রাফায়েল নাদালের ২২ গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা টপকে আরও আগেই পুরুষ এককের শীর্ষে নিজের নামটি লিখেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। তবে আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি, ২০২৫) অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে কোর্টে নেমেই ২৪ বারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী এই তারকা তার রেকর্ডের মুকুটে যুক্ত করলেন আরেকটি পালক। এই ৩৭ বছর বয়সী সার্বিয়ান তারকা গ্র্যান্ডস্লাম আসরে ক্যারিয়ারের ৪৩০তম একক ম্যাচটি খেলতে নেমে পেছনে ফেলেছেন টেনিসের আরেক আবেগ রজার ফেদেরারকে। রড লেভার অ্যারেনায় এই ম্যাচে পর্তুগালের জাইমে ফারিয়াকে ৬-১, ৬-৭ (৪/৭), ৬-৩, ৬-২ গেমে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন ‘জোকার’ নামে খ্যাত এই তারকা। তবে ম্যাচের মাঝেই ফারিয়াকে প্রশংসায় ভাসিয়ে আলোচনায় জোকোভিচ।

ম্যাচের সংখ্যায় গ্র্যান্ডস্লামে এতদিন সবার উপরে ছিলেন ফেদেরার। এই সুইস মহাতারকার ম্যাচ সংখ্যা ছিল ৪২৯ টি। এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলার ম্যাচে প্রথম সেটটি সহজে জিতেন জোকোভিচ। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে দ্বিতীয় সেটটা নিজের করে নেন বাছাইপর্বে পেরিয়ে আসা ফারিয়া। পরের দুই সেটে আর জোকোভিচের কাছে পাত্তা পাননি পর্তুগিজ তরুণ তুর্কি।

এই নিয়ে ১৭বারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডের দেখে পেলেন তিনি। ফেদেরারের নজির ভেঙে নিজেকে ভাগ্যবান দাবি করেছেন জোকোভিচ, “আমি খেলাটাকে খুব ভালবাসি। এই প্রতিযোগিতাটা ভালবাসি। তাই প্রতিবার নিজের সেরাটা দিই। জিতি বা হারি, সব সময়েই নিজের হৃদয় উজাড় করে খেলি।’’

আরো পড়ুন:

১১.

৫৬ শতাংশ বাড়ল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রাইজমানি

রাফায়েল নাদাল: টেনিসের রাজ্যে ‘স্প্যানিশ সম্রাট’

গ্র্যান্ডস্লামের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে জোকোভিচ আরও বলেন, “গ্র্যান্ডস্লামই আমাদের খেলার মূল স্তম্ভ। ১৩০ বছর ধরে এই খেলাটা রয়েছে। আজ গ্র্যান্ডস্লামে একটা রেকর্ড গড়তে পেরে তাই আমি ভাগ্যবান।”

এই ম্যাচে উঠতি তারকা ফারিয়ার খেলার মুগ্ধতায় আকৃষ্ট হয়েছেন জোকোভিচও। এই কথাটা নাকি ম্যাচের মাঝেই পর্তুগিজ তারকাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন জোকার! ম্যাচ শেষে এই ব্যাপারে জোকোভিচ জানান, “সে অসাধারণ খেলছিল। এমন কারও বিপক্ষে খেলা সহজ নয়, যার কোনো কিছু হারানোর নেই। সে খুবই তরুণ। আমি খেলার মাঝেই নেটে তাকে বলেছিলাম- তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।”

এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনালে জোকোভিচের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক উঠতি তারকা কার্লোস আলকারাজ। এই স্প্যানিশ তারকা ৬-০, ৬-১, ৬-৪ গেমে জাপানের ইয়োশিহিতো নিশিওকাকে মাত্র ৮১ মিনিটে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে আলকারাজ জনানা, “গ্র্যান্ড স্লামের শুরুর দিকে কোর্টে যত কম সময় কাটাব ততো ভাল। শরীর বেশ ঝরঝরে রয়েছে। নিজের সার্ভিস এবং কম সময়ে ম্যাচ জেতার দিকে নজর রেখেছিলাম। এবারের মৌসুম শুরুর আগে এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছি।”

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নারী–ম্যানিফেস্টো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচন

আলোচনামাহমুদা হাবীবা

সদস্য, বিএনপি মিডিয়া সেল। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কৃষক দল

যে রাষ্ট্রে সুশাসন থাকে, নাগরিক মর্যাদা নিশ্চিত হয়, সেখানে নারী–পুরুষ আলাদা করে ভাবার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু বাস্তবে মানসিকতার সংকট রয়ে গেছে। নারীরা নেতৃত্বে এলে সংসার–সন্তান সামলানোর প্রশ্ন আগে আসে—এটা বৈশ্বিক মানসিকতার সমস্যা। এমন বৈষম্যের মধ্যেই নারীবান্ধব ইশতেহার তৈরির দাবি এসেছে, যেখানে ১২টি প্রস্তাব আছে। প্রতিটিরই ইশতেহারগত কিছু কাজ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রয়েছে—ভাষায় পার্থক্য থাকতে পারে, অগ্রাধিকারে এদিক–ওদিক হতে পারে, কিন্তু এগুলো বিভিন্নভাবে এসেছে। ইশতেহারে যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্যসহ নারীর অধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা জরুরি। সংরক্ষিত নারী আসনের মাধ্যমে গতিশীল নেতৃত্ব তৈরি হয়নি। কারণ, নেতৃত্ব গড়ে ওঠে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে।

আমরা অনুরোধ করেছি, অন্তত কিছুসংখ্যক নারীকে সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করতে। দলগুলো সব সময় সর্বাধিক আসন চায়, এটাই বাস্তবতা। তবুও এবার বিএনপির মনোনয়ন একেবারে হতাশ হওয়ার মতো নয়; বরং আশাব্যঞ্জক। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা থাকলে দল সহযোগিতা করত। কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা অত্যন্ত প্রয়োজন হয়, পরে তা সামাজিক নিয়মে পরিণত হয়।

সাইফুল আলম খান

সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

নারীর নিরাপত্তা, সেটা যানবাহন হোক, ব্যবসা ক্ষেত্রে হোক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোক—সব জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।

নারীশিক্ষার ব্যাপক বিস্তার আমাদেরকেই করতে হবে। তার কারণ হলো নারীরা যদি শিক্ষায় অগ্রসর না হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে পড়ব এবং সাধারণত দেখা যায় যে আমাদের মেয়েরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেশি অগ্রসর হতে পারে। এটা আমাদেরকে তুলে ধরতে হবে। আমার তিন মেয়ে ও এক ছেলে। আমার তিন মেয়েই ভালো শিক্ষিত। ছোট মেয়েটা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং সে এনভায়রনমেন্টে মাস্টার্স করেছে, চাকরি করছে। কোনো প্রবলেম নেই।

ইসলামের দৃষ্টিতে নারীশিক্ষায় কোনো সমস্যা নেই, চাকরি করার সমস্যা নেই, ব্যবসা করার কোনো সমস্যা নেই। নারীরা যুদ্ধক্ষেত্রেও যেতে পারবেন। আমাদের নারীদের জন্য চাকরিবান্ধব কর্মক্ষেত্র তৈরি করা খুব জরুরি। সেটা আমাদের নিশ্চিত করা দরকার।

নারী অধিকারের ক্ষেত্রে আমি বলব যে এখানে বেশ খানিকটা সমন্বয়ের অভাব রয়ে গেছে। আমাদের যাঁরা নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদেরকে পরামর্শ দেব ইসলামিক স্কলারদের সঙ্গে সংলাপে বসতে পারেন। তাতে আমাদের দূরত্বটা হয়তোবা পুরোপুরি দূর হয়ে যেতে পারে।

মুশফিক উস সালেহীন

যুগ্ম সদস্যসচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক,

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)

রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান শুরু থেকেই পরিষ্কার। ঐকমত্য কমিশনে আমরা সরাসরি নির্বাচনের জন্য ১০০ নারী আসনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছিলাম। যদিও অন্যান্য দলের আপত্তিতে সেটি গৃহীত হয়নি, আমরা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছি। এনসিপির শীর্ষ নীতিনির্ধারণী স্তর থেকে শুরু করে সব কমিটিতে নারীদের দায়িত্বশীল উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। তবে জুলাই–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে অনেক নারী আগ্রহ হারিয়েছেন—এটিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তবুও ভবিষ্যৎ ইশতেহার ও রাজনৈতিক প্রস্তাবে আমরা নারীর সরাসরি নির্বাচনের বিষয়টি রাখব। শিগগিরই আমরা ধাপে ধাপে প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী থাকবেন। অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের নারী প্রার্থীর অনুপাত বেশি থাকবে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।

এনসিপির ইশতেহারে কর্মজীবন–পরিবারের ভারসাম্যকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে রাখছি। নারীর মতো পুরুষেরও ব্যক্তিগত জীবনের দায় রয়েছে। তাই সরকারি–বেসরকারি সব খাতে সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটি, বার্ষিক ছুটি ও মানবিক কর্মঘণ্টা প্রয়োজন। মাতৃত্বকালীন ছুটি সব ক্ষেত্রে ছয় মাস বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। পাশাপাশি পিতৃত্বকালীন ছুটিও নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে শিশুবান্ধব সুবিধা ও অবৈতনিক পরিচর্যার কাজকে জিডিপিতে মূল্যায়নের প্রস্তাবও আমাদের থাকবে।

মজিবুর রহমান মঞ্জু

চেয়ারম্যান, এবি পার্টি

জরিপে উঠে আসা ১২ দফা দাবির সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। এগুলো আমাদের দলের ইশতেহার তৈরিতে কাজে দেবে। আমরা এত দৃঢ়ভাবে বলতে পারছি না যে আমরাই ক্ষমতায় যাব, কিন্তু যদি ক্ষমতায় প্রভাবিত করার আমরা যদি নিয়ামক হই, তাহলে দুটি জিনিস আমাদের ভাবনায় আছে। সর্বস্তরে যেসব প্রতিষ্ঠান নারীদের সঠিক অধিকার রক্ষা করে, তাদের ছুটির ব্যাপারে কোনো ধরনের বিমাতাসুলভ আচরণ করে না বা ভীতি সঞ্চার করে না, এমন নারীবান্ধব প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কৃত করা। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, নারীদের জন্য নিরাপদ পাবলিক টয়লেট সহজলভ্য করা।

রাজনীতিতে নারীরা নানা অসুবিধা ও সামাজিক ইঙ্গিতের মুখে পড়ে। আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোকে বট আইডি বা আদার্স ইস্যুতে নারীদেরকে ফ্রেমিং করা বা হেনস্তা করার ব্যাপারে সিরিয়াস অবস্থান নেওয়া দরকার। আমি শুধু আমার দলের নারী হেনস্তার শিকার হলে প্রতিবাদ করব না, অন্যের হলেও করতে হবে।

আমাদের দল চার নারীকে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু জোট করতে গেলে সবাই জেতার সম্ভাবনা দেখে, ফলে নারী প্রার্থীদের জায়গা সংকুচিত হয়। আমি মনে করি, সমাধান যদি সর্বাত্মক না হয়, তাহলে সমস্যা একটা জায়গায় থেকে যাবে। সমাধানকে ফোকাস করেই আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ ছাড়া কোনো উপায় নেই।

তাসলিমা আখতার

সমন্বয়কারী, নারী সংহতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, গণসংহতি আন্দোলন

নারীর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে আরও গুরুত্ব পেয়েছে। আমি নিজেও এবার নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত হয়েছি দুটি কারণে—নারীর সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের দাবিতে এবং শ্রমিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিত্বহীনতার প্রশ্নটি সামনে আনার প্রয়োজনীয়তায়।

আমাদের ইশতেহারে আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জরিপে পাওয়া ১২ দফার সঙ্গে আমরা একমত। অনেক বিষয় আমাদের কর্মসূচির সঙ্গে মিলে যায়। আমরা মনে করি, নাগরিক হিসেবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠাই এখন সবচেয়ে জরুরি। নারী–পুরুষ উভয়ের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, সমকাজে সমমজুরি—এসব আমাদের অগ্রাধিকার। মজুরির দাবি নারীরই মৌলিক দাবি এবং এটি শুধু অর্থনৈতিক বিষয় নয়।

শিশু লালন–পালন ও গার্হস্থ্য কাজকে আমরা কেবল নারীর দায়িত্ব মনে করি না। এটি সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেই কারণে চাইল্ড কেয়ার সেন্টারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার কথা আমাদের ইশতেহারে থাকবে। রাজনৈতিক দল, সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নবিরোধী নীতিমালা বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে আমরা কাজ করব। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও আইন সংস্কারের বিষয়েও আমরা একমত।

শিরীন হক

প্রধান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন;

সদস্য, নারীপক্ষ

জরিপের মাধ্যমে নারীদের চাওয়া ও করণীয় তুলে ধরাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন ইশতেহার প্রণয়নের পর্যায়ে আছে, এ তথ্যগুলো তাদের কাজে আসবে। তারা কোন প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে বা পারছে না, এ নিয়ে আলোচনাও দরকার। তাতে বোঝাপড়া বাড়বে, নারীদের আসল চাহিদা সম্পর্কেও ধারণা তৈরি হবে।

নারীবিষয়ক সংস্কারের প্রস্তাব আমরা ৪২৩টি দিয়েছিলাম। আমরা কখনোই ভাবিনি সব কটি একসঙ্গে হবে। ২০০টাও হলে নারীরা অনেক এগোত। কিন্তু এই প্রস্তাব নিয়ে গালিগালাজ হলো, অথচ বহু প্রগতিশীল মহলও প্রতিবাদ করল না। শেষ পর্যন্ত নারীরাই মৈত্রী যাত্রা করলেন।

নারীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আইনসভা শক্তিশালী করা জরুরি। ৩০ শতাংশ নয়, ৫০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব হওয়া উচিত। আমরা সাধারণ ৩০০ আসনের সঙ্গে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচনের ৩০০ সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যাতে সব পেশা ও পরিচয়ের নারী প্রতিনিধিত্ব পান।

নারীকে মানুষ হিসেবে দেখা, সম্মান করা—এটাই মূল। রাজনীতি, গণমাধ্যম ও শিক্ষা—সবখানে এ বার্তা ছড়ানো জরুরি। সমাজের সমতার ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচনই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

আনোয়ারুল হক

সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি,

বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিস, ইউএনডিপি

জাতিসংঘের সব কাজের মূলনীতি—মানবাধিকার, সমতা, অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহি। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক অংশগ্রহণ কেবল প্রতিনিধিত্বের সংখ্যা বাড়ায় না, এটি গণতন্ত্রকে আরও স্থিতিশীল, শক্তিশালী ও কার্যকর করে তোলে।

উইমেনস ম্যানিফেস্টো একটি প্রমাণভিত্তিক ও নাগরিককেন্দ্রিক দলিল। নারী, তরুণ এবং বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর অভিজ্ঞতা, তথ্য ও পরামর্শের ভিত্তিতে এটি তৈরি হয়েছে। এ ম্যানিফেস্টো রাজনীতিকে আরও বাস্তবসম্মত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করছি। যদিও নারীরা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত, কিন্তু নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে, নেতৃত্বদানে এবং এজেন্ডা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখনো উল্লেখযোগ্য বাধা রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলীয় সংস্কার, নেতৃত্বের সুযোগ সৃষ্টি, রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ অংশগ্রহণের পরিবেশ অত্যন্ত জরুরি। ব্যালট প্রকল্প বাস্তবায়নে বর্তমানে ইউএনডিপি, ইউএন উইমেন, ইউনেসকো ও জাতিসংঘের আরও কয়েকটি অঙ্গসংগঠন একসঙ্গে কাজ করছে। এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

আমাদের লক্ষ্য নিরাপদ অংশগ্রহণের পরিবেশের পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ব‍্যবস্থাকে জেন্ডার রেসপনসিভ করা এবং অগ্রগতি পরিমাপ করার লক্ষ্যে স্পষ্ট মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এসডিজি অর্জনে গণতন্ত্র ও স্থানীয় শাসনব্যবস্থায় জেন্ডার সংবেদনশীলতা অপরিহার্য।

ফারাহ্ কবির

কান্ট্রি ডিরেক্টর, একশনএইড বাংলাদেশ

জোর দিয়ে বলতে চাই, রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের বিকল্প নেই। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য দূর করা—এসব দাবি তো আমরা ৫০ বছর ধরেই তুলছি। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহারে যা দেয়, তার বাস্তবায়ন হয় না। দলগুলোকে ইশতেহারের প্রতিশ্রুতির জন্য জবাবদিহির আওতায় আনার কাঠামো কোথায়?

আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে দলগুলো কেন একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না? নারীরা অর্থনীতিতে অবদান রাখলেও তাদের সুরক্ষা বা অধিকার নিয়ে রাষ্ট্রের স্পষ্ট ব্যবস্থা নেই।

নারী কাজ করবে কি করবে না—এ আলোচনা অর্থহীন, যদি শ্রমের পুনর্বণ্টনের কথা না বলি। সংসার দুজনের, দায়িত্বও দুজনের হওয়া উচিত। আর নিরাপত্তা মানে বাহিনীর পাহারা নয়; নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার নিশ্চিত করা। আজও আমাকে নাগরিক অধিকার, নিরাপত্তা ও বাল্যবিবাহ বন্ধে আইনি সুরক্ষার জন্য দৌড়াতে হয়। আমি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জানতে চাই—আপনারা কী করবেন? পাঁচ বছর পর ভোটে গিয়ে জবাবদিহি চাইতে হবে—এটা কি গ্রহণযোগ্য? ভোটার হিসেবেও আমাদের দায়িত্ব আছে—কাকে ভোট দিচ্ছি এবং কেন দিচ্ছি তা বুঝতে হবে।

মাসাকি ওয়াতাবে

ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনএফপিএ

আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা (জিবিভি) ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বিনিয়োগ করা, পাশাপাশি যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার নিশ্চিত করা। একদিকে অর্থনৈতিকভাবে যৌক্তিক, অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক দলগুলো পারিবারিক সহিংসতা, যৌন হয়রানি ও বাল্যবিবাহ বিষয়ে আইনি সংস্কার এগিয়ে নিতে পারে।

প্রযুক্তিনির্ভর জিবিভিসহ একটি জাতীয় জিবিভি প্রতিরোধ কর্মসূচি সম্প্রসারণ জরুরি। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুলিশ, বিচার ও সামাজিক সেবা খাতে সমন্বিত সেবা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে, বাধ্যতামূলক শিক্ষার সময়সীমা দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো, স্কুল স্টাইপেন্ড বৃদ্ধি, কারিগরি শিক্ষার আধুনিকায়ন এবং জন্ম ও বিবাহ নিবন্ধনের সর্বজনীনতা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্যসমতা অর্জনের জন্য দেশের চার হাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে দক্ষ ধাত্রী নিয়োগ করতে হবে, যাতে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী মাতৃসেবা এবং প্রজননস্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি পরিবার পরিকল্পনাসামগ্রীর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।

ইউএনএফপিএ রাজনৈতিক অগ্রাধিকার নির্ধারণে প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রমাণ সরবরাহ করতে প্রস্তুত।

তপতী সাহা

প্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট অ্যান্ড ইউনিট ম্যানেজার, জেন্ডার রেসপনসিভ গভর্ন্যান্স, ইউএন উইমেন

নির্বাচনের সময় নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে ৩০ শতাংশ মনোনয়ন বা নির্দিষ্টসংখ্যক নারী প্রার্থী—এ ধরনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কথা বলি; তবে এগুলো একটি বৃহত্তর, দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার অংশ। নারীর নেতৃত্ব বিকাশ ও তাঁদের রাজনৈতিক–গণজীবনে সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা শুধু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নয়, ব্যক্তিজীবন থেকে সর্বজনীন পরিসর পর্যন্ত একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা।

রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের ইশতেহার ও নীতিমালায় নারীর অন্তর্ভুক্তি শুধু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ না রেখে সারা বছর ধরে নেতৃত্ব গঠন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ এবং তৃণমূল, সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ও জেন্ডার বৈচিত্র্যময় নারীদের ক্ষমতায়নে বাস্তব উদ্যোগ নেওয়া।

তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতৃত্ব বিকাশে ধারাবাহিক উদ্যোগ না নিলে ‘মনোনয়নের জন্য যোগ্য নারী পাইনি’—এই যুক্তি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

জাতিসংঘের নারী বৈষম্য দূরীকরণ (সিডও) কমিটির সাধারণ সুপারিশ–৪০ স্পষ্ট করেছে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ৩০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব আজ আর যথেষ্ট নয়। প্রকৃত জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে লক্ষ্য হওয়া উচিত ৫০–৫০ অংশগ্রহণ, যা অর্জনে রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই নীতি ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

নাজিফা জান্নাত

শিক্ষার্থী, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক

আমরা যেসব নীতি ও সুপারিশ করি, সেগুলো বাস্তবে কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। এ জায়গায় নারীরা রাজনৈতিক অগ্রদূত হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। আগামী নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই প্রধান প্রত্যাশা।

আমরা দেখছি, সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা ভয়াবহ অনলাইন বুলিংয়ের শিকার হন। রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় নারীদের ওপর এই চাপ আরও বেশি। এটি শুধু অমানবিকই নয়, নারীর অংশগ্রহণে বড় বাধা। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের পরিষ্কার প্রত্যাশা—নারীবান্ধব ইশতেহার দিতে হবে এবং সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথও স্পষ্ট করতে হবে।

আমরা বহুদিন ধরে ১০০টি আসনে সরাসরি নারী প্রার্থী এবং সংসদে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনা ও আন্দোলনের পরও এসব বিষয় অগ্রাধিকার পায়নি। সামনের সময়ে দলগুলো এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সিরিয়াস হবে, এটাই প্রত্যাশা।

রাজনীতিতে নারীকে টোকেন হিসেবে নয়, কাঠামোগতভাবে জায়গা দিতে হলে বাধ্যতামূলক নিয়ম, সিস্টেম ও দলীয় সংস্কৃতির পরিবর্তন—সবই জরুরি। এটি নিশ্চিত করতে পারলেই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক জাতীয় নির্বাচনের পথ তৈরি হবে।

হেমা চাকমা

সদস্য,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)

আমরা কোনো দানখয়রাত চাই না, চাই রাজনৈতিক স্বীকৃতি। আমরা ভোট দেব, অংশ নেব এবং মনে রাখব আমরা রাজনৈতিকভাবে সমান অধিকার রাখি। তাই রাজনৈতিক দলগুলো নারীর অংশগ্রহণকে কীভাবে দেখছে, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে পার্বত্য এলাকার উদাহরণ দিলে দেখা যায়—তিনটি জেলা, তিনটি আসন; কিন্তু ৫৪ বছরে কোনো নারী সরাসরি নির্বাচিত হননি। সব সময় সংরক্ষিত আসনের নারী প্রতিনিধি এসেছেন। ফলে নারীর প্রকৃত এজেন্ডা বা অধিকার–সংক্রান্ত দাবি সামনে আসেনি। এই টোকেনিজম দূর করে নারীর বাস্তব চাহিদা ও অধিকারভিত্তিক রাজনৈতিক কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করাই জরুরি। পলিসি লেভেলে নারীর অংশগ্রহণ না থাকলে নারীবান্ধব নির্বাচন বা সমতাভিত্তিক রাজনীতি সম্ভব নয়।

এই জাতীয় নির্বাচনে তরুণ নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। নারীবান্ধব ইশতেহার শুধু প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবে কার্যকর করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে দলগুলোকে নারী, তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল হতে হবে। রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল হতে হবে।

অ্যান্ড্রেস ক্যাসটিল্লো

চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার,

ইউএনডিপি বাংলাদেশ

সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের সদস্য, একাডেমিয়া এবং নারীর অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ব্যক্তিদের প্রতি আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বিশেষভাবে অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত উৎকৃষ্ট কাজ উপস্থাপন করেছে—এ জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা সব সময়ই এ ধরনের উদ্যোগ ও গবেষণা প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

আমরা জানি, বিশ্ববিদ্যালয় ও নাগরিক সমাজ অনেক সময় সীমিত সম্পদ নিয়ে, কখনো কখনো কোনো বাহ্যিক সহায়তা ছাড়াই, গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই ছোট ছোট উদ্যোগই ইতিবাচক পরিবর্তন সৃষ্টি করছে এবং আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক অগ্রযাত্রাকে গতিশীল করছে। আমাদের এই প্রচেষ্টা ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি নারী ভোটার রয়েছেন। সমাজের ৫০ শতাংশ নারী যেন দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অর্থবহভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন, সে জন্য আমাদের সত্যিকারের কাজ করতে হবে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে সেই লক্ষ্যে কাজ করছি, আর আপনাদের উপস্থিতি এই উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করবে। আপনাদের মূল্যবান সময় ও সক্রিয় সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

সাবিহা ইয়াসমিন রোজী

চেয়ারপারসন ও সহযোগী অধ্যাপক, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে প্রাধান্য দিতে গেলে শুধু পদ বরাদ্দ বা টোকেনিজম নয়, বরং তাঁদের কণ্ঠস্বর, মতামত এবং নীতি-প্রসেসে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামীণ ও পার্বত্য এলাকায় এটি আরও চ্যালেঞ্জিং।

বিভিন্ন শ্রমজীবী নারীর জন্যও সমান সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, দল ও সমাজকে মিলিয়ে একটি জনবান্ধব, জেন্ডার-সংবেদনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। এতে নারীর আত্মবিশ্বাস ও কার্যকর অংশগ্রহণ বাড়বে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে মানবিক ও দায়িত্বশীল হতে হবে। নারী প্রার্থীর প্রতি সম্মান, ন্যায্য সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তাঁরা যাতে ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করতে পারেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শেষ পর্যন্ত নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ শুধু নির্বাচনী সংখ্যা নয়, বরং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা। এটি একটি নারীবান্ধব ইশতেহার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় নির্বাচনের মূল ভিত্তি। তাই আমাদের লক্ষ্য হলো নারীর উপস্থিতি ও কণ্ঠস্বরকে নীতি, প্রক্রিয়া এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে দৃঢ়ভাবে প্রতিফলিত করা।

জরিপ থেকে প্রাপ্ত ১২ দফাসৈয়দ মো. শাইখ ইমতিয়াজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ