জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অস্বীকারকারীদের ‘নতুন করে পরাজিত করার’ আহ্বান লুলার
Published: 11th, November 2025 GMT
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বকে অনুরোধ জানিয়ে ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের বেলেম শহরে স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘের জলবায়ু–সংক্রান্ত ৩০তম সম্মেলন বা কপ–৩০ শুরু হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ সম্মেলনে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
উদ্বোধনী ভাষণে আয়োজক দেশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, এখন সময় এসেছে অস্বীকারকারীদের নতুন করে পরাজিত করার।
প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা স্পষ্ট ভাষায় ‘ভয় ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আক্রমণকারীদের’ তীব্র নিন্দা জানান।
তবে এবারের সম্মেলনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী ও দ্বিতীয় দূষণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের না থাকাটা বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।
তবে না থেকেও যেন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি রয়ে গেছে। সম্মেলন মঞ্চে আজ মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকতে পারেন। তাঁরা নিজস্ব জলবায়ু ভাবনা ও বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার সঙ্গে নিজেদের সংহতি তুলে ধরবেন।
জাতিসংঘের জলবায়ুপ্রধান সাইমন স্টেইল বলেন, ‘কোনো ভুল করবেন না। মানবতা এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমাদের কিছু শক্ত প্রতিপক্ষ রয়েছে। তবে আমাদের পক্ষেও বেশ কিছু হেভিওয়েট রয়েছেন।’
এমন এক সময় এ সম্মেলনের পর্দা উঠল, যখন ক্যারিবীয় অঞ্চল ও এশিয়ায় প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় এবং যুদ্ধ, বাণিজ্য বিরোধ থেকে শুরু করে ক্রমবর্ধমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা জলবায়ু পরিবর্তনের ভাবনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে দিচ্ছে।
সতর্কবার্তায় জাতিসংঘের শীর্ষ এ জলবায়ুবিজ্ঞানী বলেন, প্যারিস চুক্তিতে নির্ধারিত নিরাপদ উষ্ণতা সীমা—১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস—অস্থায়ীভাবে অতিক্রম করা এখন অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ৪২ হাজারের বেশি প্রতিনিধি এবারের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। তবে এ সংখ্যা এর আগের সম্মেলনগুলোর তুলনায় কম। এর বড় একটি কারণ, সম্মেলনস্থলের আশপাশে আকাশছোঁয়া থাকার খরচ। তাই অনেকেই সম্মেলন এড়িয়ে গেছেন।
আরও পড়ুনপুরোনো ব্যর্থতা শুধরে নিতে শুরু হচ্ছে জলবায়ু সম্মেলন০৯ নভেম্বর ২০২৫আমাজন অঞ্চলে সম্মেলন আয়োজনের পক্ষে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাজনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছিলেন। কয়লা, তেল আর গ্যাস পোড়ানোর মধ্য দিয়ে ক্রমেই এ অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য বদলে ফেলা হচ্ছে।
আরও পড়ুনজলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে ব্রাজিল যাচ্ছে সাতক্ষীরার নওশীন ও নুর২১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র জলব য়
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মেজর ইকবাল গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন চৌধুরী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি মেজর ইকবাল নামে পরিচিত। গতকাল সোমবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার ইকবাল ওই গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৪০টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু মামলায় তিনি জেলও খেটেছেন। বর্তমানে মামলা বিচারাধীন রয়েছে ১১টি। যার মধ্যে ছয়টি হত্যা মামলা। সর্বশেষ ২০১০ সালে সাত বছর জেল খেটে তিনি জামিনে বের হন। এরপর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ছিলেন। কয়েক বছর আগেই তিনি এলাকায় ফিরেছেন।
পুলিশ জানায়, আগে আওয়ামী লীগের রাউজান আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে কাজ করতেন ইকবাল। বর্তমানে রাউজানে বিএনপির এক নেতার হয়ে এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবর ও রাউজান কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) মজিবুর রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসব খুনের ঘটনার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে মেজর ইকবালের নাম। ১৯৯৩ সালে পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেনকে ব্রাশফায়ারে হত্যার প্রধান আসামিও করা হয় মেজর ইকবালকে। রাউজানে দুই ভাই টিটু ও মিঠুকে একসঙ্গে হত্যা, মুক্তিযোদ্ধা নিহার কান্তি বিশ্বাসকে হত্যা, ছাত্রলীগের জেলা নেতা ইকবাল ও জামিল এবং ফটিকছড়ির শ্যামল ও আমান নামের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন ইকবাল।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, অস্ত্রসহ অবস্থান করছেন—এমন খবরে ইকবালকে ধরতে অভিযান চালানো হয়। তবে তাঁর কাছ থেকে কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। অস্ত্র থাকার কথাও তিনি স্বীকার করেননি। তাঁকে রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মেজর ইকবাল নামে পরিচিত এই সন্ত্রাসীকে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।