে গোস্যা আছে। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণে এনবিআরকে সেবা দেওয়ার জন্য বলেছি। তাহলে আয়কর বাড়বে।”
ঢাকা/এনটি/ইভা