টিকটক ভিডিওর জন্য ভালো ক্যামেরা সংগ্রহ করতে ফটোগ্রাফারকে হত্যা, গ্রেপ্তার ১০
Published: 21st, May 2025 GMT
রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরাবাদ পুলপার এলাকায় ফটোগ্রাফার নূরুল ইসলামকে খুন করে ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নাঈম আহম্মেদ (২০), শাহীন আকন্দ শাহিনুল (২০), শাহীন চৌকিদার (২২), রহিম সরকার (১৯), নয়ন আহম্মেদ (১৯), রিদয় মাদবর (১৮), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), আনোয়ার হোসেন (১৯), শহিদুল ইসলাম (২০) ও আরমান (১৮)।
তাদের দেওয়া তথ্যে ছিনতাই হওয়া দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, একটি রামদা ও একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা টিকটকে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করতেন। আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিওর জন্য ডিএসএলআর ক্যামেরা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেন তারা। এরই অংশ হিসেবে তারা নূরুল ইসলামকে একটি অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কথা বলে ডেকে নেন। এরপর কুপিয়ে তাকে হত্যা করে ক্যামেরা দুটি ছিনিয়ে নেয় তারা।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, নুরুল ইসলাম (২৬) একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে বিভিন্ন ইভেন্টে ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। গত ১৫ মে একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে নূরুল ইসলামের ফোনে কল আসে। অজ্ঞাত ব্যক্তি একটি বিয়ের ইভেন্টে ছবি তোলার জন্য তাকে বুকিং দিয়ে ৫০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম পাঠান। পরদিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টায় তাকে একই নম্বর থেকে ফোন করে শংকর চৌরাস্তায় অপেক্ষা করার কথা জানানো হয়। নূরুল ইসলাম তার সহযোগী মো.
মাসুদ আলম আরও জানান, সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি শংকর বাসস্ট্যান্ডে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তারা ওই ব্যক্তির কথামতো একটি অটোরিকশাযোগে জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা করেন। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা তাদের রিকশার গতিরোধ করে। ঘটনার আকস্মিকতায় ইমন রিকশা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায় কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা নূরুল ইসলামকে ধরে ফেলে। তারা ধারালো চাপাতি দিয়ে নুরুল ইসলামের মাথা, ঘাড়, বাহু ও হাতের আঙ্গুলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তার কাছে থাকা দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
পুলিশ জানায়, নূরুল ইসলামের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুষ্কৃতকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ভিকটিম নূরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নূরুল ইসলামের বড় ভাই মো. ওসমান গনি বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়। এরপর ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার শংকর ও রায়েরবাজার এবং ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া ও তারাকান্দা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হাজারীবাগ থানা সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররা ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী খেলার মাঠে ফুটবল খেলার পর নাঈম আহম্মেদের নেতৃত্বে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। তারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নাম করে ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে কৌশলে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার নাঈম শংকর বাসস্ট্যান্ডে নূরুল ইসলাম ও তার সহযোগী ইমনের সঙ্গে দেখা করে। নাঈম তাদেরকে একটি অটোরিকশাযোগে জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া “ক্ষণিকালয়” নামক বাসার গেটের সামনে অটোরিকশাটি পৌঁছলে গ্রেপ্তার নাঈম, শাহীন, শাহীনুল, রহিম, নয়ন, রিদয়, রাজ্জাক, আনোয়ার, শহিদুল ও আরমান অটোরিকশার গতিরোধ করে নূর ইসলামের কাছ থেকে ডিএসএলআর ক্যামেরা ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। ক্যামেরা না দিতে চাইলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নূরুল ইসলামের শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে হাজারীবাগের জিগাতলা এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কলেজছাত্র সামিউর রহমান খান আলভি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রায়হান (২০), হাবিবুর রহমান মুন্না (২৬), সমতি পাল (২৩) ও কাউসার (২১)। ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
উপ-কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে জানান, আলভী হাজারীবাগ থানার ৪২/জি, মনেশ্বর রোডে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি ড. মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত ১৬ মে আলভী তার তিন বন্ধু মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. জাকারিয়া এবং মো. ইসমাঈল হোসেনের সঙ্গে ধানমন্ডি লেক পাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। এ সময় গ্রেপ্তাররাসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাদের কৌশলে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ২১/১ বাসার সামনে নিয়ে গিয়ে গতিরোধ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা সামিউর ও তার বন্ধুদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন। সামিউরের তিন বন্ধু বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় আলভীর বাবা মশিউর রহমান খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ, নিবিড় তদন্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ১৮ মে মো. রায়হানকে ও ১৯ মে সমতি পালকে হাজারীবাগের মধুবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২১ মে ধানমন্ডি লেক বাগানবাড়ি এলাকা থেকে মো. হাবিবুর রহমান মুন্না ও কাউসারকে গ্রেপ্তার করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা সামিউর রহমান খান আলভীকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। ১৫ মে রাত আনুমানিক ৯টায় মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে বাগানবাড়ি লেকে ভিকটিম ও তার বন্ধুদের সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিদের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম র গ র প ত র কর হত য ক ণ ড র রহম ন ত র সহ এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটক ভিডিওর জন্য ভালো ক্যামেরা সংগ্রহ করতে ফটোগ্রাফারকে হত্যা, গ্রেপ্তার ১০
রাজধানীর হাজারীবাগের জাফরাবাদ পুলপার এলাকায় ফটোগ্রাফার নূরুল ইসলামকে খুন করে ডিএসএলআর ক্যামেরা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- নাঈম আহম্মেদ (২০), শাহীন আকন্দ শাহিনুল (২০), শাহীন চৌকিদার (২২), রহিম সরকার (১৯), নয়ন আহম্মেদ (১৯), রিদয় মাদবর (১৮), আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা (১৯), আনোয়ার হোসেন (১৯), শহিদুল ইসলাম (২০) ও আরমান (১৮)।
তাদের দেওয়া তথ্যে ছিনতাই হওয়া দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি, একটি রামদা ও একটি বড় ছোরা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তাররা টিকটকে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করতেন। আকর্ষণীয় ছবি ও ভিডিওর জন্য ডিএসএলআর ক্যামেরা সংগ্রহের পরিকল্পনা করেন তারা। এরই অংশ হিসেবে তারা নূরুল ইসলামকে একটি অনুষ্ঠানে ছবি তোলার কথা বলে ডেকে নেন। এরপর কুপিয়ে তাকে হত্যা করে ক্যামেরা দুটি ছিনিয়ে নেয় তারা।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ বুধবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, নুরুল ইসলাম (২৬) একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করে বিভিন্ন ইভেন্টে ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। গত ১৫ মে একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে নূরুল ইসলামের ফোনে কল আসে। অজ্ঞাত ব্যক্তি একটি বিয়ের ইভেন্টে ছবি তোলার জন্য তাকে বুকিং দিয়ে ৫০০ টাকা বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম পাঠান। পরদিন সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টায় তাকে একই নম্বর থেকে ফোন করে শংকর চৌরাস্তায় অপেক্ষা করার কথা জানানো হয়। নূরুল ইসলাম তার সহযোগী মো. ইমন ওরফে নুরে আলমসহ মতিঝিলের এজিবি কলোনির বাসা থেকে বের হয়ে সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
মাসুদ আলম আরও জানান, সন্ধ্যায় এক ব্যক্তি শংকর বাসস্ট্যান্ডে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তারা ওই ব্যক্তির কথামতো একটি অটোরিকশাযোগে জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা করেন। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছামাত্র অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা তাদের রিকশার গতিরোধ করে। ঘটনার আকস্মিকতায় ইমন রিকশা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যায় কিন্তু দুষ্কৃতকারীরা নূরুল ইসলামকে ধরে ফেলে। তারা ধারালো চাপাতি দিয়ে নুরুল ইসলামের মাথা, ঘাড়, বাহু ও হাতের আঙ্গুলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তার কাছে থাকা দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
পুলিশ জানায়, নূরুল ইসলামের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুষ্কৃতকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ভিকটিম নূরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নূরুল ইসলামের বড় ভাই মো. ওসমান গনি বাদী হয়ে হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়। এরপর ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার শংকর ও রায়েরবাজার এবং ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া ও তারাকান্দা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হাজারীবাগ থানা সূত্র জানায়, গ্রেপ্তাররা ঘটনার এক সপ্তাহ আগে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী খেলার মাঠে ফুটবল খেলার পর নাঈম আহম্মেদের নেতৃত্বে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। তারা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নাম করে ফটোগ্রাফারদের কাছ থেকে কৌশলে ক্যামেরা ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার নাঈম শংকর বাসস্ট্যান্ডে নূরুল ইসলাম ও তার সহযোগী ইমনের সঙ্গে দেখা করে। নাঈম তাদেরকে একটি অটোরিকশাযোগে জাফরাবাদ পুলপার ব্লুমিং চাইল্ড স্কুলের কাছে বিয়ের অনুষ্ঠানের কথা বলে নিয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে জাফরাবাদ পুলপার ঋষিপাড়া “ক্ষণিকালয়” নামক বাসার গেটের সামনে অটোরিকশাটি পৌঁছলে গ্রেপ্তার নাঈম, শাহীন, শাহীনুল, রহিম, নয়ন, রিদয়, রাজ্জাক, আনোয়ার, শহিদুল ও আরমান অটোরিকশার গতিরোধ করে নূর ইসলামের কাছ থেকে ডিএসএলআর ক্যামেরা ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। ক্যামেরা না দিতে চাইলে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নূরুল ইসলামের শরীরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং ক্যামেরাসহ ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।
এদিকে হাজারীবাগের জিগাতলা এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কলেজছাত্র সামিউর রহমান খান আলভি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রায়হান (২০), হাবিবুর রহমান মুন্না (২৬), সমতি পাল (২৩) ও কাউসার (২১)। ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
উপ-কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে জানান, আলভী হাজারীবাগ থানার ৪২/জি, মনেশ্বর রোডে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি ড. মালেকা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত ১৬ মে আলভী তার তিন বন্ধু মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. জাকারিয়া এবং মো. ইসমাঈল হোসেনের সঙ্গে ধানমন্ডি লেক পাড়ের একটি রেস্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। এ সময় গ্রেপ্তাররাসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাদের কৌশলে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ২১/১ বাসার সামনে নিয়ে গিয়ে গতিরোধ করে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা সামিউর ও তার বন্ধুদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলভীকে মৃত ঘোষণা করেন। সামিউরের তিন বন্ধু বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় আলভীর বাবা মশিউর রহমান খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ, নিবিড় তদন্ত ও প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ১৮ মে মো. রায়হানকে ও ১৯ মে সমতি পালকে হাজারীবাগের মধুবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২১ মে ধানমন্ডি লেক বাগানবাড়ি এলাকা থেকে মো. হাবিবুর রহমান মুন্না ও কাউসারকে গ্রেপ্তার করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা সামিউর রহমান খান আলভীকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। ১৫ মে রাত আনুমানিক ৯টায় মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে বাগানবাড়ি লেকে ভিকটিম ও তার বন্ধুদের সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিদের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত পলাতক অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।