তর্ক-বিতর্ক ও বিভক্তি সৃষ্টি না করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লোর প্রতি আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার (২৭ সেপেম্বর) ‘সংস্কার নির্বাচন: প্রেক্ষিত জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন। 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে খসরু আরো বলেন, ‘‘তর্ক-বিতর্ক ও বিভক্তি সৃষ্টি না করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনার পর প্রত্যেকে যাতে মুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারে, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল তাদের কথাগুলো মুক্তভাবে বলতে পারে, সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে- এগুলো হচ্ছে মূল বিষয়। এগুলোতে না গিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে ‘কিন্তু’ ‘প্রশ্ন’ ‘কনফিউশন’ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি।’’

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চর্চা চলছে। এই চর্চার মাধ্যমে ক্ষতি বেশি হচ্ছে কি না তা আমাদের বিবেচনা করতে হবে।’’

তিনি প্রশ্ন রা‌খেন, ‘‘জাতিকে কি আমরা কনফিউজ করছি? প্রতিনিয়ত জাতির মধ্যে কি আমরা বিভেদ সৃষ্টি করছি কোনো কারণ ছাড়া? খুবই পরিষ্কার কথা, প্রত্যেক দলের চিন্তা-ভাবনা ও দর্শন ভবিষ্যৎ রূপরেখা থাকবে। আপনি নিয়ে যান আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে, আপনি ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসেন, পাস করেন।’’

‘‘ঐকমত্য কমিশনে কতদিন চর্চা করলাম, এখন আবার কমিশনের মতের বাইরে গিয়ে আবার নতুন নতুন দাবি নিয়ে জাতিকে বিভক্ত করবেন! যে সমস্ত দেশ এই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে এই প্রক্রিয়াতে ঢুকছে, এই চক্রের মধ্যে যারা পড়েছে সেই সমস্ত দেশ আজ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায়। আমরা বাংলাদেশ কিন্তু সেদিকে নিয়ে যেতে পারবো না, আগে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন ডেমোক্রেটিক অর্ডার দেশে ফিরিয়ে আনেন।’’

ডেমোক্রেটিক অর্ডারের অনুপস্থিতির কার‌ণে আজকে বাংলাদেশ খারাপ অবস্থায় র‌য়ে‌ছে ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।

তি‌নি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের তো সমস্যার শেষ নেই। সুতরাং মনে হয়, প্রত্যেকটি দল জনগণের সঙ্গে তাদের আগামীর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানোর কথা বলা দরকার এবং বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করছি। ১৮ মাসে এক কোটি লোকের চাকরি দেব, আমরা ব্যবস্থা করবো। আমরা বাংলাদেশের জনগণের বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

‘‘শুধু রাজনৈতিককে গণতান্ত্রিক করলে তো চলবে না। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ রাজনীতিতে যেভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ইকুয়াল এক্সেস পাবে, অর্থনীতিতে ইকুয়াল এক্সেস সবাইকে পেতে হবে,’’ যোগ ক‌রেন দলের এই জ্যেষ্ঠ নেতা।

তিনি বলেন, ‘‘আগামীর বাংলাদেশ গড়ার জন্য পুরো একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতে আমাদের ঢুকতে হবে। কোনো সাইকেল যদি ডেমোক্রেটিক সাইকেল না হয়, শুধুমাত্র নির্বাচিত সরকার হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র কাজ করবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র তখনই কাজ করবে যখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যেকটি বিষয় সম্পৃক্ত হতে পারবে।  তারা অংশীদার হতে পারবে।’’

অনুষ্ঠা‌নে আরো বক্তব্য রা‌খেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ব্র্যাক চেয়ারম্যান ডক্টর হোসেন জিল্লুর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ জাতীয় ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক ক অর ড র জনগণ র

এছাড়াও পড়ুন:

ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেই আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে যত বাধাই আসুক জনগণ তা প্রতিহত করবে। এটাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন সরকারের বৈধতা ও জনগণের সামাজিক চুক্তি। 

বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক সমিতি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঝিনাইদহ ডায়াবেটিস হাসপাতাল চত্বরে এ সভার আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন:

বিসিবি নির্বাচন করবেন না তামিম

দোকানের ঠিকানায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ‘যোগ্য’ তালিকায় ‘ইসিয়া’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। সঞ্চালনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, অনেকেই বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আপনাদের বলতে চাই, ২০০৯ সাল থেকে লাখ লাখ মানুষ রাজনৈতিক হামলা মামলার শিকার হয়েছেন, হাজার হাজার মানুষ গুম হয়েছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিদায়ে সাংবিধানিক সকল পথ যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন দেশের ছাত্র-জনতা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। ছাত্র-জনতার এই বিজয় দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ উন্মুক্ত করেছে। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিই বর্তমান সরকারের বৈধতা দিয়েছে। জনগণ এই সরকারকে সেই ক্ষমতা দিয়েছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর যত সভ্যতা আছে, সকল সভ্যতায় যেসব সরকার অতীতে গঠিত হয়েছে, তার মধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সবচেয়ে বৈধ সরকার। যারা দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল, তারা আগামী নির্বাচন বানচালে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। 

মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, ঝিনাইদহ ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান মনা, মো. আক্তারুজ্জামান, মো. জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ঢাকা/সোহাগ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সক্ষমতাহীন ও নামসর্বস্ব সংস্থাগুলো বাদ দিন
  • সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই: রাশেদ খান
  • প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক
  • ১৭ বছর এক অসুর জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল: নিপুন রায় 
  • নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি: আমীর খসরু
  • অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • এমন মানুষও আছে, যারা বলছে ৫ বছর থাকুন, ১০ বছর থাকুন, ৫০ বছর থাকুন
  • স্বৈরতন্ত্র উত্থানের দায় আসলে কাদের
  • পিআরের নামে জামায়াত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে: কায়সার কামাল