ভারতীয় সিনেমার বরেণ্য অভিনেত্রী রেনুকা সাহানে। বলিউড ও মারাঠি সিনেমায় অভিনয় করে অধিকে খ্যাতি কুড়ান ৫৯ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী। ৩৭ বছরের দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে নানারকম পরিবেশ-পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। অন্য অনেকের মতো রেনুকারও কাস্টিং কাউচের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে।

জুম টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেনুকা সাহানে বলেন, “অনেক বছর আগে একজন প্রযোজক আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি আমার বাড়িতে এসে সরাসরি প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিবাহিত।’ তবু তিনি চান আমি তার শাড়ির কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হই।” 

আরো পড়ুন:

ফের হাসপাতালে ধর্মেন্দ্র

বাবার নির্বাচনি প্রচারে নেহা শর্মা

অনৈতিক প্রস্তাবের বিষয়ে রেনুকা বলেন, “প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দেন, কেবল তাই নয়, তার সঙ্গে লিভ-টুগেদারের প্রস্তাবও দেন ওই প্রযোজক। এ কথা শুনে আমি আর মা বিস্ময়ে একে অপরের দিকে তাকাই। এরপর যা ঘটেছিল, তা সত্যি আরো গুরুত্বপূর্ণ। পরে আমি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে অস্বীকার করি।”

প্রযোজকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ফলে জটিলতা তৈরি হয়েছিল কি না? এ বিষয়ে রেনুকা বলেন, “আপনি যদি কারো প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, অনেক সময় তারা প্রতিশোধ নিতে চায়। এমনকি, অন্যদেরও বলে দেয় যেন আপনাকে কোনো প্রজেক্টে না নেয়া হয়। এটাই বিপজ্জনক! তবে আমার সঙ্গে এমনটা হয়নি। কিন্তু অনেকের সঙ্গে হয়েছে।”

ইন্ডাস্ট্রি প্রসঙ্গে রেনুকা বলেন, “অনেককে প্রজেক্ট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নানাভাবে হয়রানি করা হয়। কাজের পাওনা টাকা দেওয়া হয় না। এটা একটা ক্লাবের মতো, যারা একত্রিত হয়ে ভুক্তভোগীকেই আরো ভুক্তভোগী করে তোলে।”

ইন্ডাস্ট্রির পরিস্থিতি বোঝানোর জন্য অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডনের একটি ঘটনা স্মরণ করেন। রেনুকা বলেন, “রাভিনা তখন বড় হিরোইন, ইন্ডাস্ট্রি থেকেই এসেছে। কিন্তু রাভিনা আমাকে বলেছিল, ‘আউটডোর শুটিংয়ের সময় আমরা প্রতিদিন ঘর বদলাতাম, কারণ কেউ না জানে আমরা ঠিক কোন ঘরে আছি; যাতে তারা এসে কোনো সমস্যা তৈরি না করতে পারে।”

কয়েক বছর আগে মিটু আন্দোলনে সরব হয়েছিল বলিউড। এ হাওয়া ভারতের অন্যান্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও লেগেছিল। এ বিষয়ে রেনুকা বলেন, “মিটু আন্দোলনের পর ৫-৬ বছর কেটে গেছে। সেই অভিযুক্তরাই এখন ভালো ভালো কাজ করছে; বিষয়টা এমন যেন কিছুই ঘটেনি। আপনি যদি কাউকে অভিযুক্ত করেন; কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো পুলিশ কেস না থাকে, তাহলে মানুষ উল্টো আপনাকেই প্রশ্ন করবে।”

বয়সকে সংখ্যার ফ্রেমে বেঁধে, এখনো তরুণদের মতো অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন রেনুকা। চলতি বছরে তার অভিনীত একাধিক সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ওয়েব সিরিজ ‘দুপাহিয়া’। কমেডি-স্যাটায়ার ঘরানার সিনেমাটি গত ৭ মার্চ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজনে মুক্তি পায়।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ড স ট র র প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

আগাম জাতের আলু চাষে ব্যস্ত হাকিমপুরের কৃষক

দিনাজপুরের হাকিমপুরে আগাম জাতের আলু রোপণকে কেন্দ্র করে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। আমন ধান কাটার পর ফাঁকা জমিতে অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও স্বল্পমেয়াদী শাটাল জাতের আলুর বীজ রোপণের কাজ চলছে। 

মৌসুমের শুরুতে আলুর ভালো দামের প্রত্যাশা থাকলেও সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের বাড়তি ব্যয় তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

উপজেলার খট্টামাধবপাড়া, ইসবপুর, বোয়ালদাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠজুড়ে হাল চাষ, আগাছা পরিষ্কার, গোবর ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ, বেড তৈরি ও হিমাগার থেকে আনা বীজ রোপণে কৃষকদের ব্যাপক কর্মব্যস্ততা। শীতের আগমনী বার্তায় কৃষিজমিতে যেন উৎসবের আমেজ।

খট্টামাধবপাড়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমন ধান কাটার পরপরই আলুর জমি প্রস্তুত শুরু করেছি। হাল চাষ থেকে শুরু করে বীজ আনা, সব মিলিয়ে এখন সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। এক বিঘায় খরচ ৪০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আগাম আলু ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করা যায় কিন্তু বর্তমান বাজারদর কম। রপ্তানির সুযোগ থাকলে কৃষকেরা বেশি লাভবান হতো।”

ইসবপুরের কৃষক মোজাফফর হোসেন জানান, আগাম আলুর দামে লাভ বেশি থাকায় অ্যাস্টেরিক, কার্ডিনাল ও শাটাল জাতের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এসব আলুর উৎপাদন প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ পর্যন্ত হয়।

মাধবপাড়ার কৃষক আজিজার রহমান বলেন, “বীজ আলুর দাম কম থাকায় স্বস্তি মিললেও সার ও কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধি হিসাব বদলে দিয়েছে। বাজারদর না বাড়লে লোকসান অনিবার্য।”

এ মৌসুমে শ্রমিকরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমির বিভিন্ন ধাপে তাদের কাজ চলছে। স্থানীয় শ্রমিক রেজাউল করিম জানান, আগাম আলুর মৌসুমে কাজ বেশি থাকে, আয়ও ভালো হয়।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম বলেন, “আগাম আলু চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে। চলতি বছর উপজেলায় ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, এরইমধ্যে ৬০ হেক্টরে বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।”

ঢাকা/মোসলেম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ