বাবাকে নিয়ে ‘গুজবের’ প্রতিবাদ মির্জা ফখরুলের, সতর্ক করলেন কোরআনের আয়াত দিয়ে
Published: 10th, November 2025 GMT
নিজের প্রয়াত বাবা মির্জা রুহুল আমিনকে নিয়ে ‘গুজব ও মিথ্যাচার’ করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১০ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করেন মির্জা ফখরুল। বিএনপির মহাসচিবের স্ট্যাটাসটি রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানি হানাদারদের সহযোগীরা দেশের স্বাধীনতাকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে
জুলাই সনদের যে পাতায় সই করেছি, তা বাদ দিয়ে অন্য পাতা ঢোকানো হয়েছে: ফখরুল
মির্জা ফখরুল লিখেছেন, আমি গত দুদিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে আছি! কিছু কথা বলা খুব জরুরি, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ তরুণ প্রজন্মের জন্য! এসব কথা বলার কখনো প্রয়োজন মনে করিনি! জীবনের এই প্রান্তে দাঁড়িয়ে যখন দেখি সমাজে কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে মিথ্যার চাষ করছে, তখন বলা আরো জরুরি!
আমার আব্বা মরহুম মির্জা রুহুল আমিন ১৯৭১ এর মার্চের ২৭ তারিখে আমার নানাবাড়ি যান আমার দুই ছোট ভাই, দুই বোন এবং মাকে নিয়ে। তারপর এপ্রিলে চলে যান ভারতের ইসলামপুরে! রিফিউজি ক্যাম্পে ছিলেন যুদ্ধের প্রায় পুরোটা সময়! ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও স্বাধীন হয়! বাবা ঠাকুরগাঁও ফিরে আসেন তখনই! যখন ফিরে আসেন, দেখেন সব লুট হয়ে গেছে! আমার মরহুম মা তার গয়না বিক্রি করেন! আমি যোগ দেই অর্থনীতি শিক্ষকতায় ! প্রথম বেতন তুলে দেই আম্মার হাতে! আল্লাহর রহমতে জীবন চলে যায়! ১৯৭১ এর পরে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এভাবেই ধ্বংসস্তূপ থেকে তৈরি করেছে জীবন!
গত ৫৪ বছরে আমার বাবার নামে কোথাও কোনো মামলা হয়নি! ঠাকুরগাঁও জেলার যা কিছু আধুনিক এর শুরু আমার বাবার হাতে! এই জেলার প্রতিটি সৎ মানুষ জানে আমার বাবার কথা! আমার বাবা মারা যাবার পরে তার স্মৃতি রক্ষার জন্য নিয়ে যে ফাউন্ডেশন হয়, তার নেতৃত্বে ছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের সকল নামকরা রাজনীতিবিদ! ১৯৯৭ সালে তার মৃত্যুতে সরকারি শোক প্রকাশ করা হয়!
তিনি অভিযোগ করেন, আমার বাবা সম্বন্ধে মিথ্যাচার শুরু হয় গত আওয়ামী রেজিমে। দুঃখজনকভাবে গত এক বছর ধরে একটি গোষ্ঠী যারা নিজেদের জুলাইয়ের আন্দোলনের অংশীদার মনে করে, তারাও এই মিথ্যাচারে অংশ নিচ্ছে! মিথ্যা, গুজব ও অপবাদ সমাজ ধ্বংস করে।
আমি সারাজীবন এই দেশ আর জাতির জন্য দিয়েছি! গত বছর জুলাইয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা বাংলাদেশকে আশা দেখিয়েছে! আমি আশা করব, নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশে মিথ্যার চাষ আমাদের ছেলে-মেয়েরা করবে না! এরা সত্যের পথে থাকবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মেধা, বুদ্ধিমত্তা, সততা আর পলিসি দিয়ে! শঠতা (প্রতারণা) আর মিথ্যা দিয়ে পপুলিজম কেনা যায়, কিন্তু দেশ গড়া যায় না! আসুন আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা, দেশপ্রেম আর নতুন প্রজন্মের সাহস আর দেশপ্রেম দিয়ে তৈরি করি একটি মর্যাদাপূর্ণ সৎ মানবিক বাংলাদেশ!
সর্বশেষ পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। (আল-হুজুরাত)’
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র আম র ব ব ঠ ক রগ র জন য আম দ র ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
কয়েক মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে, আর্থিক চাপে কালীগঞ্জের গ্রাহকরা
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের সরিষারচালা, বরাইয়া উত্তর পাড়া ও দুবরিয়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৮০০ গ্রাহককে কয়েক মাসের বিদ্যুৎ বিল ও জরিমানা একসঙ্গে দিতে হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের গাফিলতির কারণে তাদেরকে আর্থিক চাপে পড়তে হচ্ছে।
দুবরিয়া গ্রামের অটোরিকশাচালক মো. মোজাফফ হোসেন (৫৮) বলেছেন, “কয়েক মাস ধরে আমাদের বাড়িতে কোনো বিল আসেনি। হঠাৎ ৩–৪ মাসের বিল একত্রে এসেছে। আমি নিয়মিত বিল পরিশোধ করি। বিদ্যুৎ অফিসের ভুলের জন্য আমাকে এত টাকা একসাথে দিতে হচ্ছে। এটা দিতে পারছি না।”
দুবরিয়া বাজারের রিকশা মেকার মুসাদ শেখ বলেন, “আমার বিল এসেছে ৫ হাজার টাকা। এত টাকা একসাথে পরিশোধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সংসার চালাব নাকি বিল পরিশোধ করব, এই দ্বিধায় পড়েছি।”
স্থানীয় মুদি দোকানদার শামসুল ভূঁইয়া বলেন, “প্রতি মাসে আমাদের বিল পাঠানো হোক, এতে সমস্যা নেই। কিন্তু, তিন-চার মাসের বিল একত্রে পাঠিয়ে জরিমানা নেওয়া পল্লী বিদ্যুতের দোষ। আমাদের কাছ থেকে কেন তা নেওয়া হবে?”
কলেজ শিক্ষার্থী কাউছার বলেন, “গ্রামে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। সব মানুষের পক্ষে একত্রে কয়েক মাসের বিল পরিশোধ করা সম্ভব নয়। মাসে মাসে বিল না নেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।”
বরাইয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান ফকির বলেন, “আমরা বারবার ডিজিএমকে জানিয়েছি। তারপরও কয়েক মাসের বিল একত্রে পাঠানো হয়েছে। মিটার রিডিং নেওয়ার জন্য কেউ আমাদের বাড়িতে আসেনি।”
একই গ্রামের গৃহিনী আছমা বলেন, “আমরা প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল দিই। চার মাস ধরে কোনো বিল আসেনি। এখন চার মাসের বিলসহ জরিমানা দিতে হচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ সমস্যা আমরা করি না, অথচ জরিমানা দিতে হচ্ছে।”
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের কালীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আক্তার হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, “গত মাসে একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। প্রাথমিক তদন্তে শেষ মাসের বিলের সত্যতা পেয়েছি। আগের মাসের বিষয়গুলো আমাদের জানা ছিল না। গ্রাহকরা বিল না পেলে সাথে সাথে অফিসে জানাতে হবে। চাইলে কালীগঞ্জ অফিসে এসে বিলগুলো ভেঙে ভেঙে নেওয়া সম্ভব। যে কর্মচারী এই কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাকে লিখিত অভিযোগসহ পল্লী বিদ্যুৎ গাজীপুর জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) কাছে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/রফিক সরকার/রফিক