মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বুধবার সকালে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় (অফিসার্স অ্যাড্রেস) মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড বিষয়ে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন, অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান সংস্কারসহ নানা প্রশ্নের উত্তর দেন সেনাপ্রধান। এ সময় তিনি এ কথা জানান। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ বিষয়ে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি। পরে যোগাযোগ করা হলে আইএসপিআর কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানায়।  

ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত এ সভায় ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সূত্রগুলো জানায়, অফিসার্স অ্যাড্রেসে প্রথমে সেনাপ্রধান বক্তব্য রাখেন। এরপর বিভিন্ন ইউনিট থেকে যেসব কর্মকর্তা যুক্ত ছিলেন তাদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সেনাপ্রধান। 

সভায় শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আগামী  ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিরলস ভূমিকা ও প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন সেনাপ্রধান। সেনা কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও আনুগত্য বজায় রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে মানবিক করিডোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে। এটি হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। করিডোরের ব্যাপারে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়ও এখানে যুক্ত।  

সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাঁকে ও বাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। 

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর– এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনও যুক্ত হবে না।  কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। এই বাস্তবতায় সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। আগামীতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। 

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। সামনে ঈদ। মানুষ যেন নিরাপদে ঈদ উদযাপন করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে হবে। 

বাংলাদেশ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলা হয়নি। আমাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। 

নির্যাতিতদের অধিকারের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন সেনাপ্রধান। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যের পর এক ঘণ্টাব্যাপী প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন অভিযোগে বরখাস্ত সেনাসদস্যদের অপরাধের বিষয়গুলো আইএসপিআরের মাধ্যমে প্রকাশ করার কথা জানান।  

বন্দর নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ওয়াকার বলেন, এখানে স্থানীয় মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত প্রয়োজন হবে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমে। সংস্কার নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে– এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ন বল ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আফগান সীমান্তে ৩০ ‘খারিজি সন্ত্রাসীকে’ হত্যার দাবি পাকিস্তানের

পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আফগান সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় দুই রাতে অভিযান চালিয়ে অন্তত ৩০ জন ‘খারিজি সন্ত্রাসীকে’ হত্যার দাবি করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। শুক্রবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় মদদপুষ্ট ফিতনা আল-খারিজি গোষ্ঠীর সদস্যরা মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই থেকে ৩ জুলাই) রাতের মধ্যে হোসেন খেল এলাকায় সীমান্ত পারাপারের চেষ্টা করেছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের গতিবিধি শনাক্ত করে তৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে এবং সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।

অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। আইএসপিআর জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা সাধারণ নাগরিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিলেন।

আইএসপিআর আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে দেশটির ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর জন্য বিদেশি মদদপুষ্ট গোষ্ঠীগুলো ব্যবহার করতে না পারে।

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জাতীয় সীমান্ত রক্ষায় অটল এবং ভারতের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরি নির্মূলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও পড়ুনপাকিস্তানে জঙ্গি হামলা বেড়ে যাওয়ার কারণ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাকিস্তান সীমান্তে ৩০ আফগান সন্ত্রাসীকে হত্যা
  • বিতর্কের মুখে টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার
  • বিতর্কে মুখে টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার
  • বিতর্কে মুখে টেলিযোগাযোগ খাতের সংষ্কার
  • আফগান সীমান্তে ৩০ ‘খারিজি সন্ত্রাসীকে’ হত্যার দাবি পাকিস্তানের