ছোট ভাই ছয় দিন ধরে নিখোঁজ। তাঁর খোঁজে দিনরাত ছুটছেন বড় ভাই ও পরিবারের সদস্যরা। অপেক্ষায়–উৎকণ্ঠায় তাঁদের দিন কাটছে। ভাইকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে কাঁদলেন বড় ভাই। পরিবারের দাবি, যদি তাঁকে মেরেও ফেলা হয়ে থাকে, তবে অন্তত লাশটা যেন খুঁজে বের করে তাঁদের দেওয়া হয়।

আজ রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে নিখোঁজ তালেবুর রহমান ওরফে টুকুর (৫২) পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁর বড় ভাই জারমান আলী। তালেবুর রহমান ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীর বালুঘাটে মোল্লা ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠানে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন।

পরিবার জানায়, ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে বালুঘাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভেড়ামারা উপজেলার রায়টাঘাট এলাকায় তালেবুর নিখোঁজ হন। এর পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর তালেবুরের স্ত্রী নাসিমা খাতুন ভেড়ামারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জারমান আলী বলেন, প্রতিদিনের মতো সেদিনও তালেবুর বাড়ি থেকে বের হয়ে বালুঘাটে যান। সন্ধ্যায় পদ্মা নদী পার হয়ে ভেড়ামারার রায়টাঘাট এলাকায় আসেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি স্ত্রীকে ফোন করে জানান, সিএনজিতে উঠে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু রাত ১০টা পেরিয়ে গেলেও আর ফেরেননি। ফোন করলে একবার কল হয়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর।

জারমান আলী আরও বলেন, ‘জানামতে, তার সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত বা বালুঘাট নিয়েও কোনো বিরোধ ছিল না। কোনো হুমকিও ছিল না। নিখোঁজের সময় তার কাছে বালুঘাটের প্রায় তিন লাখ টাকা ছিল। পুলিশের কাছে যাওয়া হলে বলা হচ্ছে তদন্ত চলছে। কিন্তু ছয় দিন ধরে কী তদন্ত হচ্ছে, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা যেভাবেই হোক, ছোট ভাইয়ের খোঁজ চাই।’

এ বিষয়ে তদন্ত করছেন ভেড়ামারা থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিডির পর থেকে খুব গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। আমি এখনো ঘটনাস্থলে আছি। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তালেবুরের ব্যবহৃত ফোন নম্বরের সর্বশেষ লোকেশন শনাক্ত হয়েছে ভেড়ামারার ক্ষেমিড়দিয়াড় এলাকায়। জানা গেছে, তিনি বেশির ভাগ সময় ইমো ও হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলতেন।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেকটি সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরাও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ছায়া তদন্ত করছেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের ধারণা, বালুঘাটকেন্দ্রিক কোনো বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

৭৮ শতাংশের বেশি মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট: জরিপ

দেশের ৭৮ শতাংশের বেশি মানুষ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট বলে একটি জরিপে বলা হয়েছে। বেসরকারি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন কনসাল্টিং এই জরিপ পরিচালনা করেছে। এতে সহযোগিতা করেছে বিআরএআইএন ও ভয়েস ফর রিফর্ম নামের দুটি নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে এক গোলটেবিল আলোচনায় এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভেশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াৎ সারওয়ার। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়। জরিপে বিভিন্ন বয়সের ১০ হাজার ৪১৩ জন মানুষের মতামত নেওয়া হয়। দেশের ৬৪ জেলা থেকে তাঁদের বাছাই করে সরাসরি মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে ধারণা, নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে ধারণা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনের সময় ও ভোটার উপস্থিতি—এই ছয় বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের মতামত নেওয়া হয়।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরে সভায় বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সরকারের কার্যক্রমকে ‘ভালো’ বলেছেন ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ‘মোটামুটি’ বলেছেন ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ রোববার সকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ