সুপার ফোর শুরু হতেই জমে উঠেছে এশিয়া কাপ। শনিবার সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কার ১৬৮ রান তাড়া করেছে ১ বল বাকি থাকতে।

আজ এশিয়া কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ। এ ম্যাচের আগে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে পরামর্শ দিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার কামরান আকমল। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলার প্রশংসাও ঝরেছে তাঁর মুখে।

গতকাল বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছে দল হিসেবে খেলে। বল হাতে মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান বাংলাদেশকে এগিয়ে দিয়েছেন। মোস্তাফিজ নিয়েছেন ৩ উইকেট, মেহেদী ২টি। ব্যাট হাতে ফিফটি করেছেন সাইফ হাসান ও তাওহিদ হৃদয়। এ ছাড়া লিটন দাস, শামীম হোসেন, জাকের আলীদের ছোট ছোট ইনিংসও ম্যাচের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সব মিলিয়ে দারুণ এক জয় পাওয়া বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কামরান আকমল।

পাকিস্তান দল কি তাদের সর্বশেষ হার থেকে কিছু শিখেছে? তারা কি ভেবেছে যে বাংলাদেশ আজ (গতকাল) কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে?কামরান আকমল

ইউটিউব চ্যানেলে কামরান আকমল বলেছেন, ‘এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা দল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৯ রান তাড়া করা সহজ কাজ নয়। এটি বাংলাদেশ দলের জন্য একটি চমৎকার অর্জন। পুরো দল, অধিনায়ক ও ম্যানেজমেন্টকে তাদের দুর্দান্ত গেম প্ল্যান এবং চমৎকার ক্রিকেটের জন্য অভিনন্দন। এটি বাংলাদেশ দলের জন্য একটি স্মরণীয় জয় হয়ে থাকবে।  বাংলাদেশ দারুণ খেলেছে, দারুণ পরিকল্পনা ছিল।’

ওপেনিংয়ে নেমে সাইফের ৪৫ বলে ৬১ আর চারে নেমে হৃদয়ের ৩৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংস দুটির কথা উল্লেখ করে কামরান বলেন, ‘সাইফ অসাধারণ ব্যাটিং করেছে, আগ্রাসী, ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছে। তাওহিদ হৃদয়কে পেয়ে বাংলাদেশ ভালো একটা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পেয়েছে। বাংলাদেশ যেভাবে তাড়া করেছে, মনে হয়েছে কোনো চাপ নেই। ব্যাটিং দেখে মজা পেয়েছি।’

কাল ফিফটি করেছেন হৃদয়।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

থ্রিলারে ভরপুর ম্যাচে বার্সার নাটকীয় ড্র

চ্যাম্পিয়নস লিগে বুধবার (০৫ নভেম্বর) রাতে ইতিহাস গড়ার খুব কাছেই পৌঁছে গিয়েছিল ক্লাব ব্রুগে। কিন্তু যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে রোমিও ভারমান্টের গোলটি রেফারি অ্যান্থনি টেলরের সিদ্ধান্তে বাতিল হয়ে যায়। ফলে শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনার সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্রয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো বেলজিয়ান ক্লাবটিকে।

হান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা পুরো ম্যাচেই ছিল অস্থির ও ছন্দহীন। তিনবার পিছিয়ে পড়েও তিনবারই সমতায় ফিরেছে তারা। কিন্তু জয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি।

খেলার শুরুতেই দারুণ আক্রমণে এগিয়ে যায় ব্রুগে। ম্যাচের মাত্র ছয় মিনিটে ডানদিক দিয়ে ছুটে গিয়ে কার্লোস ফর্বস বল বাড়ান নিকোলা ত্রেসোলদিকে। যিনি ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠিয়ে দেন। ভিএআরের দীর্ঘ যাচাই শেষে গোলটি বৈধ ঘোষণা হলে স্টেডিয়াম যেন উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।

কিন্তু আনন্দ টেকেনি বেশিক্ষণ। মাত্র দুই মিনিট পর অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে ফারমিন লোপেজের পাসে ফেরান তোরেস গোল করে সমতায় ফেরান বার্সেলোনাকে। মৌসুমে এটি ছিল তার সপ্তম গোল।

তবে ১৭তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় স্বাগতিক দল। এবার গোলদাতা ত্রেসোলদির পাস থেকে ফর্বস নিজেই জালের দেখা পান। চমৎকার এক ওয়ান-টু পাসে বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় কুর্ল করে পাঠান জালের নিচের কোণে।

ব্রুগের গ্যালারি তখন গর্জে উঠেছে। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে আগের মাসে ৪ গোল খাওয়া দলটি যেন আজ নতুন রূপে ফিরে এসেছে। বিরতির আগে জুল কুন্দের হেড ক্রসবারে লেগে না ফিরলে বার্সেলোনাই হয়তো সমতায় ফিরত।

দ্বিতীয়ার্ধে হান্সি ফ্লিক শুরুতে কোনো পরিবর্তন আনেননি। কিন্তু ৫৮ মিনিটে দানি ওলমো ও রবার্ট লেভানদোভস্কিকে নামান। তিন মিনিট পরই ফল মেলে।
মাত্র ১৬ বছরের লামিন ইয়ামাল দুর্দান্ত ড্রিবলিংয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দেন, লোপেজের সঙ্গে ওয়ান-টু পাস খেলে চমৎকার ফিনিশিং। বার্সা সমতায়!

কিন্তু ব্রুগেও হাল ছাড়েনি। ৬৩ মিনিটে আবারও গোল ফর্বসের। এই তরুণ নাইজেরিয়ান তার ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে দ্বিতীয়বারের মতো স্কোরবোর্ডে নাম লেখান। হ্যান্স ভানাকেনের থ্রু পাসে দারুণ নিয়ন্ত্রণে বল নিয়ে চিপ করেন শেসনির ওপর দিয়ে।

এরপরই ম্যাচে আসে নাটকীয়তা। ফর্বস এক পর্যায়ে পেনাল্টি দাবি করেন। রেফারি প্রথমে সেটি দেনও। কিন্তু ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান। সেই রেহাইয়ের সুযোগ কাজে লাগায় বার্সেলোনা। ইয়ামালের ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ব্রুগের ফরোয়ার্ড ক্রিস্টোস টজোলিস নিজেই হেড করে বল জালে পাঠান ৭৭ মিনিটে। স্কোরলাইন ৩-৩!

তবু ম্যাচ এখানেই শেষ নয়। যোগ করা সময়ের প্রায় শেষ মুহূর্তে বদলি খেলোয়াড় ভারমান্ট এগিয়ে আসেন শেসনির ওপর চ্যালেঞ্জে, বল ছিটকে গিয়ে ঢোকে জালে। গ্যালারি তখন উল্লাসে ফেটে পড়ছে! কিন্তু ভিএআরের পর রেফারি টেলর ফাউল দেখিয়ে গোলটি বাতিল করেন। ফলে নাটকীয় ম্যাচটি শেষ হয় ৩-৩ গোলের সমতায়।

এই ম্যাচের আগেই বার্সেলোনার প্রস্তুতি ব্যাহত হয়। বুধবার সকালে ভক্তদের একটি বাসে আগুন ধরে যায়। সৌভাগ্যক্রমে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে মাঠের পারফরম্যান্সে তা যেন প্রতিফলিতই হয়; কোচ হান্সি ফ্লিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা।

শেষ পর্যন্ত জয় না পেলেও, এই ম্যাচটি নিঃসন্দেহে ছিল মৌসুমের অন্যতম সেরা থ্রিলার; গোল, ড্রামা আর ভিএআরের রোলারকোস্টার মুহূর্তে ভরপুর এক রোমাঞ্চকর রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • থ্রিলারে ভরপুর ম্যাচে বার্সার নাটকীয় ড্র