পত্রিকা বিলি করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় একটি পা ভেঙে যায় আকরাম হোসেনের (৬০)। তারপরও থেমে থাকেনি পত্রিকা সরবরাহের কাজ। কিস্তিতে ভ্যান কিনে স্ত্রীকে নিয়ে পত্রিকা বিলি করেছেন তিনি।

আকরাম হোসেনের বাড়ি কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে। লেখাপড়া করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। অভাবের কারণে আর লেখাপড়া করা হয়নি। কখনো মাঠে কাজ করে, কখনো মাছ ধরে সংসার চালিয়েছেন। অবশেষে শুরু করেন পত্রিকা সরবরাহের ব্যবসা। এই কাজ করে চলেছেন প্রায় ৩০ বছর।

আকরাম হোসেনের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সংসার করছেন। ছোট মেয়ে বিবাহবিচ্ছেদের কারণে এক সন্তানসহ তাঁদের সঙ্গেই থাকেন। স্ত্রী ও মাকে নিয়ে এখন পাঁচজনের সংসার আকরামের। তাঁর উপার্জনেই সংসার চলে। সকাল আটটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিদিন ৩০ কিলোমিটার মোটরচালিত ভ্যানে করে পত্রিকা পৌঁছে দেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। রোদ-বৃষ্টিতে কখনো থেমে থাকে না পত্রিকা বিলির কাজ।

২০১৮ সালে একদিন সাইকেলে করে পত্রিকা বিলি করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। বাঁ পা ভেঙে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, ব্যান্ডেজ অবস্থায় শুয়ে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। কয়েক দিন শুয়ে থাকার পর আর ভালো লাগেনি। সিদ্ধান্ত নেন, ভ্যানে করে পত্রিকার বিলি করবেন। কিস্তিতে একটি ভ্যান কিনে স্ত্রী শামসুন্নাহারকে সঙ্গে নিয়ে পত্রিকা বিলি করতে থাকেন। তবু থেমে থাকেনি পত্রিকা বিলির কাজ। সেই থেকে মোটরচালিত ভ্যান চালিয়েই তিনি পত্রিকা বিলি করে চলেছেন।

জাহানপুর বাজারের সেলুনমালিক মশিউর রহমান বলেন, তিনি ৩০ বছর ধরে পত্রিকা পড়েন। আকরাম হোসেন নিয়মিত তাঁকে পত্রিকা দেন। তিনি ভালো মানুষ।

সাতবাড়িয়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন, যত কষ্টই হোক না কেন, আকরাম হোসেন তাঁদের কাছে পত্রিকা পৌঁছে দেন। তিনি খুব আনন্দপ্রিয়। সবার সঙ্গে তাঁর ভালো ব্যবহারে প্রিয় মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

আকরাম হোসেন জানান, ব্যবসার শুরু থেকে ৩০০ কপি পত্রিকা বিক্রি করতেন। এখন বিক্রি করেন ১০০ কপি। তবে বর্তমানে পত্রিকার চাহিদা কমেছে। মানুষ মুঠোফোনে পত্রিকা পড়েন, সে কারণে ব্যবসায় মন্দা। এই আয়ে সংসার ঠিকমতো চলে না তাঁর। তারপরও পত্রিকা বিলির কাজ ছেড়ে দিতে চান না। এই কাজের মায়ায় পড়েছেন তিনি।

কেশবপুর পত্রিকা হকার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বলেন, আকরাম হোসেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। তিনি প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও নিরলসভাবে পত্রিকা সরবরাহ করে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আকর ম হ স ন ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যালট ছাপাতে কেপিএম থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন কাগজ কিনছে ইসি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ব্যালট পেপার ছাপাতে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত বিসিআইসির কাগজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চন্দ্রঘোনা কর্ণফুলি পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম) থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন কাগজ কিনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এসব কাগজের দাম প্রায় ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে ১৭৮ মেট্রিক টন কাগজ সরবরাহ করা হয়েছে। বাকি ৭৩৬ মেট্রিক টন কাগজ ধাপে ধাপে উৎপাদন করে ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে সরবরাহ করা হবে। 

সোমবার (১০ নভেম্বর) কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

মনোনয়ন বাতিল না করলে স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন বিএনপির টিপু

শেরপুরে বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিতে বিক্ষোভ

তিনি জানিয়েছেন, চলতি ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে নির্বাচন কমিশন থেকে রঙিন (সবুজ, গোলাপি, এজুরলেইড) ও বাদামী সালফেট কাগজ মিলে মোট ৯১৪.০০৯ মে. টন কাগজের অর্ডার পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশন ছাড়াও বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস (বিএসও), বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়, কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮৯৪ মেট্রিক টন কাগজ সরবরাহের আদেশ পাওয়া গেছে। এসবের বাজার মূল্য প্রায় ৩৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। গত শনিবার পর্যন্ত কাগজ বিক্রি হয়েছে ৯২৩ মেট্রিক টন।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বসুন্ধরার‌‌‌‌ ‘ই’ ব্লকে হেরিটেজ সুইটসের তৃতীয় শাখার যাত্রা
  • জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৮ প্রকল্প অনুমোদন
  • ব্যালট ছাপাতে কেপিএম থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন কাগজ কিনছে ইসি
  • ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা ধসিয়ে দিয়েছে রাশিয়া, অন্ধকারে বিভিন্ন অঞ্চল
  • ইউক্রেনের আবাসিক ও জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা, নিহত ১১
  • ‘জেনারেল উইন্টার’ ঘিরে পুতিনের নতুন কৌশল
  • রাশিয়ার কাছ থেকে তেল-গ্যাস কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের ছাড়পত্র পেল হাঙ্গেরি