আবারো অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। প্রশ্ন তুলেছেন সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি। 

সেখানে তিনি লেখেন, “খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, পুলিশ আসামি ধরলেও আদালত থেকে জামিন দেওয়া হয়। শিরীন শারমিনকে (সাবেক স্পিকার) রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি। আর আপনারা বলছেন আওয়ামী লীগের বিচার করবেন?” 
তা ইন্টেরিম,এখন পর্যন্ত কী কী বিচার ও সংস্কার করেছেন?

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলার অবনতির মধ্যে ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি, ২৮জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ৬২৬ জন ‘প্রাণ বাঁচাতে’ দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিল বলে সেনা কর্তৃপক্ষ জানায়।

জুলাই আন্দোলনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়। এর আগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। 

এর আগে, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের (এমপি) লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়  অন্তর্বর্তী সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় শিরীন শারমিন চৌধুরীর লাল পাসপোর্টও বাতিল হয়। রংপুরে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা সাবেক এই স্পিকার গত ৩ অক্টোবর তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইনসহ ঢাকার আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অফিসে সাধারণ ই-পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেন। 

গত ১০ অক্টোবর তাদের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি দেওয়ার তারিখ ছিল, যা তারা ঘরে বসেই দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে এসব কাজ করার কথা। আজ এ বিষয় নিয়েও কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমার ছেলেকে গোসল করাতেও দেয়নি ওরা’

রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের অডিটরিয়াম শহীদদের বাবা-মায়ের অশ্রুতে ভিজেছে। অনেক মা উঠে দাঁড়িয়েছেন, আর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে বলেছেন, “আমার ছেলে গুলি খেয়েছিল রাস্তায়, কিন্তু হাসপাতালে নিয়েও চিকিৎসা পায়নি।”

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট)‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ এর ১ বছর পূর্তিতে ঢাকা জেলা প্রশাসন ৮২ শহীদ পরিবার ও ১ হাজার ৪৮৩ জন জুলাইযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। কিন্তু এই সংবর্ধনা শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, এটি ছিল স্মরণ, শ্রদ্ধা, বিচার চাওয়ার আর্তি আর রাষ্ট্র পুনর্গঠনের অঙ্গীকার।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে টিকে থাকতে চেয়েছিল। ৫ আগস্ট শুধু স্মরণ করার মতো দিন নয়, এটা প্রতিজ্ঞার দিন, মাফিয়াতন্ত্রকে চিরতরে নির্মূল করার শপথ।”

আরো পড়ুন:

বীরদের উৎসর্গ করে জুলাইয়ের গল্প শোনালেন সায়ান

চব্বিশের অভ্যুত্থানে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি

তিনি আরো বলেন, “আজ আমরা শ্রদ্ধা জানাই শুধু জুলাই শহীদদের নয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধাদেরও, যাদের আত্মত্যাগে আমরা প্রথম স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। এবার এসেছে গণতন্ত্রের পূর্ণ মুক্তির সময়।”

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে শহীদ শুভ’র মা রেনু কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেকে গুলি করার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওকে বাঁচাতে কেউ আসেনি। মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরলে গোসল করাতে দেয়নি পুলিশ। আমার ছেলে অপরাধ কী করেছিল? ছাত্রদের ডাকে সাড়া দিয়েছিল, এটাই ছিল ওর অপরাধ?”

শহীদ আকরাম খান রাব্বির মা বলেন, “আমরা এখানে কোনো উৎসব করতে আসিনি। এসেছি বিচার চাইতে। আমাদের সন্তানদের খুন করে কেউ যেন নিরাপদে না থাকে। স্বৈরাচারী শাসকের বিচার চাই। এমন শাস্তি চাই, যেন দুনিয়া কাঁপে।”

এই স্মৃতিচারণ অংশে অডিটোরিয়ামের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। দর্শকসারিতে অনেকেই চোখ মুছছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, “যে সরকার গুলি চালিয়েছিল, তারা পালিয়ে গেছে। তাদের দোসররাও আত্মগোপনে। সেই শূন্যতার সময় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে আমরা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। এখন সেই সংকট পেরিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি উপস্থিত শহীদ পরিবার ও আন্দোলনকারীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমাজকল্যাণ ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।

অনুষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। যেখানে আন্দোলনের ভয়াবহতা ও আন্দোলনকারীদের সাহসিকতা ফুটে ওঠে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
  • গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে চিরস্থায়ী করে রাখতে হবে: আসিফ নজরুল
  • সিলেটে জুলাই স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১৪
  • সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ দিলেন মির্জা ফখরুল
  • চবি প্রশাসনকে নিয়ে পথনাটক ‘বহুতদিন অইয়ে আর মুলা ন ঝুলায়ো’
  • বিতর্কিত ছবির স্থানে খালেদা জিয়ার উক্তি টানাল শিবির
  • কুয়েতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
  • আমিরাতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত 
  • খুলনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ ও উন্মুক্ত আলোচনা
  • ‘আমার ছেলেকে গোসল করাতেও দেয়নি ওরা’