রাফায়েল নাদালের ২২ গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা টপকে আরও আগেই পুরুষ এককের শীর্ষে নিজের নামটি লিখেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। তবে আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি, ২০২৫) অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে কোর্টে নেমেই ২৪ বারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী এই তারকা তার রেকর্ডের মুকুটে যুক্ত করলেন আরেকটি পালক। এই ৩৭ বছর বয়সী সার্বিয়ান তারকা গ্র্যান্ডস্লাম আসরে ক্যারিয়ারের ৪৩০তম একক ম্যাচটি খেলতে নেমে পেছনে ফেলেছেন টেনিসের আরেক আবেগ রজার ফেদেরারকে। রড লেভার অ্যারেনায় এই ম্যাচে পর্তুগালের জাইমে ফারিয়াকে ৬-১, ৬-৭ (৪/৭), ৬-৩, ৬-২ গেমে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন ‘জোকার’ নামে খ্যাত এই তারকা। তবে ম্যাচের মাঝেই ফারিয়াকে প্রশংসায় ভাসিয়ে আলোচনায় জোকোভিচ।

ম্যাচের সংখ্যায় গ্র্যান্ডস্লামে এতদিন সবার উপরে ছিলেন ফেদেরার। এই সুইস মহাতারকার ম্যাচ সংখ্যা ছিল ৪২৯ টি। এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলার ম্যাচে প্রথম সেটটি সহজে জিতেন জোকোভিচ। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে দ্বিতীয় সেটটা নিজের করে নেন বাছাইপর্বে পেরিয়ে আসা ফারিয়া। পরের দুই সেটে আর জোকোভিচের কাছে পাত্তা পাননি পর্তুগিজ তরুণ তুর্কি।

এই নিয়ে ১৭বারের মতো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডের দেখে পেলেন তিনি। ফেদেরারের নজির ভেঙে নিজেকে ভাগ্যবান দাবি করেছেন জোকোভিচ, “আমি খেলাটাকে খুব ভালবাসি। এই প্রতিযোগিতাটা ভালবাসি। তাই প্রতিবার নিজের সেরাটা দিই। জিতি বা হারি, সব সময়েই নিজের হৃদয় উজাড় করে খেলি।’’

আরো পড়ুন:

১১.

৫৬ শতাংশ বাড়ল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রাইজমানি

রাফায়েল নাদাল: টেনিসের রাজ্যে ‘স্প্যানিশ সম্রাট’

গ্র্যান্ডস্লামের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে জোকোভিচ আরও বলেন, “গ্র্যান্ডস্লামই আমাদের খেলার মূল স্তম্ভ। ১৩০ বছর ধরে এই খেলাটা রয়েছে। আজ গ্র্যান্ডস্লামে একটা রেকর্ড গড়তে পেরে তাই আমি ভাগ্যবান।”

এই ম্যাচে উঠতি তারকা ফারিয়ার খেলার মুগ্ধতায় আকৃষ্ট হয়েছেন জোকোভিচও। এই কথাটা নাকি ম্যাচের মাঝেই পর্তুগিজ তারকাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন জোকার! ম্যাচ শেষে এই ব্যাপারে জোকোভিচ জানান, “সে অসাধারণ খেলছিল। এমন কারও বিপক্ষে খেলা সহজ নয়, যার কোনো কিছু হারানোর নেই। সে খুবই তরুণ। আমি খেলার মাঝেই নেটে তাকে বলেছিলাম- তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।”

এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনালে জোকোভিচের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী আরেক উঠতি তারকা কার্লোস আলকারাজ। এই স্প্যানিশ তারকা ৬-০, ৬-১, ৬-৪ গেমে জাপানের ইয়োশিহিতো নিশিওকাকে মাত্র ৮১ মিনিটে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। ম্যাচ শেষে আলকারাজ জনানা, “গ্র্যান্ড স্লামের শুরুর দিকে কোর্টে যত কম সময় কাটাব ততো ভাল। শরীর বেশ ঝরঝরে রয়েছে। নিজের সার্ভিস এবং কম সময়ে ম্যাচ জেতার দিকে নজর রেখেছিলাম। এবারের মৌসুম শুরুর আগে এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছি।”

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুর মায়োপিয়া কেন হয়, চিকিৎসা ও করণীয় কী

মায়োপিয়া বা ক্ষীণদৃষ্টি হলো চোখের এমন এক সমস্যা, যা হলে কাছে থাকা জিনিস স্পষ্ট দেখা যায়, কিন্তু দূরের বস্তু দেখা যায় ঝাপসা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিশুদের মধ্যে এ সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

কারণ কী

মা–বাবার একজন বা দুজনেরই মায়োপিয়া থাকলে শিশুরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। দীর্ঘ সময় ডিজিটাল স্ক্রিন বা বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকলে, মুঠোফোন, ট্যাব, কম্পিউটার ও বই পড়ার সময় বেশি হলে চোখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সূর্যের আলোয় কম সময় কাটানো ও ঘরের কৃত্রিম আলোয় বেশি সময় থাকলেও মায়োপিয়া হয়। পড়ার সময় চোখ ও বইয়ের দূরত্ব ঠিক না রাখা, চোখে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ ইত্যাদি কারণে হয়।

আরও পড়ুনপদ্মা নদীতে কায়াক চালিয়ে রাজশাহী থেকে চাঁদপুর গেছেন ইনতিয়াজ, পথে কোথায় থেকেছেন, কী খেয়েছেন১৬ আগস্ট ২০২৫চিকিৎসা ও করণীয়

চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুদের জন্য উপযুক্ত ‘পাওয়ারের’ চশমা নিতে হবে। নিম্নমাত্রার অ্যাট্রোপিন ড্রপ চোখে দিলেও মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর হয়। স্পেশাল কন্ট্যাক্ট লেন্স বা অর্থোকেরাটোলজি লেন্স দেওয়া যেতে পারে। রাতে ব্যবহারযোগ্য এই লেন্স চোখের গঠন কিছু সময়ের জন্য পরিবর্তন করে। মায়োপিয়া কন্ট্রোল গ্লাস বা বিশেষ ধরনের কাচ ব্যবহার করা হয়, যা মায়োপিয়ার অগ্রগতি রোধে সাহায্য করে।

কিছু বিষয় মেনে চললে শিশুর মায়োপিয়া হওয়ার ঝুঁকি কমে। প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা সূর্যের আলোতে শিশুরা যাতে খেলাধুলা করতে পারে, সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। ‘২০-২০-২০’ নিয়ম মেনে চলা অর্থাৎ প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরে তাকানো। বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করা। শিশুদের প্রতিদিনের স্ক্রিন ব্যবহার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাখা। পড়াশোনার সময় সঠিক আলো ও চোখের দূরত্ব যেন থাকে।

আরও পড়ুনব্র্যান্ডের গজ কাপড় সস্তায় কিনতে পারবেন যে গলিতে১৫ আগস্ট ২০২৫জটিলতা

শিশুদের মায়োপিয়া বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে চোখে গুরুতর রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ মাত্রার মায়োপিয়া থাকলে চোখের পর্দা ছিঁড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। গ্লুকোমা অর্থাৎ চোখের ভেতরে চাপ বেড়ে যাওয়া ও স্নায়ু ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। রেটিনার কেন্দ্রীয় অংশের অবক্ষয়, যা স্থায়ী দৃষ্টিহানির কারণ হতে পারে। তুলনামূলকভাবে আগেভাগে চোখে ছানি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

শিশুদের ভালোভাবে না দেখতে পারা তাদের শিক্ষা, খেলাধুলা ও সামাজিক মেলামেশায় প্রভাব ফেলে। শ্রেণিকক্ষে বোর্ড স্পষ্ট না দেখতে পাওয়া ও মনোযোগ হারানোর সমস্যা হয়। চশমা পরলে এ নিয়ে লজ্জা বা উপহাসের শিকার হতে হয় শিশুদের। কিছু খেলা বা বাহ্যিক কাজে অংশ নিতেও পারে না। চোখের সমস্যা থাকলে শিশুদের উদ্বেগ, ক্লান্তি ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার মতো সমস্যায় পড়তে হয়।

যথাযথ ব্যবস্থাপনা, নিয়মিত চোখের পরীক্ষা, জীবনধারায় পরিবর্তন, সঠিক চশমা ব্যবহার ও সঠিক চিকিৎসায় শিশুদের মায়োপিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শৈশবে মায়োপিয়ার যথাযথ ব্যবস্থাপনা না করলে তা শুধু চোখের নয়, মানসিক ও সামাজিক বিকাশেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির, গ্লুকোমা বিশেষজ্ঞ ও পরিচালক, বাংলাদেশ আই হসপিটাল, মালিবাগ, ঢাকা

আরও পড়ুন৯ বছরে সামিরা খান মাহির লুকে কতটা পরিবর্তন এল, দেখুন ২১টি ছবি১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ