পুলিশের বিরুদ্ধে সাক্ষীর বক্তব্য পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ
Published: 22nd, May 2025 GMT
পুলিশের বিরুদ্ধে সাক্ষীর বক্তব্য বদলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার মির্জাপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন বাদী রফিকুল ইসলাম। ইটভাটার অংশীদারিত্ব ফিরে পেতে মামলা করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালে লতিফপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় গড়ে ওঠে মেসার্স বংশাই ব্রিকস অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স নামে একটি ইটভাটা; যার ১৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক খোকন মিয়া। তাঁর কাছ থেকে ৭ শতাংশ মালিকানা সাড়ে ১০ লাখ টাকায় কিনে নেন তিনি। কিন্তু খোকন মিয়া প্রতারণামূলকভাবে তাঁর মালিকানার ১৪ শতাংশই ইটভাটার অন্য এক মালিকের কাছে বিক্রি করে দেন।
বিষয়টি নিয়ে ২০২৪ সালে আদালতে মামলা করেছেন রফিকুল ইসলাম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এটিএম জহিরুল ইসলাম তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাদীপক্ষের সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে তা নিজের মনমতো বদলে দিয়ে আদালতে দাখিল করেছেন বলে অভিযোগ রফিকুলের।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চার সাক্ষীর মধ্যে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দারোগার কাছে যে বক্তব্য দিয়েছি, তার সঙ্গে আদালতে দাখিল করা আমার সাক্ষ্যের কোনো মিল নেই। দারোগা তাঁর ইচ্ছামতো আমার সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেছেন।’ অন্য তিন সাক্ষী আবুল হোসেন, সোলাইমান ও সুজন সিকদারও আদালতে দাখিল করা তাদের সাক্ষ্যের বিষয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কুব্বত আলী মৃধা জানান, রফিকুলের বিষয়টি নিয়ে এসআই জহিরুল ইসলাম এবং ওসির সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে তার। এরপরও এ রকম প্রতিবেদন দেওয়া হলো।
এ ব্যাপারে খোকন মিয়ার ভাষ্য, ২০২০ সালে করোনাকালে রফিকুলকে তাঁর শেয়ারের টাকা ইট দেওয়ার মাধ্যমে ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে স্ট্যাম্প ফেরত দেননি, যা নিয়ে থানায় অভিযোগও করেছেন তিনি। আইনে না পেরে এখন সাংবাদিকদের কাছে গিয়েছেন রফিকুল। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক শালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু রফিকুল কোনো কিছুই মানেন না।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এটিএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সাক্ষীর বয়ানই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করে আইনের ভাষায় সাজিয়ে লেখা হয়েছে। সাক্ষীরা যদি মনে করেন এটি তাদের বক্তব্য না বা এটি সঠিক নয়, তাহলে তারা আদালতে নারাজি দিতে পারেন। এই অধিকার তাদের আছে।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।
তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’
ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।
দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।