সিলেটের স্কলার্স হোম স্কুল ও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদের (১৯) মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর সহপাঠীরা। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিসহ ১০ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

আজ রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের শাহি ঈদগাহ এলাকায় স্কলার্স হোম স্কুল ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ১০ দফা দাবি জানিয়ে তাঁরা কর্মসূচি শেষ করেন। এদিকে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে গতকাল শনিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আজ স্কুলের সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার নোটিশ দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো আজমানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা; উপাধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন চৌধুরীর পদত্যাগ; শ্রেণিশিক্ষক শামীম হোসেন ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তাইবার অপসারণ; শিক্ষার্থীদের হেনস্তা না করা; মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধা না দেওয়া; কলেজের নোটিশ বোর্ডে বিবৃতি প্রকাশ করা; অভিভাবকের সঙ্গে অসদাচরণ বন্ধ ও শিক্ষার্থীবান্ধব নীতি গ্রহণ করা; পরীক্ষার রুটিন তৈরিতে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া; শিক্ষকদের ব্যক্তিগত আক্রোশ বন্ধ করা ও ক্লাস ক্যাপ্টেন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের সুবিদবাজার বনকলাপাড়ার বাসা থেকে আজমান আহমেদের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আজমান ওই এলাকার রাশেদ আহমেদের ছেলে। আজমান এইচএসসি প্রাক্‌-নির্বাচনী পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে অংশ নিতে পারেননি। ওই দুটি বিষয়সহ মোট পাঁচ বিষয়ে তিনি অকৃতকার্য হন। আজমানের মৃত্যুর খবরে ছড়িয়ে পড়লে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকে অভিযোগ তোলেন।

আজমানের মৃত্যুর ঘটনায় পরদিন সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় অপমৃত্যু মামলা করে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আজমানের চাচা আবদুল শুক্কুর বলেন, মৃত্যুর প্রায় এক সপ্তাহ আগে মাকে নিয়ে কলেজে গিয়েছিলেন আজমান। তখন শিক্ষকেরা বিভিন্নভাবে তাঁদের অপমান করেন। এরপরও স্বাভাবিক ছিলেন আজমান। যেদিন মারা যান, সেদিনও আজমান কলেজে গিয়েছিলেন। ওই দিন তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছিল, এরই জেরে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। তাঁরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান।

এ বিষয়ে কথা বলতে স্কলার্স হোম শাহি ঈদগাহ শাখার অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.

) মুনীর আহমেদ কাদেরীর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ম ত য র ঘটন য় আজম ন র আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

২৫ তারিখেই রাকসু নির্বাচন হবে: প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষক কর্মকর্তারা। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনায় বিচার চেয়ে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।

তবে নির্বাচনের মাত্র চারদিন আগে এমন কর্মসূচিতে সঠিক সময়ে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাবিতে কর্মবিরতি উপেক্ষা করে গাছতলায় ক্লাস নিলেন অধ্যাপক পিটার

রাজশাহীতে মাদ্রাসায় দফায় দফায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের তেমন প্রচারণা করতে দেখা যায়নি, হাতে গোনা কয়েকজন প্রার্থীকে লিফলেট বিতরণ করতে দেখা যায়।

শিক্ষক-কর্মকর্তাদের এই আন্দোলন রাকসুতে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “রাকসুতে আমাদের এই আন্দোলন কোনো প্রভাব ফেলবে না। রাকসুকে আমরা আমাদের কর্মসূচির বাহিরে রেখেছি। আমাদের দাবি হলো, ছাত্র নামধারী যে কিছুসংখ্যক সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। এমনকি তাকে বাসাতেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তি দিতে হবে।”

সার্বিক বিষয়ে রাকসু প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমান বলেন, “গতকালের (শনিবার) ঘটনায় আমাদের নির্বাচনি কোনো কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে বলে আমরা মনে করছি না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “রাকসু যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের একটা প্রত্যাশা, তাই আমরা সব পক্ষের সহোযোগিতা চাই। উপাচার্য স্যারও আমাদের সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ২৫ তারিখেই রাকসু নির্বাচন হবে, আমাদের নির্বাচনি সকল কার্যক্রম চলমান।”

তিনি আরো বলেন, “শিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন যে, গতকালকের ঘটনার ভিত্তিতেই তারা আজকের কর্মসূচি দিয়েছেন এবং সকল জরুরি সেবা তাদের এই আন্দোলনের আওতামুক্ত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ তারিখেই যেহেতু রাকসু নির্বাচন, তাই এটি বর্তমানে একটি জরুরি সেবার অবস্থানেই আছে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ