আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির নবম ম্যাচে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালে। খুলনার সেই ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল জিম্বাবুয়ের। জয়ের পতাকা উড়িয়েছিল প্রথম ম্যাচেই। মাশরাফি বিন মুর্তজা ছিলেন প্রথম জয়ের নায়ক।
সেই দলে তার সতীর্থ ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। যিনি এখন জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্বে। পেছনে ফিরে রাজ্জাক মনে করতে পারলেন না, ঠিক কোন ভাবনায় আসলে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টির যাত্রা শুরু হয়েছিল, ‘‘অনেক পুরোনো কথা। ঠিক মনে করেও বলতে পারব না। তবে এতটুকু বলতি পারি আমরা খুব করে চেয়েছিলাম ম্যাচটা যেন জিততে পারি। নিজেরা একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। প্রথম ম্যাচ, উত্তেজনা বেশি ছিল। সেভাবেই আসলে সফল হয়েছিল।’’
১৯ বছর পর রাজ্জাক আরেক কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, টি-টোয়েন্টি আসলে খেলতে হয় কিভাবে? বাংলাদেশ এত বছর ধরে যেই ব্র্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছে সেটা কী আদর্শ?
আরো পড়ুন:
বিদেশে পেশাগত কোর্স ফি পাঠাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
স্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার
রাজ্জাকের উত্তরটা ঠিক দায়সারা, ‘‘আমরা যখনই এই ফরম্যাটে বাজে ক্রিকেট খেলি বা ফলাফল না পাই তখনই এই আলোচনাটা আসে। কিন্তু আমরা তো এই ফরম্যাটে ভালো কয়েকটি ম্যাচও জিতেছি।’’
পরিসংখ্যান অবশ্য বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে না একটুও। ১৮৪ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরেছে ১০৮টি। জয় কেবল ৭২টি। বাংলাদেশের সবশেষ পরাজয় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশের হারের রেকর্ড আরেকটি বাড়ল গতকাল।
স্কোরবোর্ডে দুইশর বেশি রান নিয়েও বাংলাদেশ ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি। বর্তমান অধিনায়ক লিটন দাস মাঠের আকৃতি ও শিবিরের অজুহাতকে সামনে এনেছেন। অথচ তিনি ভুলেও গেছেন, প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। অভিজ্ঞতায় যারা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক অনেক পিছিয়ে। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর বিপক্ষেই যাদের নিয়মিত পথ চলা। পূর্ণ সদস্য দলগুলোর বিপক্ষে তেমন খেলার সুযোগ মেলে না। সেই দলের বিপক্ষে ম্যাচ হার রীতিমত বিব্রতকর।
ভুলের পর ভুল করে ম্যাচটা হেরেছে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে পর্যাপ্ত রানের ঘাটতি, ক্যাচ মিস, ফিল্ডিংয়ে দুর্বলতা ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। প্রথম ম্যাচেও বাংলাদেশকে চোখ রাঙানি দিয়েছিল। কেবল অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশ ম্যাচ বের করে আনতে পেরেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে সেই সুযোগটি স্বাগতিকরা দেয়নি।
এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখনো নিজেদের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট স্থির করতে পারেনি। যা এই ফরম্যাটে এগিয়ে যাওয়ার বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা স্বীকার করতে দ্বিধা করলেন না সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, ‘এটা তো স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তোলা যায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বাংলাদেশ কিভাবে খেলছে, কোন স্টাইলে খেলছে। মাঠে আমাদের পরিকল্পনার ঘাটতি ফুটে উঠছে। এটা যে এক-দুই ম্যাচেই হচ্ছে বিষয়টি তেমনও না। একেবারে শুরু থেকে।’’
পাইলট যোগ করলেন, ‘‘এই ফরম্যাটে এগিয়ে যেতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট কয়েকজন ক্রিকেটারকে আলাদাই করে রাখতে হবে। ওদেরকে আপনার গড়তে হবে সেভাবেই। ফ্রি লাইসেন্স দিতে হবে। বারবার সুযোগ দিয়ে তৈরি করতে হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য যেমন অবারিত সুযোগ থাকবে, বোলারদের জন্যও তাই।’’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বাদে দেশে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিত আছে কেবল বিপিএল। অনেক সময় জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি হয়। আবার কখনো বিসিএল টি-টোয়েন্টি। আবার কখনো হয়ও না। বিপিএলে কেবল নিয়মিত। অথচ শেষ বিপিএলে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় যিনি হয়েছেন, মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার তাকেই বাদ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় দলের অন্য দুই ফরম্যাটের নিয়মিত ক্রিকেটার মিরাজ বাদ পড়ার পর প্রথম কথা বললেন এসব নিয়ে, ‘‘আমার চেয়ে তারা (নির্বাচকেরা) ভালো বলতে পারবেন (কেন নেই)। তারা যেভাবে চিন্তা করেন, হয়তো ভালোর জন্যই চিন্তা করেন। খেলোয়াড় হিসেবে খারাপ লাগে, যেহেতু বিপিএলে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছিলাম। বেশ কিছু টি-টোয়েন্টিতে ভালোও খেলেছিলাম।’’
মিরাজের এই আফসোস হয়তো বলে দেয়, সেরা ক্রিকেট খেলেও সুযোগ মেলেনি তার। নিজেদের ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট ঠিক করার আগে খেলোয়াড় বাছাইও যে বিরাট দায়িত্বের সেটাও নির্বাচকরা ভাববেন নিশ্চয়ই।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ই ফরম য ট হয় ছ ল ব প এল প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডারকে ফেরাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ
কার্লো আনচেলত্তির জায়গায় রিয়াল মাদ্রিদের নতুন কোচ হয়ে যাচ্ছেন জাবি আলোনসো। কোনো ক্লাবে নতুন কোচ মানেই নতুন খেলোয়াড়ের আগমন। আলোনসো এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন কয়েকজন খেলোয়াড় তিনি নেবেন সান্তিয়াগো বার্নব্যুতে। আলোনসোর সেই পছন্দের খেলোয়াড়দের একজন আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার নিকো পাজ।
১৯৯৮ বিশ্বকাপে খেলা আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার পাবলো পাজের ছেলে নিকো পাজ অবশ্য রিয়ালেরই একাডেমির খেলোয়াড়। নিকো পাজের ফুটবলের হাতেখড়ি সিডি সান হুয়ানে। সেখান থেকে টেনেরিফে হয়ে ২০১৬ সালে রিয়ালের যুব দলে নাম লেখান নিকো পাজ।
আর্জেন্টিনার অনুশীলনে মেসির সঙ্গে নিকো পাজ