জলের কুমির যেভাবে গেল নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়চূড়ায়
Published: 3rd, July 2025 GMT
‘জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ’—বহু পুরোনো এই বাগ্ধারাই বলে দিচ্ছে, এ দেশে স্মরণাতীতকাল থেকেই কুমিরের অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু জলের কুমির পাহাড়চূড়ায় বসবাসের খবর যে কাউকে চমকে দিতে পারে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার পাহাড়চূড়ায় সত্যিই দেখা মিলবে কুমিরের। তা–ও এক-দুটি নয়, কয়েক হাজার।
তুমব্রুর পাহাড়চূড়ায় রয়েছে দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক কুমিরের খামার। ২৫ একরের ওই একটি খামারে আছে ছোট–বড় মিলিয়ে ৩ হাজার কুমির। রাস্তার পাশে একাধিক বেষ্টনীতে দেখা মেলে বাচ্চা কুমিরের লাফালাফি। কিছু বেষ্টনীতে গাছের গুঁড়ির মতো নিশ্চল পড়ে আছে কুমিরের দল। কিছু কুমির মুরগি খেতে ব্যস্ত। পাহাড়ের নিচে একাধিক জলাধারেও রয়েছে কুমির। খামারে নিয়মিত ভিড় করেন দর্শনার্থীরা। ঘুরে ঘুরে কুমির দেখেন। কুমিরের জীবনচক্র জানার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ পাহাড়চূড়ায় খামার গড়ার ইতিহাস, কুমিরের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ির ওই খামার ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এখানকার কর্মীরা জানালেন, বিদেশে কুমির রপ্তানির উদ্দেশ্যে খামারটি গড়ে তোলা হয়। তবে এখনো মেলেনি রপ্তানির অনুমতি। এ জন্য খামারটি লাভের মুখ দেখতে পারেনি এখনো।
খামার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে কুমিরের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। এখনো মৌসুম চলছে। এর মধ্যে ডিম ফুটে বেশ কিছু ছানারও জন্ম হয়েছে। এ মৌসুমে প্রায় ২০০টি ছানার জন্ম হয়েছে। আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত আরও ১৫০টি ছানা হবে। সব মিলিয়ে খামারে কুমিরের সংখ্যা দাঁড়াবে তিন হাজারের কাছাকাছি।
খামারের একটি কুমির। প্রতিদিন এসব কুমির দেখতে প্রচুর দর্শনার্থী হাজির হন। সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ধুমধুমের পাহাড়ে দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন খামারে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয় যে পাখিকে
সামুদ্রিক পাখি ম্যাগনিফিসেন্ট ফ্রিগেটবার্ড। বড় ঠোঁটওয়ালা এই পাখি অন্য পাখিদের নিজেদের খাদ্য বানানোর চেষ্টা করে। এই পাখি অন্য পাখিদের কাছ থেকে খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য পরিচিত। তাই একে ‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয়।
এই পাখিরা খুব কমই পানিতে নামে। কারণ এদের জলরোধী পালক নেই, কিন্তু এরা দীর্ঘ দূরত্ব উড়তে পারে, এমনকি উড়ন্ত অবস্থাতেই ঘুমায়।
আরো পড়ুন:
পশুপাখিরা কী ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পায়?
বিরক্ত হলে গাছের চূড়ায় উঠে যায় ‘লাল ঝুটি টিয়া’
ম্যাগনিফিসেন্ট ফ্রিগেটবার্ড। ছবি: সংগৃহীত
একটি বড় ম্যাগনিফিসেন্ট ফ্রিগেটবার্ড-এর দৈর্ঘ্য ৮৯-১১৪ সেমি হতে পারে। এদের ডানার বিস্তার ২.৪৪ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পুরুষ পাখির বুকের কাছে একটি উজ্জ্বল লাল থলির মতো অংশ থাকে। যা প্রজনন ঋতুতে নারী পাখিদের আকর্ষণ করার জন্য ফুলিয়ে তোলে।
এদের পা ছোট এবং দুর্বল। এরা উষ্ণ বাতাসের ওপর ভর করে দিনে প্রায় ২৫৫ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারে, এবং উড়ন্ত অবস্থায়ই ঘুমায়।এরা উড়ন্ত মাছ, স্কুইড, টুনা, এবং অন্যান্য ছোট সামুদ্রিক প্রাণী পানি থেকে ধরে খায়।
এরা অন্য পাখিদের হয়রানি করে এবং তাদের মুখ থেকে সদ্য ধরা খাবার ছিনিয়ে নেয়, যার কারণে এদেরকে ‘সাগরের জলদস্যু’ বলা হয়।
ম্যাগনিফিসেন্ট ফ্রিগেটবার্ড সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলের মহাসাগরের কাছাকাছি বাস করে এবং ম্যানগ্রোভ বা নিচু গাছপালায় বাসা তৈরি করে। এরা প্রতি প্রজনন মৌসুমে একটি সাদা ডিম দেয়। এই পাখির সংখ্যা দিনকে দিন উল্লেখযোগ্যহারে কমে চলেছে।
সূত্র: অল অ্যাবাউট বার্ডস
ঢাকা/লিপি