সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারির আদেশ
Published: 21st, September 2025 GMT
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুর রহমান এই আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মোকাররম হোসাইন আদেশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুদকের একাধিক মামলার আসামি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামান বিদেশে পলাতক রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত বৃহস্পতিবার আদালতে আবেদন করে দুদক। আজ শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশ ছেড়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী বিদেশে পালিয়ে যান বলে জানান মোকাররম হোসাইন।
চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল ২০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি সম্পত্তিসহ অন্যান্য দেশে স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গত ৫ মার্চ তাঁদের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন আদালত। এসব হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকার বেশি জমা আছে। একই সঙ্গে তাঁদের নামে থাকা ১০২ কোটি টাকার শেয়ার ও ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশও দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর আদালত সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও রুখমিলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে দুদক। ৪ সেপ্টেম্বর নগরের কোতোয়ালি থানায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সর্বশেষ ১৬ সেপ্টেম্বর ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ‘আত্মসাতের’ অভিযোগেও দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুদক। দেশে-বিদেশে সাইফুজ্জামানের নামে-বেনামে থাকা অবৈধ সম্পদের এখনো অনুসন্ধান করছে দুদক।
গত বছরের ৭ অক্টোবর সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী রুখমিলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারসহ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জকসু নির্বাচন চায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে করার দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা বলেন, বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহুল প্রতীক্ষিত জকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে একধরনের উত্তেজনা ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তফসিলে নির্বাচনের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অনেকাংশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতারা অভিযোগ করেন, জকসু নির্বাচনের যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, তা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। ডিসেম্বর বছরের শেষ মাস। এ সময় শিক্ষার্থীরা সারা বছরের একাডেমিক চাপ শেষে ছুটি কাটাতে বাড়ি যায়। অধিকাংশ শিক্ষার্থী এ সময় ক্যাম্পাসে থাকে না। নির্বাচনের জন্য এমন সময় নির্ধারণের একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে ভোটারদের অংশগ্রহণ সীমিত করা।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতারা আরও বলেন, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করতে পারে। এমন সময়ে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতে পারে না।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীভ বলেন, ‘একটি সুস্থ ও সর্বোচ্চ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে থাকবে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা সংকটে জর্জরিত এই ক্যাম্পাসের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রাখে।’