‘সততা ঐক্য অগ্রগতি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কুষ্টিয়ার চার উপজেলার সমন্বয় কমিটি গঠিত হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্যাডে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর স্বাক্ষরিত কুমারখালী, খোকসা, মিরপুর ও ভেড়ামারা উপজেলার কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে। এই চার উপজেলার কমিটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার ঝড় উঠেছে।

কুমারখালী উপজেলার সমন্বয়ক কমিটিতে প্রধান সমন্বয়ক হয়েছেন মো.

হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম বাদশা, আসাদুজ্জামান খান আলী ও মাহমুদ শরীফ। এছাড়া সদস্যরা হলেন- সিফাত উল্লাহ বিশ্বাস লাল্টু, আব্দুর রহিম, আসলাম উদ্দিন, রেজাউল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম মনু, বিপুল হোসেন, ফাহিম এশারক ও রিপন হোসেন।

মিরপুর উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছে বুলবুল আহমেদকে, যুগ্ম সমন্বয়কারী ইকরামুল হক, জহুরুল ইসলাম তিতু বিশ্বাস এবং শুকমান আলী। সদস্যরা হলেন- রাকিবুল ইসলাম, সামিউল ইসলাম, আলিফ হোসেন, রুহুল আলী, লোকমান হোসেন, রফিকুল ইসলাম, শামসুল আলম, ওসমান গনি, রফিকুল ইসলাম, সাবারুল, রনি আহমেদ, শেরেকুল ইসলাম, সাদাত হোসেন ও ফারুক হোসেন।

খোকসা উপজেলায় সাজ্জাতা হোসেনকে প্রধান সমন্বয়কারী এবং শাহাবুদ্দিন শেখ, সিমলা খাতুন ও আব্দুল আজিজকে যুগ্ম সমন্বয়কারী করা হয়েছে। সদস্য করা হয়েছে- সিরাজুল ইসলাম, শামিমা আক্তার সীমা, মাহাবুব উল আলম, হযরত আলী, আহসান হাবীব লিংকন, সাইদুর রহমান ও চয়ন শেখকে।

ভেড়ামারা উপজেলায় প্রধান সমন্বয়কারী হয়েছেন শোভন আহমেদ এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী হয়েছেন অভিরাজ, শরীফ মোল্লা ও আনাজ মন্ডল। সদস্যরা হলেন- সজিবুল ইসলাম, সোহাগ আলী, মোয়াজ্জেম হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, রিন্টু আলী, সুমন আলী, বাদশা আলী, শাহাবুল ইসলাম, সোহরাব ডাক্তার ও সাকিব আলী।

সমন্বয় কমিটিকে আগামী তিন মাস অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পূর্ব পর্যন্ত এই কমিটির অনুমোদন থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/কাঞ্চন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য গ ম সমন বয়ক র ক ল ইসল ম উপজ ল র য় কম ট সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

গানে–আবৃত্তিতে রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা

জমিদারির কাজে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, শাহজাদপুর, নওগাঁর পতিসরে বহুবার ভ্রমণ করেছিলেন। পদ্মায় বোটে করে ভাসতে ভাসতে দেখেছেন বাংলার সজল সবুজ প্রকৃতি। নদীর দুই পারের মানুষের জীবনযাত্রা। বাউল, ভাটিয়ালি গানের সুরে মোহিত হয়েছে কবির চিত্ত। কবি সেই সব দেখা ও শোনার অভিজ্ঞতা, আবেগ, অনুভব প্রকাশ করেছেন গানে, কবিতায়, গল্পে আর ‘ছিন্নপত্র’ নামের চিঠিতে। কবির প্রয়াণ দিবসের আয়োজনে সেই রচনা থেকে পাঠ আর গানে গানে শ্রদ্ধা নিবেদন করল ছায়ানট।

গতকাল বুধবার ২২ শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে ‘অন্তরতর হে-বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। সন্ধ্যা সাতটায় ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি–ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল সম্মেলক কণ্ঠে ‘অন্তর মম বিকশিত কর অন্তরতর হে’ গানটি দিয়ে। পরে ইফফাত বিনতে নাজি গেয়েছেন ‘চিত্ত পিপাসিতরে গীত সুধার তরে’। গানের ফাঁকে ফাাঁকে পদ্মাপারের জীবনযাত্রা নিয়ে কবির লেখা থেকে পাঠ ও কবিতা আবৃত্তি করেছেন সুমনা বিশ্বাস ও জহিরুল হক খান। এরপর আবার সম্মেলক কণ্ঠের গান ‘হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে ময়ূরের মতো নাচে রে’।

একদা পদ্মাঘাটে লেগেছিল কবির বোট। পাশেই গ্রামের কোনো এক বধূকে বিদায় দিতে সমবেত হয়েছিল তাঁর বিভিন্ন বয়সী আত্মীয়স্বজন। নানা কথোপকথনে মেতে উঠেছিলেন তাঁরা। কবি সেই বর্ণনা লিখেছিলেন তাঁর অনন্য কাব্যময় ভাষায়। সেটি পাঠ করা হলো। তারপর দুটি একক কণ্ঠের গান। ‘ওলো সই, ওলো সই আমার ইচ্ছা করে তোদের মতো মনের কথা কই’ গানটি গেয়ে শোনালেন মাসকুরা আখতার। অমেয়া প্রতীতি পরিবেশন করলেন ‘তোমার গোপন কথাটি, সখী, রেখো না মনে’।

এবার এক ধবল জ্যোৎস্নার বর্ণনা। পদ্মার জনমানবহীন, বৃক্ষ–তৃণশূন্য, দিগন্তবিস্তৃত ধু ধু বালুচর। কোজাগর পূর্ণিমার জ্যোৎস্নাস্নাত সেই চর দেখে কবির মন ভরে উঠেছিল ভাবাবেগে। তাঁর রচনা থেকে সে রাতের বর্ণনা পাঠের পর অভয়া দত্ত গেয়ে শোনালেন ‘আজি যে রজনী যায়’। দীপ্র নিশান্ত শোনালেন ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা তুমি আমার সাধের সাধনা।’

অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল পাঠ আবৃত্তি আর গানে গানে। গান নির্বাচন করা হয়েছিল পাঠ ও আবৃত্তির বিষয়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। ‘দুই পাখি’ কবিতাটি আবৃত্তির পরে কবিতাটির গান পরিবেশন করেন তাহমিদ ওয়াসীফ। ‘বঁধু মিছে রাগ করো না’ গেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

পূর্ব বাংলায় এসে বাউলগানের সুর, মরমি ভাবধারায় কবি গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সে কথা তিনি লিখেছেনও নানা রচনা ও চিঠিতে। তার খানিকটা পাঠ করে শোনানো হলো শ্রোতাদের। তারপর ‘আমি কান পেতে রই’ গানটি পরিবেশন করলেন অভিজিৎ দাস।

কবির অন্তরের যে আধ্যাত্মিক ভাব ও ভাবনা, সেসব নিয়েই তিনি নৈবেদ্য কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো রচনা করছিলেন। এই কবিতাগুলো নিয়ে তখন স্তুতি ও সমালোচনা, চারপাশের নানা রকম কোলাহল। সেসবের কোনো কিছুতেই তিনি বিচলিত বোধ করছিলেন না। বন্ধু বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুকে তাঁর ভাব–ভাবনার কথা জানিয়ে পত্র রচনা করেছিলেন কবি। পত্র থেকে পাঠ করা হলো। পরে ‘কোলাহল তো বারণ হলো’ গানটি গাইলেন মনীষা সরকার। আজিজুর রহমান তুহিন শোনালেন ‘জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ’। শেষে সম্মেলক কণ্ঠে ‘আজ বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ পরিবেশনা। আর সমাপ্তি হলো বরাবরের মতোই জাতীয় সংগীত দিয়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ