ভারতের হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বললেন ট্রাম্প, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের মধ্যে চলমান সংকট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। অন্যদিকে এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের কয়েকটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। হামলায় অন্তত আটজন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটা লজ্জার। ওভাল অফিসের দরজা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আমরা এ খবর শুনেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, অতীতের ইতিহাসের ভিত্তিতে মানুষ বুঝতে পেরেছিল যে, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। তারা (ভারত-পাকিস্তান) দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে।’
খুব শিগগিরই চলমান সংকটের অবসান ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের সামরিক অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ভারত ও পাকিস্তান—দুই দেশের কাছ থেকেই সর্বোচ্চ মাত্রার সংযত আচরণ প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তজুড়ে ভারতের সামরিক অভিযানে মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সামরিক সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন।’
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত বিশ্ব নিতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এরই মধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে বলে দেশটির আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ৩৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ হামলা চালাল ভারত। নয়াদিল্লি এই হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনায় হামলা চালায়নি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এআরওয়াই নিউজকে বলেছেন, বেসামরিক এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কাপুরুষেরা তাদের নিজস্ব আকাশসীমা থেকেই হামলা করেছে। তারা কখনো তাদের ঘর থেকেই বের হয়নি। তারা বেরিয়ে আসুক, আমরা সমুচিত জবাব দেব।’
পাকিস্তান কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে–জানতে চাইলে খাজা আসিফ উত্তরে বলেন, পাকিস্তান প্রতিশোধ নেবে। তিনি আরও বলেন, ‘তাদের হামলার তুলনায় অনেক বড় পরিসরে আমরা এর জবাব দেব। তারা শুধু বেসামরিক মানুষদের ওপর হামলা করেনি, বরং নিজেদের আকাশসীমা থেকে এ কাজ করেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
২ কেজির ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়
সারাদেশে ইলিশের দাম নিয়ে যখন হইচই তখন জেলেরা ভুগছেন ইলিশ সংকটে আর ক্রেতারা হতাশ দাম নিয়ে। এ অবস্থায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় জামাল মাতুব্বর নামের এক জেলের জালে ধরা পড়লো ২ কেজির এক ইলিশ যা বিক্রি হলো ৭ হাজার ৭০০ টাকায়।
রোববার বিকেলে উপজেলার আশাখালী মাছ বাজারে ২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটিকে ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেন জেলে। মাছটি কেনেন বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম।
জেলে জামাল মাতুব্বর বলেন, গত কালকে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে আজকে আবহাওয়া খারাপ হওয়া তীরে চলে এসেছি৷ ইলিশ মাছ কম তবে একটি ইলিশ আমি ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি। যে কারণে কম মাছ পেলেও খুব ভালো লাগছে। এর চেয়েও বড় ইলিশ সমুদ্রে পাওয়া যায় তবে এখন দাম অনেক হওয়ায় যা দাম এসেছে তাতে পুষিয়ে যায় আমাদের।
বন্ধন ফিসের মালিক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, গত ১১ জুন ৬০ দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর কয়েকবার আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় জেলেরা ঠিকমতো মাছ ধরতে পারছেন না। তবে আজকে জেলে জামাল একটি মাছ প্রায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এটা তার জন্য অনেক আনন্দের। মাছটি আমি কিনে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
উপজেলার বেশ কয়েকটি মাছের বাজারে কথা বলে জানা যায়, ইলিশ সংকট হওয়ায় তার দাম আকাশচুম্বী। আজকে এক কেজির উপরের ইলিশ প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে এক লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকায়, ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৭০ হাজার থেকে ৮৫ হাজার টাকায়, ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫ থেকে ৬৮ হাজার টাকায়, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৬০ দিনের অবরোধ সঠিকভাবে পালন হওয়ায় সাগরে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তবে আবহাওয়া ঠিক হলে মাছের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে আর দামও নাগালে চলে আসবে।