শহীদুল ইসলামকে বিএনপির প্রার্থী করার দাবিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ, মানববন্ধন
Published: 10th, November 2025 GMT
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলামের সমর্থকেরা। তাঁরা শহীদুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানিয়ে এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
এর ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার বিকেলে ভেড়ামারা লালন শাহ সেতু থেকে কুষ্টিয়া ত্রিমোহনী পর্যন্ত কুষ্টিয়া–ঈশ্বরদী মহাসড়কের ১৮ কিলোমিটারে অন্তত ৫টি স্থানে মানববন্ধন হয়েছে। একপর্যায়ে শহীদুল ইসলামের সমর্থকেরা স্লোগান দিতে দিতে মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন।
৩ নভেম্বর জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। কুষ্টিয়া-২ আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব রউফ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এরপর থেকেই দুই উপজেলায় শহীদুল ইসলামের হাজারো সমর্থক আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
আজ বেলা তিনটার দিকে মিরপুর ও ভেড়ামারার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজারো নারী–পুরুষ ব্যানার ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে কুষ্টিয়া–ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন। তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন। বিকেল পাঁচটার দিকে শহীদুল ইসলাম ছাদখোলা একটি গাড়িতে মহাসড়ক দিয়ে কুষ্টিয়ার দিকে যান এবং হাত নেড়ে সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তাঁর গাড়ির পেছনে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচি কুষ্টিয়া সদরের শেষ প্রান্ত ত্রিমোহনী এলাকা থেকে মিরপুর বহলবাড়িয়া হয়ে ভেড়ামারা দশমাইল, নয়মাইল হয়ে বারোমাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
এ সময় শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবাই ধানের শীষের ভোট করব। আমরা ধানের শীষকে সংসদে নিয়ে যাব। কিন্তু এখানে যাঁকে সম্ভাব্য প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো নেতা–কর্মীর সম্পর্ক নেই। তিনি ভালো আইনজীবী হতে পারেন, কিন্তু দক্ষ রাজনৈতিক নেতা নন। তিনি জনবিচ্ছিন্ন একজন নেতা। তাঁকে দিয়ে এই আসনে ধানের শীষের বিজয় আনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
মিরপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আশরাফুজ্জামান শাহিন বলেন, তৃণমূলের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট—এই আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে শহীদুল ইসলামের কোনো বিকল্প নেই। দলীয় মনোনয়ন তাঁকেই দিতে হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই আসনে যাঁকে সম্ভাব্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি সারা জীবন ঢাকায় থাকেন। মিরপুর–ভেড়ামারায় তাঁকে বিএনপির কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এমনকি বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন–সংগ্রামে তাঁকে এলাকার কোথাও দেখা যায়নি। আমরা মাঠে থেকে আন্দোলন করেছি, জেল খেটেছি, হামলা–মামলার শিকার হয়েছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মিরপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার টিপু সুলতান, পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুর রশিদ, ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নৃশংসভাবে বিড়াল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় মাছ খাওয়ায় একটি বিড়ালকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং পথপ্রাণী, পোষা প্রাণী ও বন্য প্রাণীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে বগুড়ার সাতমাথা মোড়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ—তীর’। এ সময় সংগঠনটির সদস্যরা প্ল্যাকার্ড, পোস্টার হাতে প্রাণী সুরক্ষার দাবি জানান। এ ছাড়া প্রাণী আইন লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে প্রচারপত্র বিলি করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আদমদীঘি উপজেলার দত্তবাড়িয়া গুচ্ছগ্রামে বিড়াল হত্যার অভিযোগ ওঠে বুলবুলি বেগম (২৬) নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। পরদিন বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এমরান হোসেন। পরে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পায়। শুক্রবার বুলবুলি বেগমকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন তীর–এর সভাপতি আশা মনি, সহসভাপতি হৈমন্তী সরকার, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
পুলিশ সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে বুলবুলির বাড়িতে একটি বিড়াল ঢোকে। একপর্যায়ে প্রাণীটি রান্না করা মাছ খেয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার রাতে বিড়ালটি দ্বিতীয় দফায় বুলবুলির ঘরে ঢোকে। এ সময় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে ধরে বঁটি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন। এভাবে হত্যার পর একটি ধানখেতে ফেলে দেন। বিষয়টি জানার পর প্রতিবেশী ইসাহাক আলীর স্ত্রী শামছুন্নাহার বুধবার সকালে বিড়ালটির ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নেন। মৃত বিড়ালটি বরফ দিয়ে সংরক্ষণের পর তিনি পুলিশে খবর দেন। বিষয়টি জানাজানির পর বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিড়াল হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত বুলবুলি বেগম উত্তেজিত হয়ে বঁটি হাতে স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে তেড়ে আসেন এবং কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ ফোন পেয়ে পুলিশ ওই নারীকে আটক করে ১৫১ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বিড়াল হত্যার ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।