দিনাজপুরে সরকারি চিঠি বিলির সময় অসুস্থ পুলিশ সদস্য, পরে মৃত্যু
Published: 21st, September 2025 GMT
ছবি: সংগৃহীত
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাঙ্গার আন্দোলন স্থগিত
ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আজ রোববার দুপুরে ভাঙ্গায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহম্মদ কামরুল হাসান মোল্লার সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলনকারীরা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
আরও পড়ুনভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনসংসদীয় আসন নিয়ে ভাঙ্গায় ভাঙচুর: ইসিতে ডিসির চিঠি, ‘ফ্যাসিস্ট’ ধরতে চান ডিআইজি১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫গত মঙ্গলবার এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। আইনসচিব, নির্বাচন কমিশনসহ চার বিবাদীকে ১০ দিনের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারী দুই থেকে তিনজন নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান। তিনি কয়েকজন নেতাকে তাঁর কার্যালয়ে যেতে বলেন। তাঁদেরই একজন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা প্রথমে ইউএনওর কার্যালয়ে যেতে রাজি হননি। কারণ, একাধিক মামলা হওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার হওয়ার শঙ্কা ছিল। আন্দোলনকারীরা উপজেলায় গেলে গ্রেপ্তার হতে পারেন—এমন শঙ্কার কথা ইউএনওকে জানালে তিনি তাঁদের নিশ্চয়তা দেন। পরে ১৮ থেকে ২০ জন আন্দোলনকারী সন্ধ্যার পর ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুনসাড়ে ১১ ঘণ্টা পর ভাঙ্গায় মহাসড়ক ও রেলপথ থেকে অবরোধ উঠল১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ওই আলোচনায় অংশ নেওয়া হামিরদী ইউনিয়নের মাঝিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, ‘ইউএনও আমাদের জানান, এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট হয়েছে। হাইকোর্ট ১০ দিনের সময় দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে রুল জারি করেছেন। ২৬ সেপ্টেম্বর রুলের জবাব দেওয়ার কথা। ইউএনও আদালতের রায় হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক-রেলপথ অবরোধ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেন। আন্দোলনকারীরা মামলার বিষয় তুলে ধরে ইউএনওর কাছে নিরীহ কাউকে হয়রানি না করার নিশ্চয়তা চান। পাশাপাশি যাঁরা ভাঙচুর-সহিংসতায় জড়িত, ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। ইউএনও আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দেখা করানোর প্রস্তাব দিলে আন্দোলনকারীরা সম্মত হন।’
ইউএনও আন্দোলনকারীদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যেতে দুটি বাস বরাদ্দ দেন। সেই বাসে চড়ে শতাধিক আন্দোলনকারী আজ দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লার সঙ্গে আলোচনা করেন। বেলা দেড়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এ আলোচনা চলে। এতে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আবদুল জলিলসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনভাঙ্গায় বিএনপির শান্তিমিছিল, শনিবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫সভায় অংশ নেওয়া ভাঙ্গা উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক রবীন সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসক তাঁদের জানিয়েছেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে তাঁরা বাধা দেননি। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী ঢুকে সহিংসতা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। সহিংসতায় যারা জড়িত না, তাদের হয়রানি করা হবে না। বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। রায় না হওয়া পর্যন্ত যেন তাঁরা আন্দোলন স্থগিত করেন। তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা হাইকোর্টের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত চলমান কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করছি।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকার মানুষের পালস আমি ধরতে পেরেছি। আমরা সেভাবেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছি। আন্দোলনকারীদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, আদালতের রায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বিরত রাখতে। তবে এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার যারা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, ভাঙ্গা থানা ও ভাঙ্গা হাইওয়ে থানায় তাণ্ডব চালিয়েছে, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।’