দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাতক্ষীরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার
Published: 25th, September 2025 GMT
দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাতক্ষীরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)। ভিসাবিহীন অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান এবং যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে সীমান্ত এলাকায় টহল বৃদ্ধি করেছে তারা। যে কোনো প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা সহযোগিতা দিতে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
বিজিবি জানায়, সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকার ৪৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা আয়োজন করা হচ্ছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং স্বস্তির সঙ্গে যাতে সেখানকার বাসিন্দারা পূজা উদযাপন করতে পারেন সে কারণে দিনরাত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় মোবাইল পেট্রোল কার্যক্রমও পরিচালনা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
সীমান্তে আটক ১০ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ
নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
দুর্গপূজা উপলক্ষে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়াদি অবগত করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর দায়িত্বপূর্ণ সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া সীমান্ত এলাকায় ১৫টি বিওপি/ক্যাম্প ও একটি বেইজ ক্যাম্পের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী ৪৭টি পূজা মণ্ডপে (পদ্মশাখরা এলাকায় ২টি, ভোমরা এলাকায় ১টি, গাজীপুর এলাকায় ৬টি, ঘোনা এলাকায় ৩টি, বাঁকাল এলাকায় ৪টি, বৈকারী এলাকায় ১টি, কুশখালী এলাকায় ৩টি, তলুইগাছা এলাকায় ২টি, কাকডাঙ্গা এলাকায় ৪টি, ঝাউডাঙ্গা এলাকায় ১৫টি, মাদরা এলাকায় ১টি হিজলদী এলাকায় ২টি ও চান্দুরিয়া এলাকায় ১টি) শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
তিনি জানান, সীমান্তবর্তী এলাকায় সম্ভাব্য অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, নাশকতা ও দুষ্কৃতকারীদের যেকোনো তৎপরতা রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। প্রতিটি মণ্ডপে দায়িত্বপ্রাপ্ত পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বয় করা হচ্ছে। যে কোন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক নিরাপত্তা সহযোগিতা দিতে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব
বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে শেষ হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) শহরের ৫নম্বর খেয়াঘাটে সন্ধ্যা থেকে প্রতিমা বিসর্জন চলে। শহরের বিভিন্ন পূজামন্ডপের প্রতিমা শীতলক্ষ্যা নদীতে বিসর্জন করা হয়। ঢাকের বাদ্য আর উলুধ্বনির সাথে প্রতিমা বিসর্জনের সাথে সাথে যেন বিদায়ের সুর বেজে ওঠে শীতলক্ষ্যার তীরে।
শহরের বিআইডব্লিউটিএ’র ৩নং ঘাটে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার আয়োজন করা হয়।
প্রতিমা বিসর্জনে একে একে চলে রামকৃষ্ণ মিশন, আমলাপাড়া, সাহাপাড়া, উকিলপাড়া, নিতাইগঞ্জ, টানবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অন্যান্য মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন। এছাড়া শহরতলীর বিভিন্ন মন্ডপ ও উপজেলা পর্যায়ে মন্ডপগুলোর প্রতিমা কাছাকাছি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিজয়া দশমী উপলক্ষে বিভিন্ন পূজামন্ডপ ও মন্দিরে চলে পূজা ও অর্চনা। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা ঢাকের তালে মাতেন সিঁদুর খেলায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাসমতে পূজনীয় দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে মর্ত্যে আসেন এবং বিজয়া দশমীতে তিনি ঘোড়ায় আসীন হয়ে স্বর্গে প্রত্যাবর্তন করেছেন।
বিসর্জন উপলক্ষে ঘাটে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সকল ব্যবস্থা আগেই সম্পন্ন করে রেখেছিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল।
ট্রাক, পিকআপ, ভ্যানে করে দলে দলে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য শীতলক্ষ্যার পাড়ে আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। বিসর্জনে পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দেখা গেছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার পুরো জেলায় ২২৪টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়। আলোকসজ্জায় ও বাহারি কারুকার্যে সাজানো হয় প্রতিটি মন্ডপ।
নারায়ণগঞ্জের পূজামন্ডপ পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি র্যাব মহাপরিচালক, ডিসি , এসপি থেকে শুরু থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আসেন।
মন্ডপগুলোতে ছিল বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও ছিল কড়া নজরদারি। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়া এবার নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে দুর্গোৎসবের আয়োজন শেষ হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন বলেন, নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী এই দুর্গোৎসব দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে। যা বুঝিয়ে দিয়েছে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এবারে পুজোয় আনন্দের কোন কমতি ছিলো না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরে এবার ২২৪টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে । কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে । এতেই বোঝা যায় নারায়ণগঞ্জ একটি সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির জেলা ।
সকল উৎসব আমরা একসাথে উৎযাপন করে থাকি । শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হওয়ায় জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সকল রাজনৈতিক দলসহ নারায়ণগঞ্জবাসীকে জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এসময়ে প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, সদস্য মাসুদ রানা, ডাঃ মজিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, সহ- সভাপতি তিলোত্তমা দাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ- সভাপতি সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাশ, মহানগরের সভাপতি লিটন চন্দ্র পালসহ বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।