সংসদ নির্বাচনে ড্রোন ও পোস্টার নিষিদ্ধ, আচরণবিধি জারি
Published: 11th, November 2025 GMT
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কঠোর আচরণবিধি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী ভোটের প্রচারে পোস্টার ও ড্রোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ইসির জারিকৃত আচরণবিধিতে বলা হয়েছে- একজন প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সর্বোচ্চ ২০টি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন, যার দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৯ ফুট। আলোকসজ্জা ও পলিথিন বা পিভিসি জাতীয় উপকরণ ব্যবহারের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রচারে পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কঠোর শাস্তির বিধান
আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। কোনো দল আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাদেরও একই অঙ্কের অর্থদণ্ড দেওয়া হতে পারে। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে তদন্তসাপেক্ষে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও ইসির হাতে থাকবে।
সামাজিক মাধ্যমে কঠোর নজরদারি
প্রার্থী বা তাদের এজেন্টরা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে পারবেন, তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট, ইমেইল ও আইডি আগে থেকেই রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট, ঘৃণাত্মক বক্তব্য বা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার—সবই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারে ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার, নারী বা সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার এবং চরিত্র হননের প্রচেষ্টা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
বিদেশে প্রচার নিষিদ্ধ
আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী বিদেশে জনসভা, পথসভা বা প্রচারণা চালাতে পারবে না। প্রচারের সময় ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা অনুরূপ যন্ত্র ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একমঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা
প্রথমবারের মতো নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম আনা হয়েছে। প্রতিটি আসনে সব প্রার্থীকে এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে, যা আয়োজন করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার। প্রার্থী ও দল উভয়কেই আচরণবিধি মানার অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।
পোস্টাল ভোটে প্রযুক্তির ব্যবহার
এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আইটি-সমর্থিত পোস্টাল ভোটিং চালু হচ্ছে। প্রবাসী ভোটারসহ তিন শ্রেণির ভোটার ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন।
আইন সংস্কারের শেষ ধাপ
ইসি জানায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, ভোটার তালিকা আইন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন, সাংবাদিক নীতিমালা ও দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষণ নীতিমালাসবই হালনাগাদ করা হয়েছে। নতুন আচরণবিধি গেজেট আকারে প্রকাশের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী আইন সংস্কারের চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন হলো।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, “পরিবেশবান্ধব প্রচারণা, স্বচ্ছ ব্যয়ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত ও আধুনিক নির্বাচনই এবারের মূল লক্ষ্য।”
ঢাকা/এএএম/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আচরণব ধ ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
ল্যাপটপের পর্দা পরিষ্কার করতে যা মানতে হবে
সময় গড়ালে ল্যাপটপের পর্দায় ধুলা, আঙুলের ছাপ ও দাগ জমে যায়। এতে পর্দার স্বচ্ছতা নষ্ট হয়। আবার দীর্ঘ সময় কাজ করলে চোখেও বাড়ে ক্লান্তি। অনেকেই পর্দা পরিষ্কার করতে গিয়ে এমন উপকরণ ব্যবহার করেন, যা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ল্যাপটপের পর্দা সাধারণ কাচের মতো নয়। এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল উপাদানে তৈরি, যার ওপর থাকে সুরক্ষার জন্য বিশেষ আবরণ। ভুল উপকরণ বা অতিরিক্ত তরল ব্যবহার করলে সেই আবরণ উঠে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে দাগ। আবার স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তাই পর্দা পরিষ্কারের আগে জানা জরুরি, কোন উপকরণ ব্যবহার করা নিরাপদ এবং কোনগুলো একেবারেই নয়।
পরিষ্কার করার আগে যা করবেনপরিষ্কার করার আগে ল্যাপটপটি অবশ্যই বন্ধ করে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে। যদি যন্ত্রটি ব্যবহার করার ফলে গরম থাকে তবে আগে ঠান্ডা হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। এরপর মাইক্রোফাইবার কাপড় ও বিশুদ্ধ (ডিস্টিলড) পানি প্রস্তুত রাখতে হবে। আলো যথেষ্ট আছে কি না, সেটি দেখে নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। যথেষ্ট আলো থাকলে পর্দার প্রতিটি অংশ স্পষ্ট দেখা যায় এবং পরিষ্কার করতে সুবিধা হয়।
যেসব উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারেল্যাপটপের পর্দা পরিষ্কারের সবচেয়ে নিরাপদ উপকরণ হলো মাইক্রোফাইবার কাপড়। এটি দিয়ে ধুলা ও হালকা দাগ সহজে মুছে ফেলা যায়। হালকা চিটচিটে দাগ বা আঙুলের ছাপ তুলতে কাপড় সামান্য ডিস্টিলড পানিতে ভিজিয়ে ব্যবহার করা যায়, তবে কাপড় অতিরিক্ত ভেজানো ঠিক নয়। তেলতেলে দাগ বা স্থায়ী দাগ তুলতে ডিস্টিলড পানি ও সাদা ভিনেগারের অর্ধেক অর্ধেক মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ মিশ্রণ সরাসরি পর্দায় না লাগিয়ে কাপড়ে দিয়ে ব্যবহার করতে হবে। দ্রুত পরিষ্কারের জন্য বাজারে স্ক্রিন নিরাপদ ওয়াইপসও পাওয়া যায়। সেগুলো কেবল ইলেকট্রনিক পর্দার জন্য তৈরি। আর পর্দার কোনা বা ফাঁকা জায়গার ধুলা পরিষ্কার করতে কমপ্রেসড বাতাস ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে সেটি ক্যান সোজা রেখে অল্প ফুঁ দিয়ে ব্যবহার করতে হবে।
যেসব উপকরণ ব্যবহার করা ঠিক নয়কিছু উপকরণ ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয়। সেগুলোর মধ্যে আছে টিস্যু, পুরোনো কাপড় বা পেপার টাওয়েল। এগুলো পর্দায় সূক্ষ্ম আঁচড় ফেলে দিতে পারে।
অ্যালকোহল বা অ্যামোনিয়াযুক্ত কোনো ক্লিনার ব্যবহার করাও বিপজ্জনক, কারণ এতে সুরক্ষা আবরণ নষ্ট হয়ে যায়। জানালা বা গৃহস্থালি পরিষ্কারক দ্রবণে থাকা রাসায়নিক উপাদান পর্দার ক্ষতি করতে পারে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক ওয়াইপস ব্যবহার করলেও পর্দায় অবশিষ্ট পদার্থ থেকে যায়, যা ফিনিশ নষ্ট করে দেয়। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হলো, অতিরিক্ত তরল বা সরাসরি স্প্রে ব্যবহার করা। এতে তরল ভেতরে ঢুকে সার্কিট বা ডিসপ্লের স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।
যেভাবে পর্দা পরিষ্কার করবেনল্যাপটপের পর্দা পরিষ্কার করার সময় ধীরে বৃত্তাকারে মুছতে হবে এবং বাড়তি চাপ দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে সামান্য ভিনেগার পানির মিশ্রণ ব্যবহার করে দাগ তুলতে পারেন। পরিষ্কার করার পর পর্দা সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে তবেই ল্যাপটপ চালু করা উচিত।
ভিন্ন ধরনের পর্দার যত্নসব ল্যাপটপের পর্দা এক রকম নয়। তাই পর্দার ধরন অনুযায়ী পরিষ্কারের নিয়মও ভিন্ন। ম্যাট পর্দা শুকনা মাইক্রোফাইবার কাপড়ে পরিষ্কার করতে হবে, কোনো দ্রবণ ব্যবহার না করাই ভালো। গ্লসি পর্দায় আঙুলের ছাপ তুলতে হালকা ভেজা কাপড় ব্যবহার করা যায়। টাচস্ক্রিন নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি; হালকা চাপ দিয়ে ডিস্টিলড পানি ব্যবহার করতে হবে। আর ওএলইডি বা এলইডি ডিসপ্লের ক্ষেত্রে শুধু স্ক্রিন নিরাপদ ওয়াইপস ব্যবহার করা উচিত এবং অ্যালকোহলযুক্ত কোনো দ্রবণ ব্যবহার না করাই ভালো।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া