রাজধানীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার: প্রেস উইং
Published: 10th, November 2025 GMT
রাজধানীর সব গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। আজ সোমবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানে হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তধর্মীয় ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। ধর্মীয় সহাবস্থানে কোনোরূপ বিঘ্ন ঘটানোর প্রচেষ্টা হলে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হবে।
এর পাশাপাশি রাজধানীতে সম্প্রতি ককটেল হামলার ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী এক যুবককে গ্রেপ্তার করার কথাও জানানো হয়েছে প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তাঁকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক তদন্তে তাঁকে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি প্রেস উইংয়ের।
সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে কাকরাইলের সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল ও সেন্ট যোসেফ স্কুল প্রাঙ্গণে ককটেল বিস্ফোরণসহ একাধিক ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, ডিএমপি এই জঘন্য ও কাপুরুষোচিত সহিংসতায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে সমন্বয় করে শহরজুড়ে অভিযান জোরদার করেছে।
উল্লেখ্য, আজ রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারের সামনে, ৯/এ সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে, মিরপুরে ভোর পৌনে চারটার দিকে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এবং সকাল সাতটার দিকে মোহাম্মদপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনার সামনের সড়কে ও সীমানার ভেতরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়।
এর আগে ৭ নভেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর রমনা এলাকায় অবস্থিত সেন্ট মেরি’স ক্যাথেড্রাল চার্চ লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেদিন গভীর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সেন্ট যোসেফ উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ককট ল ব স ফ র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
মামুন হত্যার পেছনে কি অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ, শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নাম আসছে যে কারণে
২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা। তখন ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সিটি পেট্রলপাম্প ও বিজি প্রেসের মাঝামাঝি এলাকার মূল সড়কে ছিল তীব্র যানজট। ওই যানজটে তখন আটকে ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈফ মামুন। প্রকাশ্যে ১০–১২ জনের একটি দল মামুনের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে মামুনের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে মামুন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন তাঁকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। মামুন তখন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে তাঁকে লক্ষ্য করে ছোড়া গুলিতে ভুবন চন্দ্র শীল নামে একজন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।
এ ঘটনার প্রায় দুই বছর দুই মাস পর আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে আবারও ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। এবার আর তিনি প্রাণে বাঁচতে পারেননি। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আজকের ঘটনাটি ঘটেছে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সামনে। সেখানে দুজন মুখোশধারী ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। মামুন ২৪ বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ২০২৩ সালে ওই হামলার শিকার হয়েছিলেন।
প্রায় দুই যুগ কারাবাস শেষে মুক্ত হওয়ার পর মামুনকে হত্যায় কারা, কেন এত মরিয়া হয়ে উঠলেন, সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমবার হামলার ঘটনার সঙ্গে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের নাম এসেছিল। যদিও তখন ইমন কারাগারে ছিলেন। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরপরই ইমন কারাগার থেকে মুক্ত হন। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।
২০২৩ সালে মামুনের ওপর হামলার ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সে সময় কারাগারে থাকলেও ওই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন। একসময় ইমন ও মামুন ছিলেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে ঢাকার হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকার অপরাধজগতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন ইমন ও মামুন। তাঁদের গড়ে তোলা বাহিনীর নাম ছিল ‘ইমন-মামুন’ বাহিনী। ওই সময় এই বাহিনী রাজধানীর এসব এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি করেছিল। তাঁরা দুজনই চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি। ২০২৩ সালে কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন মামুন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কারাগার থেকেই মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ইমন।
আরও পড়ুনপ্রকাশ্যে এসেই তৎপর সুব্রত বাইন, ‘পিচ্চি হেলাল’, ‘কিলার আব্বাস’সহ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ১১ অক্টোবর ২০২৪সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, তারিক সাইফ মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন (বাঁয়ে)। দুই ব্যক্তি খুব কাছে থেকে তাঁকে গুলি করছেন (ডানে)