বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ভর করছে দলগুলোর ওপর
Published: 9th, August 2025 GMT
জুলাই জাতীয় সনদ বা রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে আনা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে নিজ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেবে না জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তারা বলেছে, সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ভর করছে বিশেষজ্ঞ মতামত ও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। এ জন্য আগামী সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে কমিশন। ওই আলোচনার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের তৃতীয় পর্বের আলোচনা হবে।
গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ কথা জানান। জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাতে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জুলাই জাতীয় সনদ কবে নাগাদ স্বাক্ষরিত হতে পারে, সেটাও মূলত নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।
সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে। ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, আগামীকাল রোববার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সদস্য, আইন ও রাজনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের এ আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তৈরি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা রয়েছে।গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো প্রতিবেদন দেয়। পরে সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়।
পরে ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি অংশে ছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের ১৬৫টি ‘আশু বাস্তবায়নযোগ্য’ সুপারিশ। এগুলো বাস্তবায়নে কাজ চলছে। আরেকটি অংশে ছিল ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ। এগুলো নিয়ে প্রথম পর্বে ৩৩টি দলের সঙ্গে (২০ মার্চ-১৯ মে) আলাদাভাবে আলোচনা হয়। প্রথম পর্বে ঐকমত্য না হওয়া ২০টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ৩০টি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বে (৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই) আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। দুই পর্বের আলোচনায় বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হলেও এসব বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
যেসব সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। ইতিমধ্যে এই সনদের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে। বিএনপি এ বিষয়ে একমত। তবে শুধু এমন অঙ্গীকার করা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কিছু দলের আপত্তি আছে। তারা জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার এবং সংস্কার বাস্তবায়নের পদ্ধতি ঠিক করার দাবি করছে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রথম পর্বের আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়। দ্বিতীয় পর্বে ২০টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ১১টিতে সব দলের ঐকমত্য ও ৯টিতে নোট অব ডিসেন্টসহ (ভিন্নমত) সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা দরকার। আলী রীয়াজ সহসভাপতি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনবাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে হবে আলোচনা
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত ও প্রত্যাশিত স্বাক্ষরিত সনদের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা এবং বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা দরকার। সেই লক্ষ্যে কমিশন এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আগামী সপ্তাহে আলোচনা করবে। ওই আলোচনার আলোকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনায় বসবে কমিশন। আশা করা যায়, এ প্রক্রিয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যেই উপযুক্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, প্রস্তাব বাস্তবায়নের ব্যাপারে ঐকমত্য কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটা বাস্তবায়নের পথ কী হবে, তা বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাওয়া হবে। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানের বিষয়ও আছে। ফলে বাস্তবায়নের পথ কী হবে, তা রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ওপর নির্ভর করবে। কমিশন পূর্বনির্ধারিত কোনো অবস্থান থেকে বাস্তবায়নের কোনো পদ্ধতি সুপারিশ করবে না।
কিছু মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবের সিদ্ধান্তে কোনো কোনো দলের ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) আছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে তাঁরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী। তিনি বলেন, নোট অব ডিসেন্টের যেমন গুরুত্ব আছে, তেমনি ব্যাপকসংখ্যক দল যখন কোনো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়, সেটারও গুরুত্ব আছে। এটা বিবেচনা করতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, সবাই সব বিষয়ে একমত হবে না। কমিশন যত দূর সম্ভব ঐকমত্যের জায়গায় আসার চেষ্টা করেছে। অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশনের সাফল্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, সাফল্য বিষয়টা সব সময় আপেক্ষিক। কমিশন দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এটা একটা বড় রকমের অর্জন। সে জন্য অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ দিতে হবে। কমিশন এখানে অনুঘটকের কাজ করেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো যা বলছে
আলোচনায় জন্য ডাকলে বিএনপি যেতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করুক, দেখুক না, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের আইনি ও সাংবিধানিক বৈধ কোনো প্রক্রিয়া আছে কি না। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। আমরা মনে করি, এই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ও সাংবিধানিক বৈধতা দিতে পারে পরবর্তী সংসদ।’
তবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে বলেন, এখন রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয় সংস্কারে একমত হয়েছে, সরকারের উচিত সেগুলোর আইনি ভিত্তি দেওয়া এবং বাস্তবায়ন করা। সংস্কারের মাধ্যমেই আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন দ্রুত সম্পন্ন করে অধ্যাদেশ, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি প্রদান করা না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম বিফলে যাবে।
ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরুর আগেই তারা পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়নের দিকে নীতিগতভাবে একরকম ঝুঁকে গেছে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন অবস্থায় আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। তবে আমরা মনে করি, জুলাই সনদকে একটা আইনি ভিত্তি দিতেই হবে।’
ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ রোধ
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সাতটি উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছিল। এর অন্যতম ছিল, সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র রোধ ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনা। যাতে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার উত্থান না হয়। কিন্তু এ–সংক্রান্ত কিছু মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবে সব দল একমত হয়নি। এ ক্ষেত্রে সে উদ্দেশ্য কতটা পূর্ণ হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল। কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কেবল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্যের প্রশ্নকে বিবেচনা করলে হবে না। জাতীয় সংসদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে বিরোধী দলের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার কারণে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার ওপর একধরনের চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে।
আলী রীয়াজ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। আবার অধিকাংশ দলের বক্তব্য হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যেন একই সঙ্গে দলের প্রধান না হন। কমিশন আশা করছে, এটাও যদি বাস্তবায়ন হয়, তাহলে এই প্রক্রিয়াগুলোর বাইরে আরও কিছু বিষয় আছে, সেগুলো আসলে ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ রোধ করার চেষ্টা করবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, কেবল একটা নির্বাচন বা সংবিধান ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুনরুত্থান বন্ধ করতে পারবে না। এ জন্য একাদিক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর পরিবর্তন প্রয়োজন, বিধি–ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থারও পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও একটা পরিবর্তন করা দরকার।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন আশা করে, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে যে কাঠামোগত পরিবর্তনগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য সরকারকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করা হয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৪–১৫ বছরে একটা বড় সংকট ছিল, নির্বাচনব্যবস্থাটা ভেঙে পড়া এবং পরিকল্পিতভাবে সেটাকে ধ্বংস করা। সেটাকে পুনর্গঠন করার ক্ষেত্রে সংস্কারটা জরুরি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, কোনো কোনো দল জাতীয় সনদের ভিত্তিতে নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন যুক্ত নয়।
কমিশনের পরিচালন ব্যয়
ঐকমত্য কমিশনের পরিচালন ব্যয় প্রকাশ করা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, পরিচালন ব্যয় নিয়ে নিশ্চয় সরকারের অডিট (নিরীক্ষা) হবে। কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা আইন মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছে হিসাব আছে। যখন অডিট হবে, নিশ্চয় পরিচালন ব্যয় কত, তা জানা যাবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার জানান, কমিশন নিজে কোনো অর্থ খরচ করে না। সাচিবিক সহায়তার দায়িত্বে থাকা দুই সচিবালয় কমিশনের যাবতীয় খরচ নির্বাহ করে।
সংসদ ভবনে এলডি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো.
যেসব বিষয়ে ঐকমত্য
গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় ঐকমত্য ও সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
প্রথম পর্ব
৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এর মধ্যে আছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন, জেলা সমন্বয় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, রাজনৈতিক দলকে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় আনা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের আচরণবিধি, গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন, তথ্য অধিকার আইনের সংশোধন, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন, নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে সংশোধন, দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি, আয়কর আইনের সংশোধন ইত্যাদি।
দ্বিতীয় পর্ব
দ্বিতীয় পর্বে ২০টি মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
ভিন্নমত ছাড়া ১১ বিষয়ে ঐকমত্য
১. সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, ২. নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ৩. রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান, ৪. বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ—(ক) সুপ্রিম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, (খ) উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, ৫. জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ৬. প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, ৭. সংবিধান সংশোধন, ৮. প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল, ৯. নির্বাচন কমিশন গঠন, ১০. পুলিশ কমিশন গঠন, ১১. নাগরিকের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ-সম্পর্কিত প্রস্তাব।
ভিন্নমতসহ সিদ্ধান্ত ৯ বিষয়ে
১. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০ সংশোধন, ২. প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান, ৩. সরকারি কর্ম কমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান-সম্পর্কিত, ৪. সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব (সংখ্যা বৃদ্ধি, নির্বাচন পদ্ধতি ইত্যাদি, ৫. দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট (উচ্চকক্ষের গঠন, সদস্য নির্বাচনের পদ্ধতি, এখতিয়ার ইত্যাদি), ৬. রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, ৭. তত্ত্বাবধায়ক সরকার, ৮. রাষ্ট্রের মূলনীতি, ৯. রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ল ক স স ক র প রস ত ব ঐকমত য ও স দ ধ ন ত স স ক র প রস ত ব র ন র ব চনব যবস থ জ ল ই জ ত য় সনদ দ ব ত য় পর ব ক ন দ র করণ প রথম পর ব র য় জ বল ন ব যবস থ র র ষ ট রপত জ ল ই সনদ সরক র র ক ষমত র গঠন কর প রক র ন র ভর ত হয় ছ সদস য র আইন সনদ র র ওপর অবস থ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটে বাধা রাজনৈতিক দলগুলো
নির্বাচন কমিশন, খান ফাউন্ডেশনের ‘‘এমপাওয়ারিং উইমেন থ্রু রির্জাভড সিট ইন পার্লামেন্ট: ফাইট অর ফ্লাইট রেসপন্স?’ (সংসদে সংরক্ষিত আসনের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ণ: লড়াই নাকি পালানোর প্রবণতা?’ শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদন, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের বিভিন্ন নিউজ লেটার ও প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ১৯৭৩-১৯৭৫ মেয়াদের প্রথম জাতীয় সংসদে ১৫টি সংরক্ষিত আসনের প্রতিনিধিরাই ছিলেন সংসদের নারী প্রতিনিধিত্ব। ১৯৭৯-১৯৮২ মেয়াদে দ্বিতীয় সংসদে ২ জন নির্বাচিত ও ৩০টি নারী আসন মিলিয়ে মোট ৩২ জন নারী সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৮৮-৯০ মেয়াদে চতুর্থ সংসদে সংরক্ষিত আসন ছিল না। ৪ জন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলেন। ১৯৯১-১৯৯৫ মেয়াদে পঞ্চম সংসদে ৫ জন নির্বাচিত সহ ৩৫ জন নারী সংসদ সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিএনপির এক তরফা ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩ জন নারী সরাসরি নির্বাচিত হন। ৩০টি সংরক্ষিত আসন ছিল। ওই নির্বাচনটি বাতিল হয়ে ওই বছরের জুন মাসে (১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে) ৭ম সংসদ নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে সরাসরি নির্বাচিত ৮ নারীসহ মোট নারী প্রতিনিধি ছিলেন ৩৮ জন। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে ৭টি আসনে সরাসরি ও ৪৫টি সংরক্ষিত আসনসহ মোট ৫২ জন নারী সংসদ সদস্য হন। ২০০৯-২০১৩ মেয়াদের নবম জাতীয় সংসদে ২১ জন নারী সরাসরি নির্বাচিত হন। তবে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মমতাজ ইকবাল মারা গেলে ওই আসনের উপ নির্বাচনে পুরুষ নির্বাচিত হন। ওই মেয়াদে নারী আসন বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়। মোট নারী সংসদ সদস্য হন ৭০ জন। আওয়ামী লীগের আমলে ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচন ছিল একতরফা ও বির্তকিত। দশম জাতীয় নির্বাচনে ১৮ জন সরাসরি সহ মোট নারী সংসদ সদস্য ছিলেন ৬৮ জন, ২০১৮ সালে ২৩ জন সরাসরি নির্বাচিতসহ মোট ৭৩ জন ও ২০২৪ সালে ১৯ জন সরাসরি নির্বাচিতসহ মোট ৬৯ জন নারী প্রতিনিধি ছিলেন।
দলগুলোর মনোভাবনারী আসন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিএনপির প্রতিনিধিরা বলেছিলেন, সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করতে হবে এবং আগের মতো করে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসনসংখ্যার ভিত্তিতে দলগুলোর মধ্যে এসব আসন বিতরণ করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিরা বলেছিলেন, তাঁরা পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সংসদীয় আসন ৪০০টি এবং এর মধ্যে ১০০টি নারী আসনের বিষয়ে একমত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরা ১০০ নারী আসনে সারসরি নির্বাচনের পক্ষে। তবে পরে তাঁরা নারী আসনের বিষয়ে একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন। সেখানে বলেছেন, প্রতিটি দল ১০-১৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। তাতে ৩৫০-৪০০ নারী প্রার্থী পাওয়া যাবে। যাঁরা নির্বাচনে জয়ী হবেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হবেন। আর যেসব নারী প্রার্থী পরাজিত হবেন, তাঁদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া ১০০ জন হবেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য।
অন্যদিকে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল, সংসদে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করা। এর মধ্যে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রাখা। সেসব আসনে নারী প্রার্থীদের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হতে হবে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পরে জমা হওয়ায় তাদের সুপারিশ কমিশনের টার্মস অব রেফারেন্স বা কাজের পরিধিতে অর্ন্তভুক্ত করা যায়নি বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ফলে দলগুলোর সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আবার সংসদের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করা এবং এর মধ্যে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব দেশের বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় বলেও বিভিন্ন দলের নেতারা মনে করেন।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, নারী আসনের বিষয়ে কোনো সম্মানজনক উপায় বের হয়নি, এটা দুঃখজনক। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনব্যবস্থায় দলগুলোর অনাগ্রহের বড় কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিনের অভ্যস্ততা। সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা বা বেশিসংখ্যক নারীকে সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া—বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেই।
সামান্তা শারমিন বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে অস্ত্রের ঝনঝনানির মাধ্যমে, দুর্নীতি করে, প্রচুর অর্থ খরচ করে নির্বাচনে জিতে আসেন অনেকে। আরেকটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে পারিবারিক পৃষ্ঠপোষকতায় অনেক নারীকে সংরক্ষিত আসনে জায়গা দেওয়া হয়। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ছিল, সংসদে আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৬০০ করা। এর মধ্যে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রাখা। সেসব আসনে নারী প্রার্থীদের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হতে হবে।‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটে সীমাবদ্ধজাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনগুলোর নাম ‘সংরক্ষিত মহিলা আসন’। ১৯৭২ সালের সংবিধানে জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ১৫টি আসন সংরক্ষিত রাখা হয়। সংরক্ষিত আসনের সুবিধা প্রথমে ১০ বছরের জন্য রাখা হয়েছিল। পরে ১৯৭৮ সালে সংরক্ষিত আসনসংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ৩০। একই সঙ্গে ১০ বছরের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ বছর করা হয়। ১৯৮৭ সালে সংরক্ষিত আসনের মেয়াদ শেষ হয়। ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ছিল না।
এরপর ১৯৯০ সালে ১০ বছরের জন্য সংরক্ষিত আসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০০১ সালে অষ্টম সংসদের শুরুতে সংরক্ষিত আসন ছিল না। পরে এই সংসদেই সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর (২০০৪ সালে) মাধ্যমে ১০ বছর মেয়াদে নারী আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ করা হয়। ওই সময় সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনপদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়। সংসদে একটি রাজনৈতিক দলের কতজন প্রতিনিধিত্ব করছেন, সেই অনুপাতে ওই সংরক্ষিত আসনের কয়টি দল পাবে, তা নির্ধারিত হয়। দলগুলোর নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে নিজ নিজ দলের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যদের নির্বাচিত করেন। নবম সংসদে ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নারী আসনসংখ্যা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়।
এবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নারীর আসন নিয়ে পুরুষেরা সিদ্ধান্ত নিলেন। খুব হতাশ হয়েছি যে একটি নারীকে জোগাড় করা গেল না আলোচনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য! এটাকে দলের ব্যর্থতা, নাকি নেতৃত্বের ব্যর্থতা বলব, বুঝতে পারছি না।রুমিন ফারহানা, সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপিআইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মতোই মাসিক বেতন–ভাতা, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি কেনাসহ অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা পান।
বিগত সময়ে সংরক্ষিত আসনে যাঁরা নারী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, দু–একজন ব্যতিক্রম ছাড়া বেশির ভাগের ভূমিকা সংসদে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। দলের প্রতি আনুগত থাকা, বিরাগভাজন না হয়ে পাঁচ বছর কাটিয়ে দেওয়া এবং ভবিষ্যতে আবারও মনোনীত হওয়ার সুযোগ খোলা রাখার জন্য বেশির ভাগ নারী সদস্য চুপ থাকাকেই ‘নিরাপদ’ বলে ভেবেছেন। এমনকি নারী নির্যাতনের আলোচিত ঘটনাতেও তাঁদের সংসদে খুব একটা সোচ্চার হতে দেখা যায়নি।
নারী আসনের বিষয়ে কোনো সম্মানজনক উপায় বের হয়নি, এটা দুঃখজনক। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনব্যবস্থায় দলগুলোর অনাগ্রহের বড় কারণ হচ্ছে দীর্ঘদিনের অভ্যস্ততা। সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা বা বেশিসংখ্যক নারীকে সরাসরি নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া—বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি নেই।এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনএকাদশ সংসদে (২০১৮ মেয়াদে) সংরক্ষিত আসনে বিএনপি মনোনীত একমাত্র নারী সদস্য ছিলেন রুমিন ফারহানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৫৩ বছর ধরে সময়ে–সময়ে নারী আসনসংখ্যা বাড়ানো হলো। কিন্তু নারী আসন কোনোভাবেই নারীর পথকে সুগম করেনি, প্রশস্ত করেনি। অনেক নেতা পরিবারের নারী সদস্যদের সেসব আসনে বসিয়ে সুবিধা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় নারীর আসন নিয়ে পুরুষেরা সিদ্ধান্ত নিলেন। খুব হতাশ হয়েছি যে একটি নারীকে জোগাড় করা গেল না আলোচনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য! এটাকে দলের ব্যর্থতা, নাকি নেতৃত্বের ব্যর্থতা বলব, বুঝতে পারছি না।’
নারীর প্রশ্নে গোষ্ঠীস্বার্থ না দেখে নারীর স্বার্থ দেখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। তারা বলছে, জুলাইয়ে নারীরা ছিল সামনের সারিতে। এই নারীদের আর হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারীকে রাখতে হবে। নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ রাখতে হবে।
নারী আসন নিয়ে নারীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, সংসদে নারীদের জন্য আসন বাড়ানো ও সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে বলা হলেও তারা তা শোনেনি। কমিশন রাজনৈতিক দলকে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। নারী আসন নিয়ে নারীদের দাবি পূরণের আর সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ দাবি পূরণে এখন নাগরিক সমাজকে সক্রিয় হতে হবে।