ধরা যাক, মাহবুব তাঁর নিয়োগকর্তার কাছ থেকে বছরে মোট ১৫ লাখ টাকা বেতন পান। এর বাইরে তিনি স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিট থেকে বছরে সুদ বাবদ দুই লাখ টাকা পান। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে বছরে মুনাফা বাবদ পান আরও এক লাখ টাকা। সুদ বাবদ প্রাপ্ত আয়কে আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আর স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত আয় ন্যূনতম করের উৎস হতে আয় এবং সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত আয় চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় হিসাবে বিবেচিত।

এখন দেখা যাক, এক করবর্ষে মাহবুবের আয় কত ছিল। প্রাপ্ত হিসাবে দেখা যাচ্ছে মাহবুব এক করবর্ষে মোট আয় করেছে ১৮ লাখ টাকা। ধরা যাক, এই আয় তিনি করেছেন ২০২৪-২৫ করবর্ষে। এই করবর্ষে বেতনখাতে তাঁর কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়সীমা ছিল সাড়ে ৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মাহবুবের মোট করযোগ্য আয় দাঁড়ায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা। ২০২৫-২৬ করবর্ষে মাহবুবের আয় যদি একই থাকে, তাহলে তাঁর মোট করযোগ্য আয় দাঁড়াবে ১৩ লাখ টাকায়। কারণ, করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বেতনখাতে করমুক্ত আয়সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন।

নিয়ম অনুযায়ী, মাহবুব চূড়ান্ত করের উৎস হতে আয় বাদে ন্যূনতম করের উৎস থেকে আয়সহ মোট আয়ের ওপর কর রেয়াত দাবি করার যোগ্য হবেন, যা পূর্ববর্তী করবর্ষে রেয়াতযোগ্য ছিল না। এর অর্থ হলো গত বছর ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যেত। কিন্তু এই করবর্ষে ১২ লাখ টাকার ওপর ৩ শতাংশ কর রেয়াত দাবি করা যাবে। অতিরিক্ত কর রেয়াত এখন সাড়ে ৪ হাজার টাকা হবে। এই ধরনের কর রেয়াত দাবি করার জন্য মাহবুবকে আয়কর আইন অনুযায়ী বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে অন্তত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। জনপ্রিয় বিনিয়োগ ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত যেকোনো সরকারি সিকিউরিটিজ (সঞ্চয়পত্র, ট্রেজারি বিল, বন্ড), জীবন বিমা প্রিমিয়াম, সম্পদ ব্যবস্থাপক বা অ্যাসেট ম্যানেজার পরিচালিত ইউনিট সার্টিফিকেট এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ, অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ডে করদাতা এবং প্রতিষ্ঠানের চাঁদা, তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ ইত্যাদি। সুতরাং করভার কমাতে হলে ৩০ জুনের মধ্যে বিনিয়োগযোগ্য ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে। ৩০ জুনের পর বিনিয়োগ করলে এই করবর্ষে বিনিয়োগের বিপরীতে রেয়াতি সুবিধা পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি করদাতারা এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ করহার ২০২৫-২৬ করবর্ষে আরোপ করার সুযোগ পাবেন। কারণ, এই করবর্ষের করহার ২০২৪ সালের অর্থ আইন দিয়ে নির্ধারিত ছিল। তবে ১ জুলাই ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া আয়বর্ষ থেকে অর্থাৎ ২০২৬-২৭ করবর্ষ থেকে এই এক লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশের এই হার আর থাকবে না।

স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কর পরামর্শক

 লেখক: এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক ও সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ক র ওপর কর র উৎস ম হব ব কর র য

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন সচিবালয়ের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে আজ রোববার সচিবালয়ের ভেতরে বড় ধরনের বিক্ষোভের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে আগামীকাল সোমবার দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা–কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো–চেয়ারম্যান মুহা. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন তাঁরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থিত সচিবালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে অবস্থান করবেন। সেখানে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মপন্থা ঠিক করবেন।

আরও পড়ুনসরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বড় বিক্ষোভ কর্মচারীদের১ ঘণ্টা আগে

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে থেকে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা।

আন্দোলন চলার মধ্যেই ২৫ মে অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে অফিস খোলার এক দিন পর গত সোমবার থেকে আবার সচিবালয়ের ভেতর টানা বিক্ষোভ করে আসছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।

আজ বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ে দেখা যায়, বিপুলসংখ্যক কর্মচারীর উপস্থিতিতে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বারান্দাসহ সচিবালয়ের চত্বর প্রদক্ষিণ করে। এরপর পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের (ভবন–১১) সামনে গিয়ে অবস্থান নেন মিছিলে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা। সেখানে তাঁরা অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে নানা রকমের স্লোগান দেন।

আরও পড়ুনসরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে কিছু কিছু জায়গায়: আইন উপদেষ্টা১৬ জুন ২০২৫

ঈদের পরের কর্মসূচিতে ঈদের আগের চেয়ে তুলনামূলক কম উপস্থিতি ছিল। কিন্তু আজ দেখা গেছে, বিপুলসংখ্যক কর্মচারী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা স্লোগান দেন ‘অবৈধ কালো আইন মানি না’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও লড়াই কর’ ইত্যাদি। বিক্ষোভ শেষে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সচিবালয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কর্মচারীরা এত দিন ধরে আন্দোলন করলেও সরকার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। অবশ্য এ বিষয়ে দুই উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদসচিবের সমন্বয়ে একটি পর্যালোচনা কমিটি কাজ করছে।

আন্দোলনকারী কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে ‘কালো আইন’ আখ্যায়িত করে বলেছেন, এটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন বন্ধ করবেন না।

আরও পড়ুনঅধ্যাদেশের কিছু বিধানের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে: উপদেষ্টা ফাওজুল০১ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মূর্খ’ উপদেষ্টা এবং ‘ক্রিমিনাল’ মেয়রের (স্বঘোষিত) বিরোধ কী বার্তা দেয়
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২৪ জুন ২০২৫)
  • ‘পশু খাদ্যকে কোনোভাবেই মৎস্য খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না’
  • এক মাসে গড়াল আন্দোলন, ‘ভালো খবরের আশায়’ সচিবালয়ের কর্মচারীরা
  • দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছেন সচিবালয়ের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা
  • ব্যাংক এশিয়া ফার্স্ট পারপেচ্যুয়াল বন্ডের কুপন রেট ঘোষণা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২৩ জুন ২০২৫)
  • উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে রোবো টেক অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
  • নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন সচিবালয়ের আন্দোলনকারী কর্মচারীরা