ভোলায় বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের পর এবার ধর্মঘট শুরু করেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক সমিতি। আজ সোমবার ভোর থেকে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ। অটোরিকশা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ ও তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে অটোরিকশার চালকেরা আন্দোলনে নেমেছেন।

এর আগে গতকাল রোববার ভোলার পাঁচ রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় যানজটে আটকে পড়াকে কেন্দ্র করে বাসশ্রমিক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি, হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। এরপর সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই কর্মসূচির ডাক দেয় বাস শ্রমিক ইউনিয়ন।

এদিকে সড়কে বাস ও অটোরিকশা চলাচল না করায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। আজ সকালে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন থেকে চার গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে তাঁরা মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সরেজমিন দেখা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডে পুলিশ মোতায়েন আছে। উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রাজ্জাক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

অটোরিকশা শ্রমিক মালিক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বাস মালিক সমিতির সন্ত্রাসীরা ৩০টি অটোরিকশার ওপর হামলা করেছে। সারা দেশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলছে। আর ভোলায় চালাতে গেলে হামলা-ভাঙচুর করা হচ্ছে। গতকাল ও আজ ১১টি অটোরিকশা ভাঙচুর ও একটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। তাঁরা ছয়জন চালককে পিটিয়ে জখম করেছেন। এর ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। হামলার সুষ্ঠু বিচারসহ মহাসড়কে অটোরিকশা চালানোর অনুমোদন চাই। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের ধর্মঘট চলবে।’

এ সম্পর্কে ভোলা জেলা বাস, মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়‌নের সভাপ‌তি মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ২৮ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে বাস মা‌লিক স‌মি‌তি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক-মালিক সমিতির মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছিল অটোরিকশা তিনজনের বেশি যাত্রী টানতে পারবে না। ওই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করি। কিন্তু তাঁরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মানেননি। পাঁচজন নিয়ে দূরপাল্লায় অটোরিকশা চালাচ্ছেন। গতকাল একসঙ্গে পাঁচ স্থানে বাসচালকদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এতে অন্তত চালক-শ্রমিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। বাসও ভাঙচুর করা হয়েছে।’

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডের ডিপোপ্রধান ও ভোলা বাস মালিক সমিতির সহসভাপতি মাগফার উদ্দীন বলেন, অটোরিকশার চালকেরা ৭টি বাস ভাঙচুর করেছেন, ২০ জন শ্রমিককে পিটিয়ে জখম করেছেন। বাসের নিরাপত্তা নেই, শ্রমিকদেরও নিরাপত্তা নেই। তাই ধর্মঘট চলবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশ‌াসক আজাদ জাহান বলেন, ‘দুই পক্ষকে নিয়ে সমঝোতায় বসার চেষ্টা করছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন বল ন গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের ভেতরে একটা অংশ নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে: এনসিপি

সরকারের ভেতরের একটি পক্ষ ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নিজেরাই ঐকমত্য কমিশন হওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, এই চেষ্টার কারণে নির্বাচন ঝুঁকিতে পড়বে।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, তাঁদের কাছে স্পষ্টতই প্রতীয়মান যে সরকারের ভেতরের কোনো একটা অংশ সংস্কারকে ভন্ডুল করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশন সুপারিশ উপস্থাপন করেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই সরকার আদেশ জারি করবে, সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন সরকারের তরফ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে আরও এক সপ্তাহ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলাপ–আলোচনার কথা বলা হয়, তখন মনে হয় যে সরকার আসলে এই সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে সাপ-লুডো খেলছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৬-তে পৌঁছে গিয়েছিলাম, সেটাকে আবার তিনে নিয়ে আসা হয়েছে সাপ কেটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।’

অতি দ্রুত সরকারকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, সরকারকে নিজেকেই দায়িত্ব নিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সামনের সংসদকে গাঠনিক ক্ষমতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গণভোটের মাধ্যমে অর্জিত জনগণের অভিপ্রায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে যেন বাস্তবায়িত হয়, সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ