সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথরকোয়ারি-সংলগ্ন পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের অভিযোগে ১৪ জনকে ২ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত ৬০টি নৌকা ধ্বংস করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করে পাথর উত্তোলনকারীদের এ সাজা দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত ২৫ দিনের ব্যবধানে ভোলাগঞ্জে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের অভিযোগে ২৬ জনকে ২ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকালের অভিযানে নেতৃত্ব দেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, সাদা পাথর এলাকায় অবাধে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে—এ সংবাদ পেয়ে সেখানে টাস্কফোর্সের অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পাথরবোঝাই ৬০টি ইঞ্জিনচালিত ও বারকি নৌকা জব্দ করে সেসব ধ্বংস করা হয়।
অভিযানে ১৪ জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁদের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন পিযুষ কুমার দাস, রিপন মিয়া, মুসা মিয়া, আরিফ মিয়া, মোবারক হোসেন, হজরত আলী, রাসেল মিয়া, জসিম মিয়া, সামছুল হক, শফিকুল ইসলাম, আলী হোসেন, রাজীব হোসেন, ফয়সল আহমদ ও দেলোয়ার হোসেন।

এদিকে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, কয়েক দিন ধরে সিলেটে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে ভারতের উজান থেকে নেমে আসছে পাহাড়ি ঢল। এ সুযোগে হাজারো মানুষ ইঞ্জিনচালিত ও বারকি নৌকা নিয়ে অবাধে পাথর উত্তোলন শুরু করেছেন। ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের পাথর দেদারে লুট চলে। গতকাল সকালে পাথর লুটপাটের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে পাথর লুটের ভিডিওর লাইভও করেন। এরপর স্থানীয় প্রশাসন টাক্সফোর্সের অভিযান চালায়।
এর আগে ১০ মে ভোলাগঞ্জ পাথরকোয়ারি-সংলগ্ন বাংকার এলাকায় পাথর লুটের সময় ৩ জন এবং ২৬ এপ্রিল সাদা পাথর এলাকায় পাথর লুটের সময় ৯ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এল ক য় বছর কর

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে স্কুল বাসে বোমা হামলা, শিশুসহ নিহত ৫

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে একটি স্কুল বাসে বোমা হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।

পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় আজ বুধবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রত্যন্ত শহর খুজদারে ওই হামলার সময় বাসটিতে প্রায় ৪০ জন স্কুল শিশু ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই শিশু। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে একটি বড় বাসের পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে, যার চারপাশে স্কুলব্যাগ ছড়িয়ে রয়েছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের দল ঘোষণা, নেই বাবর-শাহিন-রিজওয়ান

পাকিস্তান-বাংলাদেশের তিন ম্যাচের সিরিজ, সব ম্যাচ লাহোরে

এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি অশান্ত প্রদেশ বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্রোহ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এই ঘটনাকে ‘স্পষ্ট বর্বরতা’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। শিশুদের লক্ষ্য করে হামলাকারীদের তিনি ‘পশু’ অভিহিত করেছেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রতিবেশী ভারত ও বেলুচিস্তানের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরণের পরিকল্পনার অভিযোগ করেছে, যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই।

এর আগে মার্চের শুরুতে, বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত সিবি জেলায় একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মির ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলায় প্রায় ২১ জন বেসামরিক ব্যক্তি এবং চারজন সামরিক কর্মী নিহত হয়েছিল।

ওই হামলাটি চালায় বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী যারা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে।

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ, পাশাপাশি যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করেছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিএলএলকে ‘ভারতের প্রক্সি’ গোষ্ঠী হিসেবে অভিযোগ এনেছে। তবে বিএলএ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএলএল উল্টো পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছে।

তারা বলেছে, গত দুই দশকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী হাজার হাজার জাতিগত বালুচ মানুষকে নিখোঁজ করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক করা হয়েছে, অথবা কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে অভিযানে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা করা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ