গোপালগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে
Published: 10th, November 2025 GMT
দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মত কর্মবিরতি পালন করছেন গোপালগঞ্জের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সোমবার (১০ নভেম্বর) জেলার বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও কোনো শিক্ষক ক্লাসে যাননি। শিক্ষকরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চেয়ার নিয়ে বসে কর্মবিরতি পালন করছেন। অপরদিকে, অভিভাবকরা শিক্ষার্ধীদের স্কুলে এনে চরম বিপাকে পড়েছেন।
আরো পড়ুন:
প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, কর্মসূচি চলবে
পঞ্চগড়ে দুদকের গণশুনানিতে প্রাথমিকের ২ প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
কোটালীপাড়া উপজেলার ৪৯ নম্বর উত্তরপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৌসুমী আক্তার স্বর্ণা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৈষম্যের শিকার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন দিতে হবে। চাকরিতে যোগদানের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দিতে হবে এবং বিভাগীয় পদোন্নতিতে শতভাগ নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কোটালিপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, “বিশ্বের কোনো দেশেই শিক্ষকদের এত কম বেতন দেওয়া হয় না। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা দশম গ্রেড পাচ্ছেন, কিন্তু আমরা বঞ্চিত। এই বৈষম্য দূর করাই আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য। আমরা উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সফল করার জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বিরতিতে রয়েছি।”
কোটালিপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত শিক্ষকদের পাঠ বিরতির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ঢাকার আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততাস্বরূপ কোটালিপাড়ায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি রেখেছেন শিক্ষকরা। তবে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন।”
ঢাকা/বাদল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র শ ক ষকর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ, মানববন্ধন
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলামের সমর্থকেরা। তাঁরা শহীদুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানিয়ে এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার বিকেলে ভেড়ামারা লালন শাহ সেতু থেকে কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী পর্যন্ত কুষ্টিয়া–ঈশ্বরদী মহাসড়কের ১৮ কিলোমিটারে অন্তত ৫টি স্থানে মানববন্ধন হয়েছে। একপর্যায়ে শহীদুল ইসলামের সমর্থকেরা স্লোগান দিতে দিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন।
৩ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। কুষ্টিয়া-২ আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব রউফ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই দুই উপজেলায় শহীদুল ইসলামের হাজারো সমর্থক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
আজ বেলা তিনটার দিকে মিরপুর ও ভেড়ামারার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজারো নারী–পুরুষ ব্যানার ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কুষ্টিয়া–ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদুল ইসলাম ছাদখোলা একটি গাড়িতে মহাসড়ক দিয়ে কুষ্টিয়ার দিকে যান এবং হাত নেড়ে সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তাঁর গাড়ির পেছনে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি কুষ্টিয়া সদরের শেষ প্রান্ত ত্রিমোহনী এলাকা থেকে মিরপুর বহলবাড়িয়া হয়ে ভেড়ামারা দশমাইল, নয়মাইল হয়ে বারোমাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
এ সময় শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাই ধানের শীষের ভোট করব। আমরা ধানের শীষকে সংসদে নিয়ে যাব। কিন্তু এখানে যাঁকে সম্ভাব্য প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো নেতা–কর্মীর সম্পর্ক নেই। তিনি ভালো আইনজীবী হতে পারেন, কিন্তু দক্ষ রাজনৈতিক নেতা নন। তিনি জনবিচ্ছিন্ন একজন নেতা। তাঁকে দিয়ে এই আসনে ধানের শীষের বিজয় আনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
মিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফুজ্জামান শাহিন বলেন, তৃণমূলের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট—এই আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে শহীদুল ইসলামের কোনো বিকল্প নেই। দলীয় মনোনয়ন তাঁকেই দিতে হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই আসনে যাঁকে সম্ভাব্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি সারা জীবন ঢাকায় থাকেন। মিরপুর–ভেড়ামারায় তাঁকে বিএনপির কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এমনকি বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন–সংগ্রামে তাঁকে এলাকার কোথাও দেখা যায়নি। আমরা মাঠে থেকে আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি, হামলা–মামলার শিকার হয়েছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার টিপু সুলতান, পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রশিদ, ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।