গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
Published: 15th, May 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংসদ ভবনের এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আলোচনাকালে তিনি এ সব কথা বলেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে।”
বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সকলের সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।”
কমিশনের সহ-সভাপতি আরো বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।”
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য, বিচারপতি মো.
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ।
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়।
ঢাকা/এএএম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে আলোচনা রাজনৈতিক দলগুলোর সংগ্রামের ধারাবাহিকতা: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠন বা সংস্কারের লক্ষ্যে আলোচনা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ধারাবাহিকতা। চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই আকাঙ্ক্ষা উন্মুক্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই ইতিহাসের এমন একটা মাহেন্দ্রক্ষণে উপস্থিত হয়েছি, যখন একটি গণতান্ত্রিক এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র বিনির্মাণের মাধ্যমে সব নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং সে অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করছি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পথরেখা কেমন হবে তা নির্দেশ করবে।
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনের এল. ডি হলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।
আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে আলোচনায় দলটির সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপিকা এ এন রাশেদা, কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
গত ২৩ মার্চ সিপিবি ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার বিষয়ক তাদের প্রস্তাবনা জমা দেয়। সে প্রেক্ষিতে দলটির সঙ্গে আজ আলোচনায় বসে কমিশন। ইতোমধ্যে সিপিবিসহ ৩২টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নিয়েছে।