নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন জমা দিয়েছে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতাদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রোববার নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আবেদন জমা দিয়েছে দলটি। 

বিকেল চারটায় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল আবেদন জমা দিয়েছেন। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ৪টা ২০ মিনিটে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন শাখায় আবেদন জমা দেয় তারা।

নিবন্ধন জমা দেওয়ার আগে নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেতে যে শর্ত পূরণ করতে তার জন্য যত কাগজপত্র প্রয়োজন তা ট্রাকে করে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন আমাদের একটি প্রতিনিধি দল ভিতরে গিয়ে আবেদনের মূল কাগজপত্র জমা দেবে।

আবেদন জমা দেওয়ার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আবেদনের মূল কপি জমা দিয়ে সবাই মিলে একটি সংবাদ সম্মেলন করবো। এপর্যন্ত সকলকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে হবে।

নতুন দলের ক্ষেত্রে ইসির নিবন্ধনের শর্ত হল, দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে। কার্যকর কমিটি থাকতে হবে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায়। সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা কিংবা মেট্রোপলিটন থানার কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থনের নথিও দেখাতে হবে। দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি জমা দিতে হবে। আবেদন পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তা যাচাই-বাছাই শুরু করবে। নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে পারলে দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন সনদ দেবে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ইসি থেকে নিবন্ধন পেয়েছে ৬টি দল। যা নিয়ে বর্তমানে বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০টি। এর আগে গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইসিতে ৯৩টি দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প সদস য এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাওসিফ, শ্রুতলেখক নেওয়ার অনুমতি পায়নি

পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে গেল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাওসিফ রহমান ওরফে রিহান (১৫)। শ্রুতলেখক নেওয়ার অনুমতি না পাওয়ায় পরীক্ষা দিতে পারেনি সে। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

তাওসিফের মা দিলরুবা আফরোজ অভিযোগ করেন, ‘কেন্দ্রের সচিব এ বিষয়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। সব কাগজপত্র তাঁর কাছে দিয়েছিলেন। সুপারিনটেনডেন্টের কাছে সেগুলো তাঁর জমা দেওয়ার কথা। সবকিছু করার পরও শ্রুতলেখক নেওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়নি।’

এ বিষয়ে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের অধ্যক্ষ কেন্দ্রসচিব আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ড থেকে মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষার্থীর শ্রুতলেখকের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তাঁরা অনুমতি না আনায় শ্রুতলেখককে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে বাগমারা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট এস এম মজিবর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (ভোকেশনাল) নবম শ্রেণির পরীক্ষা আজ শুরু হয়েছে। আজ বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। তাওসিফ বাগমারা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী।

তাওসিফের মা দিলরুবা আফরোজ (শিরিন) বাগমারা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তিনি জানান, তাঁর ছেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। এবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নবম শ্রেণির পরীক্ষার্থী। শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুসারে ও সুপারিনটেনডেন্টের (প্রধান শিক্ষক) পরামর্শে শ্রুতলেখকের জন্য আবেদন করেন কেন্দ্রসচিবের মাধ্যমে। এ জন্য অষ্টম শ্রেণিতে পড়া একজন শ্রুতলেখক মনোনীত করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেন। আজ সকালে শ্রুতলেখক বাগমারা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তামিম হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে যায় তাওসিফ। কেন্দ্রে প্রবেশের সময় শ্রুতলেখক তামিমকে বাধা দেওয়া হয়। জানানো হয়, শ্রুতলেখকের অনুমতি মেলেনি। তখন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে শ্রুতলেখকসহ বেরিয়ে আসে তাওসিফ।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাগমারা টেকনিক্যাল ভোকেশনাল স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, তাওসিফ রহমান নিশ্চুপ বসে আছে। পরীক্ষার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে কাঁদতে থাকে। সে আর কোনো কথা বলতে পারেনি।

তাওসিফের বাবা তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘তাওসিফ কাঁদতে কাঁদতে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসেছে। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী তাওসিফ, শ্রুতলেখক নেওয়ার অনুমতি পায়নি