ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও দুই নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে বাসের যাত্রী ও রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার আবদুল্লাহপুর কাশিয়াবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মিনু মিয়া বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, মামলার পর ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রংপুরের উদ্দেশে আল ইমরান নামের বাসটিতে ওঠেন তিনি। বাসটি পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে আরও কয়েকজন যাত্রী ওঠায়। বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশে ৮ থেকে ১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশি অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে তারা বাসের চালকসহ যাত্রীদের সবার চোখ–মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে।

এজাহারে আরও বলা হয়, চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, টাকা, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল লুটে নেয় ডাকাতেরা। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়। এ সময় দুজন নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করা হয়। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। পরে বাসের যাত্রীদের নিয়ে সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় যান চালক। যাত্রী ও বাসের স্টাফদের থেকে ডাকাতেরা ১০টি মুঠোফোন, ১১ আনা সোনা, ১ ভরি রুপাসহ মোট ২ লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকার মালামাল লুণ্ঠন করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে মহাসড়কে ‘ইউনিক রয়েলস’ নামের বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনায় করা মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাঁদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁরা সবাই কারাগারে আছেন। মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে জামালপুরগামী একটি বাসে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক মো.

আহসানুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে ২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। মামলাটির এখনো অভিযোগ গঠন হয়নি। আসামিরা সবাই জামিনে আছেন।

২০২২ সালের ২ আগস্ট কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মামলাটি টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। মামলার ১২ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন হয়েছে। কিন্তু বাদী ও সাক্ষীরা আদালতে না আসায় কয়েকবার সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়েছে।

আরও পড়ুনঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে আবার বাস ডাকাতি, লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি৮ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত আরও ৭ জনকে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হলো

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহত আরও সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তাঁদের থাইল্যান্ডে পাঠানো হয়।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে জানান, যে সাতজনকে আজ পাঠানো হয়েছে তাঁরা হলেন মো. আশরাফুল আলম, মো. রাকিব উল ইসলাম, মো. রাসেল হোসেন, মো. তরুণ, মো. সাগর, মেহেদি হাসান খোকন ও আবদুল জব্বার। আগামী দিনগুলোতে আরও ২০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ নিয়ে মোট ৪৭ জন আহত যোদ্ধাকে বিদেশে পাঠানো হলো। তাঁদের অনেকেই উন্নত চিকিৎসা শেষে ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন।আরও পড়ুনক্রাচ হাতে, হুইলচেয়ারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মানববন্ধন২৪ এপ্রিল ২০২৫

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আহত সাতজনের একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, একজন বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে, তিনজন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স এবং দুজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁদের কারও দেহে এখনো বুলেট আছে। কেউ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সবাই স্বাভাবিক চলাচলের সক্ষমতা হারিয়েছেন এবং অত্যন্ত কষ্টে জীবন যাপন করছেন।

আরও পড়ুনজুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা–অনুদান দেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়১২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ নিয়ে মোট ৪৭ জন আহত যোদ্ধাকে বিদেশে পাঠানো হলো। তাঁদের অনেকেই উন্নত চিকিৎসা শেষে ইতিমধ্যে দেশে ফিরেছেন।

আরও পড়ুনগণ–অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আবদুল হাফিজ২৫ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই অভ্যুত্থানে আহত আরও ৭ জনকে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে পাঠানো হলো