জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংসদ ভবনের এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আলোচনাকালে তিনি এ সব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে।” 

বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সকলের সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।” 

কমিশনের সহ-সভাপতি আরো বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।”

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য, বিচারপতি মো.

এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ।

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক দল র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রায় এক বছরেও নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেই: এবি পার্টি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ‘সতর্কতার সঙ্গে’ স্বাগত জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)।

দলটি বলেছে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা নিয়ে তারা এখনো পুরোপুরি আস্থাশীল নয়। এক বছর হতে চলেছে, কিন্তু রাজনৈতিক দল বা অংশীজনদের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো আয়োজন বা উদ্যোগ তারা এখনো দেখতে পাচ্ছে না। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের অনেক সুপারিশ তারা বাস্তবায়নে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে, যেটা দুঃখজনক।

আজ শনিবার রাজধানীর বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘোষণা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবি পার্টি।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের সময় ঘোষণা প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রমজানের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের ঘোষণাকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন‍্য ফ‍্যাসিবাদীদের বিচার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও অনিশ্চয়তা কাটবে না। এ ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার এখনো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পুরো লাগাম টেনে ধরতে পারেনি। নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কারের স্পষ্ট পথনকশা জরুরি, যেন ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী সরকারও এগুলো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

জুলাই সনদের যেসব বিষয়ে সব দল একমত হয়েছে, সেগুলো স্বাক্ষরিত হওয়ার পরপরই বাস্তবায়ন শুরু হওয়া দরকার উল্লেখ করে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সুরাহা হওয়া জরুরি। আমরা যেন ইতিহাসের পেছনের দিকে চলে না যাই; ১৯৯০ ও ২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা ভুলে না যাই। যেটা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এখনই করা সম্ভব, সেটা পিছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চব্বিশের গণ-অভ‍্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।’

‘জুলাই ঘোষণাপত্র স্বপ্ন ধারণে ব্যর্থ’

জুলাই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানিয়েছে এবি পার্টি। তবে এই ঘোষণাপত্র জুলাই গণ-অভ‍্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও জনগণের স্বপ্ন ধারণ করতে ব‍্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে দলটি।

সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, একটা ঘোষণাপত্র দিতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত। কিন্তু এর বক্তব‍্য, গাঠনিক শৈলী, অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি পুরোনো ধাঁচের হয়েছে। ঔপনিবেশিক যুগের মুক্তিসংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, শাহবাগে ফ‍্যাসিবাদের উত্থান পর্ব, ৫ মের জাগরণ ও আলেমদের ওপর গণহত্যা, বিডিআর হত‍্যাকাণ্ড, কোটা সংস্কার থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, রাষ্ট্র মেরামতের জন–আকাঙ্ক্ষা হয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের দৃঢ়প্রত্যয়ের স্মৃতিমণ্ডিত ইতিহাস ঘোষণাপত্রে আরও স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে বলে প্রত্যাশা ছিল।

এবি পার্টির এই নেতা আরও বলেন, তাঁরা চান, ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল জুলাই ঘোষণাপত্র যেন আলংকারিক বস্তু হয়ে না থাকে। সবাই যেন যথাযথভাবে এটা মেনে চলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন রানা, আনোয়ার সাদাত টুটুল, ফেরদৌসী আক্তার, ইসরাত জাহানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার: বাস্তবায়নের পথ খুঁজতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমি
  • ‘আলংকারিক’ রাষ্ট্রপতিকে এভাবে ক্ষমতায়নের চেষ্টা নজিরবিহীন
  • নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনকে আবারও আলোচনায় বসতে হবে
  • শাবিপ্রবিতে ‘অধিকার সচেতন’ শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রূহের মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া
  • প্রায় এক বছরেও নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেই: এবি পার্টি
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ‘হামলাকারী’ শ্রমিক লীগ নেতা নাছির গ্রেপ্তার
  • জাবিতে ১৭ হলে ছাত্রদলের কমিটি, বাগছাসের উদ্বেগ
  • ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে রূপগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ ও দোয়া 
  • ছাত্র আন্দলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে রূপগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ ও দোয়া