কর কমাতে বিনিয়োগ করুন ৩০ জুনের মধ্যে
Published: 24th, June 2025 GMT
ধরা যাক, মাহবুব তাঁর নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বছরে মোট ১৫ লাখ টাকা বেতন পান। এর বাইরে তিনি স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিট থেকে বছরে সুদ বাবদ দুই লাখ টাকা পান। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে বছরে মুনাফা বাবদ পান আরও এক লাখ টাকা। সুদ বাবদ প্রাপ্ত আয়কে আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আর স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত আয় ন্যূনতম করের উৎস হতে আয় এবং সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত আয় চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় হিসাবে বিবেচিত।
এখন দেখা যাক, এক করবর্ষে মাহবুবের আয় কত ছিল। প্রাপ্ত হিসাবে দেখা যাচ্ছে মাহবুব এক করবর্ষে মোট আয় করেছে ১৮ লাখ টাকা। ধরা যাক, এই আয় তিনি করেছেন ২০২৪-২৫ করবর্ষে। এই করবর্ষে বেতনখাতে তাঁর কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়সীমা ছিল সাড়ে ৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মাহবুবের মোট করযোগ্য আয় দাঁড়ায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। ২০২৫-২৬ করবর্ষে মাহবুবের আয় যদি একই থাকে, তাহলে তাঁর মোট করযোগ্য আয় দাঁড়াবে ১৩ লাখ টাকায়। কারণ, করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতনখাতে করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, মাহবুব চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় বাদে ন্যূনতম করের উৎস থেকে আয়সহ মোট আয়ের ওপর কর রেয়াত দাবি করার যোগ্য হবেন, যা পূর্ববর্তী করবর্ষে রেয়াতযোগ্য ছিল না। এর অর্থ হলো গত বছর ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যেত। কিন্তু এই করবর্ষে ১২ লাখ টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যাবে। অতিরিক্ত কর রেয়াত এখন সাড়ে ৪ হাজার টাকা হবে। এই ধরনের কর রেয়াত দাবি করার জন্য মাহবুবকে আয়কর আইন অনুযায়ী বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে অন্তত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। জনপ্রিয় বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো সরকারি সিকিউরিটিজ (সঞ্চয়পত্র, ট্রেজারি বিল, বন্ড), জীবন বিমা প্রিমিয়াম, সম্পদ ব্যবস্থাপক বা অ্যাসেট ম্যানেজার পরিচালিত ইউনিট সার্টিফিকেট এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ, অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ডে করদাতা এবং প্রতিষ্ঠানের চাঁদা, তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ ইত্যাদি। সুতরাং করভার কমাতে হলে ৩০ জুনের মধ্যে বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে। ৩০ জুনের পর বিনিয়োগ করলে এই করবর্ষে বিনিয়োগের বিপরীতে রেয়াতি সুবিধা পাওয়া যাবে না।
ব্যক্তি করদাতারা এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ করহার ২০২৫-২৬ করবর্ষে আরোপ করার সুযোগ পাবেন। কারণ, এই করবর্ষের করহার ২০২৪ সালের অর্থ আইন দিয়ে নির্ধারিত ছিল। তবে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া আয়বর্ষ থেকে অর্থাৎ ২০২৬-২৭ করবর্ষ থেকে এই এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশের এই হার আর থাকবে না।
স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কর পরামর্শক
লেখক: এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক ও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট ক র ওপর কর র উৎস ম হব ব কর র য
এছাড়াও পড়ুন:
শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে না সেন্ট্রাল ফার্মা
পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পরিচালনার পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তথ্য মতে, লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতি অনুমোদনের জন্য কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৩০ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। আর এ জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ নভেম্বর।
২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে (০.১৮) টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (০.৩৫) টাকা।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ঋণাত্মক শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে (০.১৮) টাকা।
এই করপোরেট ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেনের কোনো মূল্য সীমা থাকবে না।
ঢাকা/এনটি/ইভা