খারি পিয়েরে ক্যাচটা ধরতেই হাতের ব্যাটটা মাটিতে ফেলে দিলেন সৌম্য সরকার। চোখেমুখে অবিশ্বাস তখন স্থির দাঁড়িয়ে নন স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে রানের জন্য দৌড়ে আসা তাওহিদ হৃদয়।
পিঠে হাত বুলিয়ে সৌম্যকে স্বান্তনা দিলেন। ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে হতাশায় পা–ই যেন চলছিল না তাঁর। ৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেললেও অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার আক্ষেপ থাকাই স্বাভাবিক।
সৌম্যর ইনিংসের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। প্রথম ৭ বলে রান পাননি। তখন ১২ বলে ১৪ রানে অপরাজিত তাঁর সঙ্গী সাইফ হাসান। চাপটা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছিল সৌম্যর ওপর। রোস্টন চেজের বলে ওয়াইড স্লিপে দাঁড়িয়েছিলেন জাস্টিন গ্রিভস। সৌম্যর ব্যাটের কানায় লেগে কিপার ও স্লিপের মাঝখান দিয়েই বলটা চলে যায় বাউন্ডারিতে। এরপর সৌম্য এমন দারুণ একটা ইনিংস খেলবেন, তা হয়তো তখনও কারও ভাবনায় ছিল না।
১৭৬ রানের জুটি গড়েন সাইফ–সৌম্য.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট
ফতুল্লায় এক ব্যবসায়ীর ফার্নিচারের দোকানে হামলা, মারধর, লুটপাট ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী আঃ রহমান খোকন (৩৮) ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
খোকন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে খোকন স্টোর নামের ফার্নিচারের দোকান পরিচালনা করছেন। অভিযুক্ত নুর আলম ও সালেহ বাবু এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক হিসেবে পরিচিত। তারা দলীয় পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।
ব্যবসায়ী খোকনের অভিযোগ, প্রায় এক মাস আগে থেকে অভিযুক্তরা তার নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা হত্যার হুমকি দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে, খোকন ও তার দোকানের কর্মচারী মিলন (৪৮) দোকানে বসে হিসাব-নিকাশ করছিলেন। সেই সময় নুর আলম, সালেহ বাবু এবং তাদের সহযোগী ৭-৮ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে।
খোকন তাদের চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, অভিযুক্তরা তাকে বেদম মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখম করে এবং গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। তার স্ট্যাফ মিলন প্রতিরোধ করতে গেলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আহত করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা টেনে-হিঁচড়ে দোকানের বাইরে নিয়ে গিয়ে খোকনের প্যান্টের পকেট থেকে ব্যবসায়িক কাজে রাখা ১ লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।
পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে যায় যে, সাত দিনের মধ্যে তাদের দাবীকৃত ৫ লাখ টাকা না দিলে ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হবে, দোকানেও বড় ধরনের হামলা চালানো হবে।
পরবর্তীতে আহত খোকন ও তার কর্মচারী মিলন স্থানীয়দের সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল (খানপুর)-এ প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আঃ রহমান খোকন বলেন, ওরা ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ দুই কর্মী। এলাকার মানুষ তাদের ভয়ে কিছু বলতে পারে না। আমি চাঁদা না দেওয়ায় আমার দোকানে হামলা করে টাকা নিয়ে গেছে। এখনো হুমকি দিচ্ছে, মামলা করলে দেখে নেবে বলছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, অভিযুক্ত নুর আলম ও সালেহ বাবু এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে পরিচিত। তাদের কারণে সাধারণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার (ওসি) তদন্ত আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।