সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনার উপ প্রেস সচিব-১ থাকাকা‌লে ঘুষ দুর্নীতি ক‌রে আমেরিকায় বা‌ড়িসহ অঢেল সম্প‌দের মা‌লিক হয়েছেন মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন। প্রধানমন্ত্রী কার্যাল‌য়ের ক্ষমতার অপব‌্যবহার ক‌রে স্ত্রী‌ রেজওয়ানা নূরের না‌মেও গ‌ড়ে‌ছেন প্রায় ৩,০৮.৮১,০৫৬৬ টাকার অবৈধ সম্পদ।

দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশ‌নের অনুসন্ধা‌নে এমন চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য বে‌রি‌য়ে এসেছে। ঘুষ দুর্নী‌তির প্রমাণ পে‌য়ে মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকন ও তার স্ত্রীর বিরু‌দ্ধে পৃথক দু‌টি মামলা ক‌রে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন।

বৃহস্প‌তিবার (২৭ মার্চ) দুদক তা‌দের বিরু‌দ্ধে মামলা দু‌টি ক‌রে‌ন ব‌লে কমিশনের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ‌্য নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

আরো পড়ুন:

খুলনায় সীমা হত্যা নাটকে এসআই শাহ আলমের কারাদণ্ড

‘ক্লিন ইমেজের’ আড়ালে ‘কলঙ্ক’, দুদকের জালে জিএম কাদের

তা‌দের বিরু‌দ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭/১) ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ০৪(৩) ধারায় অ‌ভি‌যোগ আনা হ‌য়ে‌ছে।

প্রথম মামলায় বলা হয়, আসা‌মি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব-১ মুহাম্মদ আশরাফুল আলম সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে অজ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৩,৩৩,৯৮৮২৭ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ক‌রে ভোগ দখলে রেখেছেন।

তিনি ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের উৎস গোপন বা আড়াল করার জন্য তার নামে ৩টি ব্যাংক হিসাবে ১,৩৪,৩৯,৫৭২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করে তার রূপায়ন ও স্থানান্তরপূর্বক 3067 ira Road, Bellmore, NY 11710 আমিরকায় বাড়ি ক্রয় করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭/১) ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ০৪(৩) ধারায় অপরাধ ক‌রে‌ছেন।

দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি মিসেস রেজওয়ানা নূর এবং তার স্বামী মুহাম্মাদ আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩,০৮.

৮১,০৫৬৬ টাকাকে বৈধ করার লক্ষে তার স্ত্রীর নামে এবং নিজ ভোগ দখলে রেখে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করেছেন।

এছাড়া তার নিজ নামে মোট ৬৩টি অ্যাকাউন্ট এর মাধ্যমে মোট ৬,১২,৪৯,৮৩৭ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর, স্থানান্তরের মাধ্যমে সন্দেহজনক অসংখ্য লেনদেন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১), দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ৩৪/৩) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ ক‌রে‌ছেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ আশর ফ ল আলম দমন ক

এছাড়াও পড়ুন:

২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ

দীর্ঘ ২০ বছর পলাতক থাকার পর খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন। সোমবার খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জিল্লুর রহমান খান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। 

জানা যায়, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাব অদূরে সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে খুন হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।

ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর আদালতে উপস্থিত হন ডিসকো সাত্তার। ওকালত নামায় তিনি উল্লেখ করেন, জীবন এবং জীবিকার তাগিদে খুলনার বাইরে থাকায় মামলার রায় প্রচারের সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি রায়ের বিষয়টি অবগত ছিলেন না।

ট্রাইব্যুনাল থেকে জানা গেছে, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দু’দিন পর ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি মোশাররফ হোসেন ২০০৪ সালের ২০ জুন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের পর থেকে ডিসকো সাত্তার পলাতক ছিলেন।

দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ওরফে বোমরু আকরাম ওরফে বোমা আকরাম ওরফে ফাটা, আলী আকবর সিকদার ওরফে শাওন, ছাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল, মিঠুন ওরফে মিটুল, সাকা ওরফে শওকাত হোসেন, সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।

মামলায় দু’জন খালাস পেয়েছিলেন। তারা হলেন হাই ইসলাম ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ