বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১১ মাস পর কুমিল্লার দাউদকান্দিতে আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। এতে সাবেক সংসদ সদস্যসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারে গুলিতে নিহত হন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সুলতান মিয়া (৪০)। তিনি তিতাস উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী রেহানা বেগম বাদী হয়ে গত ৩০ জুন দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী প্রথম আলোকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত বছরের ৫ আগস্ট সুলতান মিয়া গৌরীপুর বাজারে এক মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারীরা বাজারে অবস্থান নিয়ে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া দেয়। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে সুলতান মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ৭ আগস্ট শাহবাগ থানা-পুলিশ লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।

এ মামলায় কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সবুর, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.

) মোহাম্মদ আলী, দাউদকান্দি পৌরসভার সাবেক মেয়র নাইম ইউসুফসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।

নিহত সুলতানের স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন পার করছেন। মামলা করতে খরচ হবে, এই ভেবে এত দিন মামলা করেননি পরে বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন।

ওসি জুনায়েত চৌধুরী বলেন, সুলতান মিয়া নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এর আগে মো. রিফাত ও মো. বাবু হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। মো. রিফাত ও মো. বাবু হত্যা মামলার কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ উদক ন দ

এছাড়াও পড়ুন:

অনুদান পায়নি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হাসিবের পরিবার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হাসিবের পরিবার সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রবিবার (৬ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদ হাসিবের পরিবারের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শহীদ হাসিবের বড় চাচা তোতা মিয়া ঢালী। তিনি জানান, শহীদ হাসিবের বাবা দেলোয়ার ঢালী প্যারালাইসিসে আক্রান্ত একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দেখভাল করেন হাসিবের বৃদ্ধ দাদি, যিনি নিজেও শারীরিকভাবে অক্ষম। পরিবারটি বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

আরো পড়ুন:

বাড়িতে ঢুকে ছুরিকাঘাত, ৬ দিন পর মৃত্যু

মেয়েকে হত্যার পর খালে ভাসিয়ে দিল বাবা

তোতা মিয়া ঢালী বলেন, “শহীদ হাসিব গেজেটভুক্ত হলেও আমরা অধিকাংশ সরকারি সাহায্য পাইনি। আমাদের পরিবারকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। যদিও হাসিব দেশের ছাত্রদের ন্যায্য অধিকারের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে।”

সংবাদ সম্মেলনটি হাসিবের নিজ বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার উত্তর কানাইপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন শহীদ হাসিবের মেজ চাচা আতাউর ঢালী, শহীদ হাসিবের দাদি সিরাতুন্নেছা, শহীদ হাসিবের প্রতিবন্ধী বাবা দেলোয়ার ঢালী প্রমুখ।

ঢাকা/বেলাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ