ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হেনস্তার অভিযোগ বাংলাভাষীদের
Published: 12th, July 2025 GMT
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ‘হেনস্তা’ করা হচ্ছে বলে আবারও অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দিল্লির বসন্তকুঞ্জের জয় হিন্দ কলোনিতে বাংলাভাষী পরিবারগুলোকে বাংলায় কথা বলার কারণে লক্ষ্যে পরিণত করা হচ্ছে। তাদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে পানি ও বিদ্যুৎ পরিষেবার মতো মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জোর করে ওই অঞ্চল থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের রাজধানী দিল্লির বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এসব একাধিক অভিযোগ তোলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা। তিনি বলেন, ‘কেউ বাংলায় কথা বললে তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে মমতা লেখেন, ‘নয়াদিল্লির বসন্তকুঞ্জের থেকে উঠে আসা একের পর এক ভয়ংকর হেনস্তার ঘটনার খবর শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও বিচলিত। এ বসতি মূলত বাংলাভাষী মানুষরা তৈরি করেছেন, যারা দিল্লিকে গঠন করার অসংগঠিত শ্রমশক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
শুক্রবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই কলোনির বাসিন্দাদের মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বাঙালি মুসলমান, যারা শ্রমিক হিসেবে দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে কাজ করেন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোয় বাংলা বলার কারণে ‘বাংলাদেশি’ তকমা পেতে হচ্ছে– এ অভিযোগ তুলে সম্প্রতি একাধিকবার সরব হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
উড়িষ্যায় কাজের জন্য যাওয়া বাঙালি শ্রমিকদের একই কারণে আটক করে রাখা হয়েছে বলেও ওই রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। বিজেপির দাবি, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ও নিরাপত্তার জন্যই এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
জয় হিন্দ কলোনির প্রসঙ্গে গেরুয়া শিবিরের যুক্তি, আদালতের নির্দেশ মেনেই অবৈধ বসতি উচ্ছেদের কাজ চলছে। কাউকে ইচ্ছা করে নিশানা করা হচ্ছে না। বিজেপির অমিত মালব্য বলেন, যে বসতি নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটা অবৈধভাবে দখল করা।
জয় হিন্দ কলোনি প্রসঙ্গে মমতা লেখেন, ‘শোনা যাচ্ছে, বিজেপি পরিচালিত সরকারের নির্দেশে তাদের পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় ও ইলেকট্রিসিটি মিটার তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারা নিজ অর্থে যে পানির ব্যক্তিগত ট্যাঙ্কারের ব্যবস্থা করেছিলেন, তা দিল্লি পুলিশ ও আরএএফের সহায়তায় আটকে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে এক প্রকার জবরদস্তিমূলক উচ্ছেদ চলছে, যদিও গত ডিসেম্বরে দিল্লি পুলিশের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপের পর আদালতে এ মামলা বিচারাধীন। মমতার প্রশ্ন, ‘আশ্রয়, জল ও বিদ্যুৎ– এ মৌলিক অধিকার যদি এভাবে পদদলিত করা হয়, তাহলে কীভাবে নিজেদের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বলে দাবি করব?’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের নিজ দেশেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। কেউ বাংলায় কথা বললে তিনি বাংলাদেশি হয়ে যান না। ভাষা-নির্বিশেষে তারা ভারতেরই নাগরিক; যে কোনো ভারতীয় নাগরিকের মতোই সমান অধিকারসম্পন্ন। মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার যেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এবার সেই বাংলাবিরোধী অপচেষ্টাকে দেশের অন্যান্য প্রান্তে শুরুর কৌশল নিয়েছে বিজেপি। গুজরাট, মহারাষ্ট্র, উড়িষ্যা ও মধ্যপ্রদেশ থেকেও বাংলাভাষীদের ওপর নিপীড়নের খবর আসছে। সেই বিদ্বেষ এসে পড়েছে দিল্লিতেও।
গত কয়েক মাসে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উড়িষ্যাসহ একাধিক রাজ্যে নথিপত্রহীন ‘বাংলাদেশি’ দাবি করে বহু বাংলাভাষীকে আটক করা হয়েছে। এদের কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখার পর পরিচয় যাচাই করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কাউকে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি এমন অনেককে পাওয়া যায়, যারা মূল ভারতেরই নাগরিক। কিন্তু বাংলাভাষী হওয়ায় তাদের ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিআরইউর নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ
পেশাদার সাংবাদিকদের মানোন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, সদস্যদের অধিকার সুরক্ষা এবং অবকাঠামো উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় জানিয়ে সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নতুন কমিটি।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ডিআরইউর শফিকুল কবির মিলনায়তনে নবনির্বাচিত কমিটির (২০২৬) কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিদায়ী কমিটি।
ডিআরইউর পুনঃনির্বাচিত সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কমিটিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যরা বিদায়ী কমিটির নেতাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
গত ৩০ নভেম্বর ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটি-২০২৬ এর নির্বাচন হয়। এতে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক নয়া দিগন্তের চিফ রিপোর্টার আবু সালেহ আকন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র রিপোর্টার মাইনুল হাসান সোহেল।
নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি মেহ্দী আজাদ মাসুম, যুগ্ম সম্পাদক মো. জাফর ইকবাল, অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ সোহেল, সাংগঠনিক সগম্পাদক এম এম জসিম, দপ্তর সম্পাদক মো. রাশিম (রাশিম মোল্লা), নারীবিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস পান্না, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাহমুদ সোহেল, ক্রীড়া সম্পাদক ওমর ফারুক রুবেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. মনোয়ার হোসেন, আপ্যায়ন সম্পাদক আমিনুল হক ভূঁইয়া এবং কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা।
নতুন কার্যনির্বাহী সদস্য মো. আকতার হোসেন, আলী আজম, মাহফুজ সাদি (মো. মাহফুজুর রহমান), আল-আমিন আজাদ, মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন, সুমন চৌধুরী, মো. আব্দুল আলীম ও মো. মাজাহারুল ইসলাম নির্বাচিত হন।
নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণের সময় বক্তব্য রাখেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি এম শফিকুল করিম, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, শাহেদ চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম আজাদ, নজরুল ইসলাম মিঠু, সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন এবং ইআরএফ সভাপতি দৌলত আক্তার মালা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক