পুশইনের হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩৯ কিলোমিটার সীমান্ত
Published: 23rd, June 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনেক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে (পুশইন) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এসব ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হলেও পুশইন বন্ধ হচ্ছে না। পুশইন রোধে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ৩৯ কিলোমিটার এলাকা পুশইনের ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে ভারতের ১৩১ দশমিক ৩ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এসব এলাকায় ৫৩ ও ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে আছে ৫৪ কিলোমিটার সীমান্ত। ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে আছে ৭৭ দশমিক ৩ কিলোমিটার সীমান্ত। এর মধ্যে ৩৯ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হয়নি। এর মধ্যে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন ৩৭ কিলোমিটার এবং ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন ২ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া নেই। এই ৩৯ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে অনেক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে বিএসএফ।
বিজিবি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি সীমান্ত এলাকা দিয়ে আলাদাভাবে ৪৫ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। তাদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী এবং ১৯ জন শিশু।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ মে গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭ জন, ৩ জুন ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে ৮ জন এবং সর্বশেষ ১৮ জুন শিবগঞ্জের মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে ২০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। তাদের অধিকাংশই কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা।
ঠেলে পাঠানো ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কাজের সন্ধানে তারা বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গেছেন। তারা ভারতের হারিয়ানাসহ অন্যান্য প্রদেশে গিয়ে কাজ করতেন। সম্প্রতি তাদেরকে আটক করার পর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর কয়েকদিন আটকে রাখা হয়। পরে গাড়িতে করে পুলিশি পাহারায় সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে বিএসএফের সদস্যরা গভীর রাতে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে পুশইন করে। এ সময় তারা শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ভাষ্য— চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ৩৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় বিএসএফ একেক দিন একেক এলাকা দিয়ে রাতের অন্ধকারে পুশইন করছে।
৫৩ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেছেন, “সীমান্ত এলাকায় পুশইন রোধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে বিজিবি সর্বদা সচেষ্ট এবং এ কার্যক্রম নিয়মিত অব্যাহত থাকবে।”
নতুন করে মন্তব্য না করলেও ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এর আগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিলেন, পুশইনের যেকোনো ঘটনার পরপরই পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেছেন, “পুশইনের শিকার ব্যক্তিদের আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি। এর পরে তাদেরকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়।”
ঢাকা/শিয়াম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ র ৩৯ ক ল ম ট র স ম ন ত এল ক ৫৯ ব জ ব প শইন র ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে সাতজনকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
ছবি: বিজিবির সৌজন্যে