রাজশাহী জেলা ও মহানগরে এনসিপির সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা
Published: 19th, June 2025 GMT
রাজশাহী জেলা ও মহানগরে এনসিপির সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা
অরিজিনাল অথর: শফিকুল ইসলাম
জেলা বাংলাদেশ
ট্যাগ: রাজশাহী, রাজশাহী সিটি, রাজশাহী বিভাগ, রাজনীতি, জাতীয় নাগরিক পার্টি
ছবি: Raj-NCP (রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মোবাশ্বের আলী (বাঁয়ে) এবং জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. রাশেদুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত)
একসার্প্ট: ঘোষিত জেলা ও মহানগর কমিটির দুই সমন্বয়কারীর একজন জামায়াতে ইসলামীর ও অন্যজন বিএনপির রাজনীতি করতেন।
মেটা: রাজশাহী জেলা ও মহানগরে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের যৌথ স্বাক্ষরে এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
রাজশাহী জেলা ও মহানগরে এনসিপির সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা
প্রতিনিধি, রাজশাহী
রাজশাহী জেলা ও মহানগরে জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের যৌথ স্বাক্ষরে তিন মাসের জন্য অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটিতে রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে পদ পেয়েছেন ব্যবসায়ী মো.
কমিটির মহানগরের প্রধান সমন্বয়ক ইসলামী ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। আর জেলার সমন্বয়কারী বিএনপির রাজনীতি সঙ্গে ছিলেন এক সময়। দুজনই গত ১৩ জানুয়ারি ঘোষিত জাতীয় নাগরিক কমিটির বোয়ালিয়া মডেল থানা কমিটির প্রতিনিধি কমিটির সদস্য ছিলেন।
রাজশাহী মহানগরে ঘোষিত ১৮ সদস্যের কমিটির মধ্যে যুগ্ম সমন্বয়কারী রাখা হয়েছে তিনজনকে। তাঁরা হলেন মো. আশরারুল ইমাম, সারওয়ারুল হক ও মাহফুজুর রহমান। অন্য ১৪ জন সদস্য। তাঁরা হলেন নাজমুল হক, ফুয়াদ সোনম, ইব্রাহীম হোসেন, মোবাশ্বের হোসেন, ফাহাবির চৌধুরী, উরশী মাহফিলা ফাতেহা, রথিন কুমার সরকার, নাহিদ আক্তার, মোফাচ্ছিরুল ইসলাম, সালাউদ্দীন, রাসেল আহমেদ, মীর মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মাহফুজুর রহমান, পরিমল চন্দ্র উরাও।
২৫ সদস্যের জেলা কমিটিতে যুগ্ম সমন্বয়কারী পাঁচজন আর সদস্য ১৯ জন। যুগ্ম সমন্বয়কারীরা হলেন নাহিদুল ইসলাম, মো. সাইফুল ইসলাম, শামীমা সুলতানা, আতাউর রহমান, ফিরোজ আলম। সদস্যরা হলেন মো. মিজানুর রহমান, ইমরান হাসান, অবসরপ্রাপ্ত করপোরাল সাইফুল ইসলাম, আব্দুল হালিম, মো. আবু সাঈদ, জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. মাসুদ রানা, আব্দুল বারী, খালিদ হাসান, রাকিবুল ইসলাম, মো. ইফফাত উদ্দিন, প্রভাষক মতিউর রহমান, মনিরুল ইসলাম, ফারহানা সুলতানা, রানা হেমব্রেম, মো. মহিউদ্দিন, শান্তা ইসলাম, আসাদুজ্জামান, মোখলেসুর রহমান।
জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম বলেন, তিনি ২০১১-১২ ও ১৩ সালের দিকে রাজপাড়া এলাকায় মহিষবাথান এলাকায় থাকতেন। তখন তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। তবে কোনো পদপদবি ছিল না। পরে চাকরির পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ কারণে আর রাজনীতিতে সক্রিয় হতে পারেননি। তিনি বলেন, তাঁরা কয়েক মাসের জন্য দায়িত্বে এসেছেন। আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে দায়িত্ব ছাড়বেন।
মহানগরের সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী বলেন, তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। তবে কোনো পদে ছিলেন না। পরের দিকে তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গেও ছিলেন। সেখানেও কোনো পদ ছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারেন কর্মী ছিলাম। আবার বলতে পারেন সমর্থক বা শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলাম। তবে কোনো জায়গাতে কোনো পদে ছিলাম না। জুলাই আন্দোলনে শুরু থেকেই ছিলাম। আমরা চাই বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে। সেই পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেই এনসিপিতে আসা।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সমন বয়ক র জন ত র স দ ল ইসল ম র র জন ত র রহম ন এনস প র র সদস য কম ট র ক কম ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরা গরিব, তাই এইভাবে ছেলেডারে পঙ্গু কইরা দিল’
শাকিল ও হাসিবুল বারইকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বন্ধুরা বসে গল্প করার সময় একজন অন্যজনকে গালি দেয়। এ নিয়ে প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। লোকজন গিয়ে বুঝিয়ে ঝামেলা মিটমাট করে দেন। কিন্তু হাসিবুল এতে সন্তুষ্ট হয়নি। কারণ, সে সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে
প্রভাবশালী। শাকিল দরিদ্র। প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে হাসিবুল।
ঘটনার দু’দিন পর শাকিলের বাড়িতে যায় হাসিবুল। এ সময় বাড়ির বাইরে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল শাকিল। তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু শরীর ভালো না থাকায় রাজি হয়নি শাকিল। সঙ্গে সঙ্গে ধারালো রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। চিৎকার করে তার মাকে ডাকতে শুরু করে শাকিল। কিন্তু মা আসার আগেই কোপানো শেষ করে চলে যায় হাসিবুল। দায়ের কোপে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকে সে। এ ঘটনায় বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়েছে শাকিলের। পঙ্গু শাকিল এখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে।
শেরপুরের নকলা উপজেলার বারইকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে গত ১৫ জুন বিকেলে। ওই গ্রামের ভ্যানচালক আমির মিয়ার ছেলে শাকিল (১৬)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। অভিযুক্ত হাসিবুল হাসান পাশের আদমপুর গ্রামের লালু বাদশার ছেলে।
প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে ভুক্তভোগী পরিবারের। দরিদ্র ভ্যানচালক বিচার চেয়ে ছেলের কাটা পা ব্যাগে ভর্তি করে নিয়ে গত বুধবার উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন দপ্তরে যান। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অবশেষে পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম আশ্বস্থ করলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কাটা পা বাড়ির পাশে পুঁতে রাখা হয়।
কথা হয় ভুক্তভোগীর ফুফু ময়না বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, গত ১৫ জুন বিকেলে তাঁর ভাতিজা শাকিল বাড়ির বাইরে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। এ সময় হাসিবুল এসে তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে চায়। শাকিল রাজি হয়নি। এ সময় রামদা দিয়ে তাকে কোপাতে থাকে। তিনটি কোপ বাম পায়ের হাঁটুর ওপরে এমনভাবে লাগে যে, সব রগ কেটে যায়। পা ঝুলে পড়ে। তিনি বলেন, ‘ভাতিজা আমার মাটিতে পইরা গেলে পাষণ্ড হাতে ও শরীরে আরও বেশ কয়েকটা কোপ দিয়া চইলা যায়। এই সময় শাকিল চিৎকার কইরা কইতে থাকে, আম্মা আইলা না, আমারে মাইরা ফেলাইলো। এই শুইনা সবাই দৌড়াদৌড়ি করে বাইরে আইসা দেহি মাটিতে পইরা আছে। রক্তে ভাইসা গেছে।’ তাঁর ভাষ্য, দ্রুত শাকিলকে স্থানীয় হাসপাতাল নেওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়। সেখানে গত মঙ্গলবার পা কেটে ফেলেন চিকিৎসক।
ভুক্তভোগীর বাবা আমির আলী বলেন, ‘আমি বিচার চাই। আমার ছেলের কোনো অপরাধ নাই। আমরা গরিব, তাই এইভাবে ছেলেডারে পঙ্গু কইরা দিল।’ তিনি বলেন, ‘পা নিয়া এসপি স্যারের কাছে গেছিলাম। তিনি আশ্বাস দিছেন বিচার করব।’
মামলার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে আসামি পক্ষের লোকজন। অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমানের ভাষ্য, দু’জনের মধ্যে কথাকাটি হয়। পরে কুপিয়ে জখম করলে পা কেটে ফেলতে
হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামি ধরতে অভিযান চলছে।