ফুল দেওয়া নিয়ে পটুয়াখালী বিএনপির কার্যালয়ে ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের হট্টগোল
Published: 6th, July 2025 GMT
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদ্য নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে শ্রমিক দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময়ের একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি স্নেহাংশু সরকার ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে রাতে কার্যালয়ে যান বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে তাঁরা কার্যালয়ে মিছিলসহ প্রবেশ করেন। এ সময় জেলা শ্রমিক দলের ব্যানারে একটি পক্ষ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে গেলে ছাত্রদলসহ কার্যালয়ে অবস্থানরত অন্য নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে পড়ে। বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে ঢুকতে চাইলে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়।
শ্রমিক দলের কর্মী মো.
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা তাড়াহুড়া করে ঢুকতে গেলে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. বেলাল হোসেনের পায়ে পা লেগে যায়। তখনই হট্টগোল বাঁধে, এরপর হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতা বেলাল হোসেন বলেন, ফুল দেওয়ার অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি অফিসে ঢুকে হট্টগোল শুরু করেন। পরে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। ওই ব্যক্তির পরিচয় তিনি জানেন না বলে জানান।
জেলা শ্রমিক দলের সদস্যসচিব মো. জাকারিয়া আহম্মেদ বলেন, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাঁদের না চেনার কারণে একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।