পুঁজিবাজারে আর্থিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড (এফএফআইএল) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলে বিলম্ব করেছে। এ কারণে কোম্পানিকে সতর্কবার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রতিষ্ঠানটিকে ভবিষ্যতে আইন মেনে চলার কঠোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজারে ৩ শতাধিক কোম্পানির দরপতন

জেড ক্যাটাগরিতে দুই কোম্পানি

সম্প্রতি ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিএসইসির পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মাধ্যমে বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। সময় মতো প্রতিবেদন জমা না দেওয়া হলে বিনিয়োগকারীরা সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হন, যা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলে।

বিএসইসর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ২০২০ এর বিধি ১৪(৪) এবং ২০২৮ সালের জারি করা কমিশনের নির্দেশনার শর্ত ৫ অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত বছরের বার্ষিক নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন চলতি বছরের ১৪ মের মধ্যে দাখিল করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড উক্ত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন ১৭ মে দাখিল করেছে, যা নির্ধারিত সময়সীমার ৩ দিন পর। এতে প্রতীয়মান হয় যে, কোম্পানিটি উক্ত বিধান এবং নির্দেশনার শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। এই ধরনের অবহেলা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের শামিল, যা ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং মূলধন বাজারের শৃঙ্খলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী সময় থেকে আর্থিক প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষেত্রে সকল সিকিউরিটিজ আইন, বিধি ও নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হলো। অন্যথায় কমিশন সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী আপনাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই সতর্কবার্তা প্রতিষ্ঠানটিকে কোনোভাবেই আইনের অধীনে তাদের বৈধ দায়িত্ব বা বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের ত্রুটির কারণে যদি কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তবে তার দায়ভারও বহন করতে হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএসইসির এই সতর্কবার্তা অন্যান্য তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও একটি বার্তা বহন করে। আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশে গাফিলতি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করতে পারে। তাই সময়সীমা মেনে তথ্য প্রকাশ করা কোম্পানিগুলোর জন্য অপরিহার্য।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসিইসির একজন কর্মকর্তা বলেন, “সিকিউরিটিজ সংক্রান্ত আইন পরিপালনের বিষয়ে বর্তমান কমিশন আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ফারইস্ট ফাইন্যান্সকে যে বিষয়ে বিএসইসি সতর্ক করেছে, সেটা অন্যান্য তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সতর্কবার্তা।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ক উর ট জ ব এসইস সতর ক

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসইসির নতুন মার্জিন রুলসের গেজেট প্রকাশ

নতুন মার্জিন রুলসের গেজেট প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মার্জিন রুলস, ১৯৯৯’ রহিত করে নতুন ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্জিন রিপিল) রুলস, ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রকাশিত সরকারি গেজেট অনুযায়ী, নতুন এই বিধিমালা গত ৩০ অক্টোবর বিএসইসি কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

আরো পড়ুন:

টানা ৫ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে সূচকের পতন

শেয়ার ফেরত না দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাওয়ের আলটিমেটাম

গেজেটে উল্লেখ করা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের XVII) এর ধারা ৩৩ দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এতদ্বারা মার্জিন বিধি, ১৯৯৯ বাতিল করছে। নতুন বিধির নাম রাখা হয়েছে-‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্জিন রিপিল) রুলস, ২০২৫’। এটি কার্যকর হবে ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্জিন) রুলস, ২০২৫’ কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে।

তবে গেজেটে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর অধীনে ইতোমধ্যে গৃহীত বা সম্পন্নকৃত যেকোনো পদক্ষেপ, মামলা বা আইনি কার্যক্রম নতুন বিধিমালা কার্যকর হলেও বলবৎ থাকবে। এসব কার্যক্রম পূর্ববর্তী বিধির অধীনে সম্পন্ন হবে এবং বৈধ গণ্য হবে।

এছাড়া নতুন বিধি কার্যকর হওয়ার পূর্বে চলমান কোনো আইনি মামলা বা প্রসিকিউশন মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা যাবে এবং সেই বিধি কার্যকর বলেই গণ্য হবে যতক্ষণ পর্যন্ত নতুন বিধিমালা সম্পূর্ণরূপে কার্যকর না হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ বিনিয়োগকারীকে ৪০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
  • বিএসইসির নতুন মার্জিন রুলসের গেজেট প্রকাশ
  • পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন স্থগিত
  • সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে, বাজারে উদ্বেগ