খুলনায় উচ্ছেদ ঠেকাতে বাসিন্দাদের বাধা, সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ৩৫
Published: 21st, September 2025 GMT
খুলনার বাস্তুহারা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার রাতে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং করে সকালের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আজ সকাল আটটার দিক থেকে ওই এলাকায় এক্সকাভেটর, বুলডোজার ঢুকতে থাকে। এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সেখানে পুলিশ সদস্যরা যান। এ সময় এলাকার মসজিদের মাইক থেকে বাসিন্দাদের রাস্তায় আসার আহ্বান জানানো হয়। লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করেন। পুলিশ একপর্যায়ে লাঠিপেটা শুরু করে। এ সময় অন্তত তিনজনের মাথায় আঘাত লাগে। স্থানীয় লোকজন এক্সকাভেটর চালককে অবরুদ্ধ করেন। পুলিশ তখন কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া শুরু করে। এলাকাবাসী পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তখন পুলিশ পিছু হটে। এ সময় এক্সকাভেটর ভাঙচুর করে জনতা।
এ ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন, ডেইলি স্টারের ফটো সাংবাদিক হাবিবুর রহমান ও আরটিভির ক্যামেরাপারসন গাজী মো.
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করলে তাঁরা উচ্ছেদ করতে দেবেন না। ওই কলোনির একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদা এই জায়গায় মারা গেছে। আমরা এখানে সবাই অসহায়। কেন আমাদের জন্য জায়গা থাকবে না? কোনো ব্যবস্থা না করে কেন উচ্ছেদ চলবে? আমরা তাহলে দাঁড়াব কোথায়?’
গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাস্তুহারা নামে পরিচিত ওই এলাকা ‘বয়রা আবাসিক এলাকা’। সেখানে প্রায় ৩০ একর জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে সি ব্লকে তাদের ৫৫টির মতো প্লট আছে। যেগুলো ১৯৮৭ সালে স্থায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৪২টি প্লট বেদখল হয়ে থাকায় ৩৮ বছর ধরে তারা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে পারেনি। বিভিন্ন সময় পাঁচ দফায় উচ্ছেদ করতে গেলেও রাজনৈতিক কারণে দখলদারদের সরানো যায়নি। বিভিন্ন সরকারের আমলে মন্ত্রী, মেয়র, প্রভাবশালী নেতারা উচ্ছেদপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করেছেন। আগাম ঘোষণা দিয়ে আজ রোববার ওই ৪২টি প্লটের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যায় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ লাঠিপেটা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা ইটপাটকেল ছোড়েন। আজ রোববার সকালে খুলনার বাস্তুহারা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কলোনিতে। ছবি: সাদ্দাম হোসেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পকলায় ‘এস এম সোলায়মান প্রণোদনা’
একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যকার, নির্দেশক, সংগঠক, অভিনেতা ও সংগীতজ্ঞ এস এম সোলায়মানের জন্ম ও মৃত্যুকে স্মরণ করে প্রতি বছরের মতো এবারো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তার নাট্যদল থিয়েটার আর্ট ইউনিট।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া ৫টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হবে মিথস্ক্রিয় আলোচনা এবং ‘এস এম সোলায়মান প্রণোদনা ২০২৫’।
আরো পড়ুন:
ট্র্যাব স্টার অ্যাওয়ার্ড পেলেন এরশাদ হাসান
রতন থিয়াম মারা গেছেন
আলোচনা পর্বে অংশ নেবেন নাট্যজন নায়লা আজাদ নূপুর, আজাদ আবুল কালাম, বাকার বকুল ও শামীমা শওকত লাভলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত দলপ্রধান সেলিম মাহবুব। পুরো আয়োজনের সমন্বয়ে থাকবেন দলটির প্রধান সমন্বয়ক কামরুজ্জামান মিল্লাত।
বাংলাদেশের নবনাট্য আন্দোলনের অন্যতম প্রতিভাধর নাট্যজন এস এম সোলায়মানের জীবন ছিল সংক্ষিপ্ত—মাত্র ৪৮ বছরের। তবে এই স্বল্পজীবনেই তিনি নাটকে সংগীত সংযোজন ও ব্যঙ্গরসাত্মক নাট্যরীতির মাধ্যমে তৈরি করেছিলেন নতুন ধারা। সমকালীন রাজনীতি, গোঁড়ামি ও স্বৈরতান্ত্রিকতাকে তিনি বিদ্রূপ করেছেন রাজনৈতিক স্যাটায়ারের শক্তিশালী ভাষায়।
প্রায় ৩০টির মতো নাটক রচনা ও রূপান্তর করেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন তারও বেশি। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘খ্যাপা পাগলার প্যাচাল, ‘ইঙ্গিত’, ‘গণি মিয়া একদিন’, ‘আহ্ কমরেড’, ‘ইলেকশন ক্যারিকেচার’, ‘এই দেশে এই বেশে’, ‘কোর্ট মার্শাল’, ‘বার্থ ফ্যান্টাসি’, ‘গোলাপজান’, ‘আমিনা সুন্দরী’ ইত্যাদি।
বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের নির্বাচিত সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে তিনি দুই দফায় দায়িত্ব পালন করেছেন। আর তার নির্দেশিত ‘আমিনা সুন্দরী’ নাটকটি আমেরিকার ব্রডওয়েতে প্রথম বাংলা নাটক হিসেবে মঞ্চায়নের গৌরব অর্জন করে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত