পাক সেনাপ্রধানকে শান্তিপূর্ণ সমাধানে সহায়তার প্রস্তাব মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
Published: 10th, May 2025 GMT
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
এসময় পাক সেনাপ্রধানকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী উত্তেজনা প্রশমনে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। খবর রয়টার্সের।
শুক্রবার তাদের মধ্যে ফোনালাপ হয় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস।
ফোনালাপে রুবিও উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে দুই দেশের মধ্যে ‘গঠনমূলক’ আলোচনা শুরু করতে মার্কিন সরকারের সহায়তার প্রস্তাব দেন।
এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে রুবিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন।
এদিকে ভারতে পাল্টা হামলা শুরু করেছে পাকিস্তান। শনিবার ভোরে ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ নামের এই হামলায় ভারতের উদমপুরে অবস্থিত এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি করেছে পাকিস্তান।
দেশটির নিরাপত্তা সূত্রের দাবি, শনিবার ভোরে শুরু হওয়া এই অভিযানে ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এতে পাঞ্জাবের বেয়াসে অবস্থিত ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার, উদমপুর বিমানঘাঁটি, পাঠানকোট বিমানঘাঁটি, আদমপুর বিমানঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছে।
এছাড়া ভারতের জি-টপে অবস্থিত ব্রিগেড সদর দপ্তর ও উরির একটি সরবরাহ ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে। পাকিস্তান দেহরাংগিয়ার একটি ভারতীয় আর্টিলারি ও নাগরোটার একটি ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগারেও হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র ক ন পরর ষ ট রমন ত র ম র ক ন পরর ষ ট র পরর ষ ট রমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, বিশ্বনেতাদের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্র মধ্যরাতের পর ইরানে হামলা চালায়। এই হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে ফেললেন।
ট্রাম্পের এ পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত আরও বিপজ্জনক রূপ নেওয়ার ঝুঁকি বাড়ল। বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকদের কেউ কেউ এর নিন্দা জানিয়েছেন। অন্যরা উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও আল জাজিরার
জাতিসংঘ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি এ হামলাকে উত্তেজনাপূর্ণ একটি অঞ্চলে বিপজ্জনক মাত্রায় উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, ‘এই সংঘাত দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে; যা বেসামরিক মানুষ, এতদঞ্চল ও সারা বিশ্বের জন্যই ভয়ানক পরিণতি ঢেকে আনতে পারে।’
যুক্তরাজ্য: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেওয়া যাবে না। যুক্তরাষ্ট্র সেই হুমকি কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে।’ তিনি ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরার ও এ সংকটের একটি কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছার আহ্বান জানান।
অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি।’
নিউজিল্যান্ড: নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সামরিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, তা নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
মেক্সিকো: মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর প্রতি কূটনৈতিক সংলাপ শুরু করা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে।
চিলি: প্রেসিডেন্ট গাব্রিয়েল বোরিক বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে এ হামলা অবৈধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘আমরা শান্তি চাই এবং শান্তি প্রয়োজন।’
ভেনেজুয়েলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অবৈধ, অযৌক্তিক ও ভীষণ বিপজ্জনক আগ্রাসন বলে বর্ণনা করেছেন।
সৌদি আরব: বিবিসি জানায়, সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রিয়াদ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, বিশেষ করে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়টি।
বিবৃতিতে উত্তেজনা কমাতে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছার প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছে সৌদি আরব।
ওমান: আল জাজিরা জানায়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছিল ওমান। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অবৈধ আগ্রাসন বলে উল্লেখ করে এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। ওমান তাৎক্ষণিকভাবে ও সর্বাত্মক উত্তেজনা প্রশমনেরও আহ্বান জানিয়েছে।
ওমান নিউজ এজেন্সিকে ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, দেশটি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সতর্ক করে বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদেরও স্পষ্ট লঙ্ঘন।
কাতার: যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এ অঞ্চলে যে বিপজ্জনক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, তা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে কাতার।
ইরাক: ইরাক প্রতিবেশী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। এ হামলায় যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।