এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যে ১০ বিশেষ নির্দেশনা
Published: 22nd, June 2025 GMT
২০২৫ সালের এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ২৬ জুন। সময়সূচি অনুযায়ী ২৬ জুন বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হবে এই পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। এদিকে শিক্ষা বোর্ডগুলো চলতি বছরের এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট) পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো—
১.
আসন গ্রহণ ৩০ মিনিট আগে
পরীক্ষার কেন্দ্রে নির্ধারিত কক্ষে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য ‘নির্দিষ্ট আসন’ আছে। সেই আসনে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে বসতে হবে—এমন নির্দেশনা রয়েছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের। প্রথম দিন পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই সকাল ৯টায় পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। কারণ, তোমার বসার নির্দিষ্ট আসন খুঁজে বের করতে হবে। তা খুঁজতে সময় লাগবে। অন্যান্য দিন প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে প্রবেশ করে নিজের আসন গ্রহণ করতে হবে। রাস্তায় ‘যানজটের কথা’ মাথায় রেখে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে।
২. লিখে বৃত্ত ভরাট করা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। পরীক্ষার সময় তোমার উত্তরপত্রের সঙ্গে ‘ওএমআর শিট’ থাকবে। উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিটে’ তোমার পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বোর্ডের নাম ইত্যাদি যথাযথভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লিখতে হবে। পরে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সঠিক ডিজিটের বৃত্তটি অবশ্যই ভরাট করতে হবে।
৩. উত্তরপত্র ভাঁজ করবে না
মনে রেখো, কোনো অবস্থাতেই তোমার এইচএসসি পরীক্ষার খাতা বা উত্তরপত্র ভাঁজ করবে না। উত্তরপত্র ভাঁজ করলে এর সঙ্গে থাকা ‘ওএমআর শিট’ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৪. ক্যালকুলেটর ব্যবহার
পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীর শুধু ‘সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর’ ব্যবহারের অনুমতি আছে। কোনোভাবেই উচ্চতর সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে না।
১৬ জুন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নিচের সায়েন্টিফিক নন–প্রোগ্রামেবল মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এসবের মধ্যে—এফএক্স-৮২এমএস, এফএক্স- ১০০এমএস, এফএক্স-৫৭০এমএস, এফএক্স-৯৯১এমএস, এফএক্স-৯৯১ইএক্স, এফএক্স-৯৯১ইএস, এফএক্স-৯৯১ইএস প্লাস, এফএক্স-৯৯১ সি ডব্লিউ ইত্যাদি মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখিত মডেলের ক্যালকুলেটর ছাড়াও শিক্ষার্থীরা সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
৫. পরীক্ষার মাঝে বিরতি থাকবে না
এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষায় প্রথমে বহুনির্বাচনি অংশ ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) অংশের পরীক্ষা হবে। এই দুই অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো ধরনের বিরতি থাকবে না।
৬. মুঠোফোন ব্যবহার
এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রের ভেতরে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন মুঠোফোন সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। তাই এ বিষয়টি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
৭. পৃথকভাবে পাস
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক অংশে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পৃথকভাবে পাস করতে হবে।
৮. প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ে পরীক্ষা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থী শুধু রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয় বা যে বিষয়সমূহের উল্লেখ করা আছে, সেসব বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
৯. স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস
পরীক্ষার সময় কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জন্য ‘আসনবিন্যাস’ করা হবে।
১০. উপস্থিতিপত্রে স্বাক্ষর
পরীক্ষার দিন প্রতিটি বিষয়ের বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক পরীক্ষার অংশে ‘পরীক্ষার্থীর উপস্থিতিপত্র’ রয়েছে। মনে করে অবশ্যই পরীক্ষার উপস্থিতির জন্য সেই উপস্থিতিপত্রে অবশ্যই প্রত্যেক পরীক্ষার্থী স্বাক্ষর করবে।
লেখক: গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার পিএসসি (অব.), অধ্যক্ষ, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা শাখা, ঢাকা।
আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ৭ নির্দেশনা১৯ জুন ২০২৫আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষা: দেখে নাও নম্বর বণ্টন ও সময় বিভাজন১ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ক ন দ র পর ক ষ র থ র পর ক ষ র থ ক র পর ক ষ উপস থ ত এফএক স র জন য উল ল খ প রথম গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষায় সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে
প্রিয়, এইচএসসি পরীক্ষার্থী, সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের এই দুই বিষয়েই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার আগে কদিন ভালো করে পড়ো।
বহুনির্বাচনী অংশে ভালো করতে হলে নির্ধারিত অধ্যায়গুলো মনোযোগ সহকারে রিভিশন দেবে। সমাজকর্ম প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে বেশি নম্বর পেতে হলে অবশ্যই তোমাকে বহুনির্বাচনী অংশে ভালো করতে হবে।
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে উদ্দীপকটি অবশ্যই ভালোভাবে পড়তে হবে। বিশেষ করে প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতামূলক উত্তর লেখার আগে উদ্দীপকটি কয়েকবার পড়ে নিতে হবে।
উদ্দীপকটি সাধারণত মৌলিক, সম্পূর্ণ নতুন এবং বাস্তব জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়ে থাকে। তাই সুনির্দিষ্ট ধারণা খুঁজে বের করে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে যুক্তি ও তথ্য–প্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে সেই ধারণা ব্যাখ্যা করবে। সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতিতে চারটি অংশ (জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা) মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রশ্ন।
জ্ঞানমূলক অংশজ্ঞানমূলক অংশের প্রশ্নের নম্বর ১। এ পর্যায়ে প্রশ্নের ধরন হলো কী, কখন, কোথায়, কাকে বলে, সংজ্ঞা দাও—এসব শব্দের মাধ্যমে উত্তর অতি সংক্ষেপে এক বা দুই বাক্যে দেবে। যেমন পেশা কাকে বলে? এর উত্তর: একটি নির্দিষ্ট শাখায় তাত্ত্বিক জ্ঞানার্জন ও ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করে, সে জ্ঞানকে জীবনধারণের উপায় হিসেবে বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করাকে পেশা বলা হয়।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের, বাবা–মা’র তিন সূত্রেই বাজিমাত৪ ঘণ্টা আগেঅনুধাবনমূলক অংশঅনুধাবনমূলক প্রশ্নের নম্বর ২। এর মধ্যে ১ নম্বর জ্ঞানের জন্য আর ১ নম্বর অনুধাবনের জন্য। অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর দুই প্যারায় লেখার চেষ্টা করবে। প্রথম প্যারায় (জ্ঞানমূলক অংশ) যে বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে লিখবে। দ্বিতীয় প্যারায় অনুধাবনের দিকটি স্পষ্ট করবে।
প্রয়োগমূলক অংশপ্রয়োগমূলক প্রশ্নে মোট নম্বর থাকবে ৩। জ্ঞানে ১ নম্বর, অনুধাবনে ১ নম্বর ও প্রয়োগে ১ নম্বর। তাত্ত্বিক বিষয়টি জ্ঞানের দিক, প্রথম প্যারায় জ্ঞানের অংশের উত্তর লিখবে। প্রসঙ্গটি পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা করাই হলো অনুধাবন, দ্বিতীয় প্যারায় অনুধাবন অংশের উত্তর লিখবে। সব শেষে ওই দিকটি উদ্দীপকে কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা বিশ্লেষণ করাই প্রয়োগ। প্রয়োগ অংশে প্রতীক, সারণি ও চিত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের দিল সুখবর, অগ্রাধিকারে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া২ ঘণ্টা আগেউচ্চতর দক্ষতামূলক অংশউচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের মোট নম্বর ৪। উচ্চতর দক্ষতা মানেই একটি সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে উদ্দীপকের আলোকে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তার সপক্ষে তথ্য, তত্ত্ব, যুক্তি ও রেফারেন্সের ভিত্তিতে বিষয়টি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে হবে। তুলনামূলক বিচার-বিবেচনার ভেতর দিয়ে শিক্ষার্থী তার নিজস্ব ও আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে পারছে কি না, তা-ই এই অংশের বিবেচ্য বিষয়।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫: প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ০৪ আগস্ট ২০২৫দরকারি তথ্য—বিভিন্ন আইনের পটভূমি, সমাজকমে৴র মূল্যবোধ, ওয়াক্ফ, সামাজিক নিরাপত্তা, বিধবা বিবাহ, নারীশিক্ষা থেকে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। সমাজকর্ম দ্বিতীয় পত্রে চিকিৎসা সমাজকর্ম, সামাজিক সমস্যা, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে উত্তর দিতে পাঠ্যবইয়ের ওপর ভালো ধারণা থাকতে হবে। সে জন্য পাঠ্যবইটি বুঝে পড়বে। বহুনির্বাচনী অংশে প্রতিটি অধ্যায় থেকেই প্রশ্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি অধ্যায়ে সমাজবিজ্ঞানীর নাম, সংজ্ঞা, সাল, বৈশিষ্ট্য, পটভূমি প্রভৃতি খুব ভালো করে পড়তে হবে।
* লেখক: মাহমুদ বিন আমিন, প্রভাষক, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ঢাকা
আরও পড়ুনপ্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডসহ ১৪০০০ শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা০৪ আগস্ট ২০২৫