ডিভি লটারিতে বাংলাদেশের নাম না থাকা নিয়ে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা
Published: 23rd, October 2025 GMT
ডিভি লটারিতে বাংলাদেশের নাম না থাকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ২০২৬ সালের ডিভি লটারির তালিকাতে বাংলাদেশের নাম না থাকাকে ‘নতুন দুঃসংবাদ’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে দৈনিক জনকণ্ঠ ও আজকের কণ্ঠ নামের একটি ফেসবুক পেজ। এছাড়া একই ধরনের তথ্য দিয়ে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা পেইজ থেকেও ফটোকার্ড শেয়ার করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
ডিজিটাল সাংবাদিকতায় প্রশিক্ষণ দিল পিআইবি
‘নির্বাচন প্রলম্বিত করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ওৎ পেতে আছে’
তবে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ২০১২ সাল থেকে ডিভি লটারির তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। ফলে, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের নাম না থাকা কোন নতুন সংবাদ বা ‘দুঃসংবাদ’ নয়, বরং এটা বিগত ১৩ বছরের ধারাবাহিকতা। কারণ ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি এই ভিসার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছে বলে ওই বছরই দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসনের কোটা পূর্ণ হয়েছিল।
ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) লটারি হলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি অভিবাসন কর্মসূচি, যার মাধ্যমে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হয়। যেসব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম তারাই এতে অংশ নিতে পারে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত ব্যক্তিরা ‘গ্রিন কার্ড’ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী নাগরিকত্বের পথে এগোতে পারেন।
বাংলাফ্যাক্টের তথ্যমতে, গত এক বছর ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং দেশটি থেকে পরিচালিত কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং দেশের বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। এসব ভুয়া তথ্যের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, চব্বিশের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া শত শত ভুল তথ্য ইতোমধ্যে শনাক্ত করেছে বাংলাফ্যাক্ট। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধে কাজ করছে এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে সচেষ্ট রয়েছে।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েল থাকায় ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতা বর্জন করছে ইউরোপের কোন চার দেশ
ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলকে অংশগ্রহণের অনুমোদন দেওয়ার পর প্রতিযোগিতাটি বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া।
এরা সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম, যারা গাজায় যুদ্ধ এবং ভোটে অনিয়মের অভিযোগে ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।
ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ) জানায়, জেনেভার এক বৈঠকে সদস্যদের একটি ‘বড় অংশই’ মত দেয়, (প্রতিযোগিতায়) অংশগ্রহণ নিয়ে আর কোনো ভোটাভুটির প্রয়োজন নেই এবং ২০২৬ সালের ইউরোভিশন আগের পরিকল্পনামতোই চলতে পারে।
এ বিষয়ে গোপন ব্যালটের দাবির পক্ষে সোচ্চার স্পেনের জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভিই বলেছে, এই সিদ্ধান্ত ‘উৎসবটির আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অবিশ্বাস’ বাড়িয়ে দিয়েছে।
গাজায় ভয়াবহ প্রাণহানি হয়েছে এবং সেখানে চলমান মানবিক সংকটে এখনো অসংখ্য বেসামরিক মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে রয়েছে উল্লেখ করে আয়ারল্যান্ডের জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই বলছে, মনে হচ্ছে এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করাটা বিবেকহীনের মতো কাজ হবে।
ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশগুলোর একটি।
এসব দেশের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠার সুযোগ পান। কারণ, এসব দেশের সম্প্রচারমাধ্যমগুলো ইবিইউকে সবচেয়ে বড় আর্থিক অনুদান দেয়।
প্রতিযোগিতার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার বিবিসিসহ প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউর বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিযোগিতাটি প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি মানুষ দেখে।
ওদেরকে নতুন কিছু নিয়মের পক্ষে সমর্থন দিতে বলা হয়। যেগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে—সরকার এবং তৃতীয় পক্ষকে তাদের প্রতিযোগীদের জন্য সংগঠিতভাবে ভোটের প্রচার চালানো থেকে নিরুৎসাহিত করা। কারণ অভিযোগ উঠেছিল, এ বছর ইসরায়েল তাদের প্রতিযোগী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে (অনলাইন ক্যাম্পেইনে) অন্যায্যভাবে সমর্থন বাড়িয়ে দিয়েছিল।
বিবিসি নিউজ নিশ্চিত করেছে, যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ভোটের আয়োজন করা হয়, সেখানে একটি শর্তও যুক্ত ছিল। শর্তটি ছিল, প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে আর কোনো ভোটাভুটি হবে না এবং এ বিষয়ে সদস্যরাও একমত হয়।
ইবিইউ বলেছে, এই ভোটের অর্থ হলো সব ইবিইউ সদস্যের মধ্যে যারা ২০২৬ সালের ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায় এবং নতুন নিয়মগুলো মানতে সম্মত, তারাই অংশগ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতার পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, তিনি ‘খুশি’ যে ভোটের আগে ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে সদস্যদের ‘বিতর্ক করার সুযোগ’ দেওয়া হয়েছিল।
গ্রিন বলেন, ‘বিতর্কটি ছিল খোলামেলা, সৎ এবং যথেষ্ট মর্মস্পর্শী। কিন্তু আমরা ফলাফলে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, সবাই সত্যিই বিশ্বাস করে যে ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতাকে রাজনৈতিক মঞ্চের মতো ব্যবহার করা উচিত নয়। এটির কিছুটা নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে।’
প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলকে অংশ নিতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ। তিনি বলেন, তিনি ‘খুশি যে ইসরায়েল আবার ইউরোভিশনে অংশ নেবে এবং আশা করেন প্রতিযোগিতা এমন একটি অনুষ্ঠান হিসেবে থাকবে, যা সংস্কৃতি, কবিতা, মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব এবং সীমান্তপারের সাংস্কৃতিক বোঝাপড়াকে শুদ্ধ করবে।’
তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন কমিউনিটির মধ্যকার গভীর বিভক্তিকে সবার সামনে এনেছে।
এক বিবৃতিতে ডাচ সম্প্রচারমাধ্যম অ্যাভ্রোট্রস বলেছে, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ করা জনগণের মূল্যবোধের (যা আমাদের জন্য অপরিহার্য) সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।’
স্প্যানিশ সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভিই আরও যোগ করে, ‘আরটিভিই-এর পরিচালনা বোর্ড গত সেপ্টেম্বরে সম্মত হয়েছিল, ইসরায়েল এতে অংশ নিলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে যাবে।’
‘এই সরে যাওয়ার অর্থ আরটিভিই ইউরোভিশনের ২০২৬ সালের ফাইনাল তো বটে, এমনকি প্রাথমিক সেমিফাইনালগুলোও সম্প্রচার করবে না।
স্লোভেনিয়ার সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভি জানিয়েছে, (এ বিষয়ে) তাদের অবস্থানও ‘অপরিবর্তিত’ থাকবে।
আরটিভি জানিয়েছে, ‘সাম্প্রতিক নিয়মের পরিবর্তনগুলো আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারেনি। একটি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম হিসেবে আরটিভি স্লোভেনিয়া নৈতিক নীতিমালা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা আশা করে, সব ইবিইউ সদস্য ও অংশগ্রহণকারী দেশে সমান নিয়ম ও মানদণ্ড প্রযোজ্য হবে।’
বেলজিয়ামের সম্প্রচারমাধ্যম জানিয়েছে, তারা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে একটি পক্ষ নেবে।