ভোররাতে নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে যেন ফুটবলপ্রেমীরা এক রূপকথার ম্যাচ প্রত্যক্ষ করলেন। রিয়াল মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কোয়ার্টার-ফাইনাল ম্যাচটি ছিল যেন নাটক। যেখানে প্রতিটি দৃশ্য ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা। অভিনয়ে যার মূল নায়ক কিলিয়ান এমবাপে ও থিবো কোর্তোয়া। শেষের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পা রাখল রিয়াল।

শুরুটা হয়েছিল স্বপ্নের মতো। মাত্র দশ মিনিটেই গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে দেন গন্সালো গার্সিয়া। যুব দল থেকে উঠে আসা এই ফরোয়ার্ড প্রমাণ করছেন, বড় মঞ্চে খেলতে হলে কেবল নাম নয়, দরকার সাহস ও স্কিলে ভরপুর পারফরম্যান্স। এরপর ফ্রান গার্সিয়ার নিখুঁত ফিনিশিংয়ে দ্বিগুণ হয় ব্যবধান। প্রথমার্ধে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকা রিয়াল যেন তখনই লিখে ফেলেছিল জয়গাঁথা।

তবে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড হাল ছাড়ার দল নয়। দ্বিতীয়ার্ধে তারা গতি বাড়ায়, চাপ বাড়ায়। কিন্তু রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়া তখনো ছিলেন অটল প্রহরীর মতো। কোচের পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে মাঠে নামেন এমবাপে, যিনি আবারো প্রমাণ করেন কেন তিনি বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ডদের একজন।

আরো পড়ুন:

দারুণ জয়ে সিরিজে সমতা আনল বাংলাদেশ

টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত 

কিন্তু গল্পে মোড় আসে যোগ করা সময়ে। আন্টোনিও রুডিগারের ভুলে গোল করে ম্যাচে উত্তেজনার স্রোত ফেরায় ডর্টমুন্ড। কিন্তু আশার আলো নিভিয়ে দিতে বেশি সময় নেননি এমবাপে। ওভারহেড কিকে দুর্দান্ত এক গোল করে আবারো রেয়ালকে এগিয়ে দেন ৩-১ গোলে।

এরপর ঘটে আরও এক নাটকীয়তা। ডিন হাউসেনের লাল কার্ড এবং ডর্টমুন্ডের পেনাল্টি গোল। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-২। তখনও এক মিনিট বাকি। ঠিক তখনই মার্সেল সাবিৎজারের জোরালো শট ফিরিয়ে রিয়ালকে বাঁচান কোর্তোয়া। যিনি এদিন গোলবারে ছিলেন সত্যিকারের সুপারহিরো।

রেফারির শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে ডর্টমুন্ডের হতাশা আর রিয়ালের উল্লাস মিশে যায় রাতের আকাশে। থ্রিলার ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদ এখন ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে লড়বে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী পিএসজির বিপক্ষে, বুধবার দিবাগত রাতে।

  ঢাকা/আমিনুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে সমতা টানল বাংলাদেশ

প্রথম ম্যাচে নাটকীয় ধসের পর বড় ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ রানের জয় তুলে নিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। বাংলাদেশের দেয়া ২৩৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শ্রীলঙ্কা অল আউট হয়েছে ১৭৫ রানে।

বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য এনে দেন পেসার তানজিম সাকিব। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কাকে। ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা, নিশাঙ্কা ফেরেন ৫ রানে। এরপর ইনিংস গুছিয়ে নিতে থাকেন কুশল মেন্ডিস ও নিশান মাদুশকা। দুজন মিলে দ্রুত রান তুলতে থাকেন, যার বেশিরভাগই আসে কুশলের ব্যাট থেকে। মাত্র ২০ বলে অর্ধশতক তুলে নেন কুশল। তাদের জুটিতে অষ্টম ওভারেই লঙ্কানদের স্কোর ছাড়ায় পঞ্চাশ। তবে ৯.৩ ওভারে ৬৯ রানের জুটি ভাঙেন তানভীর ইসলাম। ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে ধোঁকা খেয়ে মাদুশকা ক্যাচ তুলে দেন হৃদয়ের হাতে। ২৫ বলে ১৭ রান করেন মাদুশকা, ইনিংসে ছিল ৩টি চার।

মাদুশকার বিদায়ের পরও থেমে থাকেননি কুশল মেন্ডিস। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের চাপে রাখেন। কিন্তু ১১.৫ ওভারে আবারও আঘাত হানেন তানভীর ইসলাম। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে এলবিডাব্লিউ হন কুশল। যদিও শুরুতে আম্পায়ার আউট দেননি, বাংলাদেশের নেওয়া রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত বদলায়। কুশল আউট হন ৩১ বলে ৫৬ রান করে, ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ১ ছক্কা।

এরপর দ্রুত আরও একটি সাফল্য এনে দেন শামীম হোসেন। ইনিংসের ১৮.৪ ওভারে লঙ্কান অধিনায়ক আসালাঙ্কাকে (১৭ বলে ৬ রান) আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে দেন তিনি। তানভীর ইসলামের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আসালাঙ্কাকে ফিরিয়ে দেন শামীম। এতে ৯৯ রানে শ্রীলঙ্কার পড়ে চতুর্থ উইকেট।

চতুর্থ উইকেট পতনের পর জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন জেনিথ ও কামিন্দু। ২৫তম ওভারে সেই জুটি ভাঙার সুযোগ এনে দিয়েছিলেন শামীম। কামিন্দুর ক্যাচ উইকেটের পেছনে গেলেও সেটা নিতে পারেননি জাকের। তবে পরের ওভারে তানভীর ইসলাম ঠিকই তুলে নেন কামিন্দুর উইকেট। বোলিংয়ে এসেই কামিন্দুকে আউট করেছেন তানভীর। কামিন্দু ৫১ বলে ৩৩ রানে বিদায় নেন। এরপর লিয়ানাগের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন ভেল্লালাগে। ২৯.৪ ওভারে ভেল্লালাগেকে (১) নিজের চতুর্থ শিকারে পরিণত করেছেন তানভীর ইসলাম।

১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর হাসারাঙ্গাকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন লিয়ানাগে। তবে ১৬ বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি হাসারাঙ্গা। তাকে ফিরিয়েছেন মিরাজ। মহেশ থিকসানাও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তানভীরের বলে রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এই উইকেট নিয়ে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ফাইফার পেয়েছেন এই স্পিনার।

৪৬তম ওভারে ১৪ রান দিয়েছিলেন হাসান মাহমুদ। ৩০ বলে ৩৭ রানের সমীকরণ চলে এসেছিল শ্রীলঙ্কার জন্য। ১৭০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর খেলা বাংলাদেশের হাতেই ছিল ম্যাচ। কিন্তু লিয়ানাগে ভয় পাইয়ে দেন। ৫৩ বলে নবম উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন লিয়ানাগে। একসময় সমীকরণ চলে এসেছিল ১৭ বলে ২১ রানে। তবে লিয়ানাগেকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন মুস্তাফিজ। লিয়ানাগে ৮৫ বলে ৭৮ রান করে আউট হলেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ইনিংসের মাঝপথ থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর খেসারত দিতে হয়েছে তাদের। পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটির ওপর ভর করেই লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় টাইগাররা। তবে লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় কাঙ্ক্ষিত বড় স্কোর গড়া হয়নি। কলম্বোতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অলআউট হয় ৪৫.৫ ওভারে ২৪৮ রানে। ওপেনার ইমন খেলেছেন ৬৭ রানের ইনিংস, হৃদয়ের ব্যাটে এসেছে ৫৬ রান।

বাংলাদেশ শুরুতেই হারায় তানজিদ তামিমকে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আসিথা ফার্নান্দোর অফস্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন তামিম। ১১ বলে ৭ রানেই থামে তার ইনিংস। এরপর ইনিংস মেরামতে নামেন পারভেজ ইমন ও শান্ত। কিছুটা ছন্দে থাকলেও শান্ত ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১২তম ওভারে চারিথ আসালাঙ্কার বলে ক্যাচ তুলে ফেরেন ১৯ বলে ১৪ রানে। একপ্রান্তে আগলে রাখেন পারভেজ ইমন। গত ম্যাচে ফিফটি মিস করা এই বাঁহাতি আজ ব্যাট চালিয়েছেন বুঝেশুনে। ৪৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর খেলেন ৬৭ রানের ইনিংস, যার জন্য খেলেন ৬৯ বল।

অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ আবারও ব্যর্থ হয়। ব্যাট হাতে দায়িত্বশীলতা দেখাতে পারেননি তিনি। ১০ বলে ৯ রান করে বাজে শটে উইকেট দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। শামীম হোসেনকে এদিন নামানো হয় মিডল অর্ডারে। শুরুটা ভালো করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনিও। আসিথা ফার্নান্দোর বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৩ বলে ২২ রানে।

এরপর তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গ দিতে আসেন জাকের আলী। এই জুটিতে আসে ৪৫ রান। তবে জাকের ২৪ রান করে আউট হলে আবার ছন্দপতন হয়। একে একে ফিরে যান হৃদয় (৫৬), নাসুম, শরিফুল ও রিশাদ—সব মিলিয়ে ১৪ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

শেষদিকে কিছুটা লড়াই করেন তানজিম সাকিব। ২১ বলে ৩৩ রানের ইনিংসে দুটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকান এই তরুণ। তবে তার সেই চেষ্টা বড় সংগ্রহ এনে দিতে পারেনি। মুস্তাফিজুর রহমান (০), তানভীর ইসলাম (৪), হাসান মাহমুদ (০) কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি।

শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বাধিক চার উইকেট শিকার করেন আসিথা ফার্নান্দো। দারুণ বোলিংয়ে তিনটি উইকেট নেন ভানিন্দু হাসারাঙ্গা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিবারকে না জানিয়ে কুয়াকাটা গিয়েছিলেন ‘নিখোঁজ’ ডিজিএম
  • পরিবারকে না জানিয়ে কুয়াকাটা গিয়েছিলেন জনতা ব্যাংকের ‘নিখোঁজ’ ডিজিএম
  • পরিবারকে না জানিয়ে কুয়াকাটা গিয়েছিলেন জনতা ব্যাংকের ‘নিখোজ’ ডিজিএম
  • পরিবারকে না জানিয়ে কুয়াকাটায় ঘুরতে যান ‘নিখোজ’ জনতা ব্যাংকের ডিজিএম: পুলিশ
  • যুগের পর যুগ রিয়ার নামটা থাকবে: উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ
  • ইনজুরিতে শান্ত, রাখা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে
  • নাটকীয় জয়ে সেমিফাইনালে রিয়াল, সেমিতে পেল পিএসজিকে
  • রেকর্ড গড়ে মিরাজকে কৃতজ্ঞতা জানালেন তানভীর
  • রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে সমতা টানল বাংলাদেশ