সমর্থকদের সঙ্গে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার বিকেলে ফেসবুকে তাঁর ভেরিফাইড অ্যাকাউন্টে এ ঘোষণা দেন। 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‌‘আন্দোলনকারী জনতার প্রতি সর্বাত্মক সংহতি জানাতে এবং তাদের সঙ্গে যতদিন প্রয়োজন রাজপথে সহঅবস্থান করার জন্যে অল্প সময়ের মধ্যেই হাজির হব ইনশাআল্লাহ।’

এর আগে দুপুরে ফেসবুক তিনি আরেকটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টে সমর্থকদের রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দেন তিনি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ না পড়ানোর আগ পর্যন্ত সমর্থকদের উদ্দেশে রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশনা দিয়ে দিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘নির্দেশ একটাই- যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে ওঠে আসা যাবে না।’

এদিকে দুপুরে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি আজ আবারও গ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি মো.

আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ বুধবার এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে বুধবার সকাল থেকেই ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও প্রেসক্লাব এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এদিন সকাল ১০টার মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসায় নতুন এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

এই কর্মসূচির ফলে সকাল থেকে শাহবাগ, কাকরাইল, হাইকোর্টসহ বেশকিছু এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে নগর ভবনের সামনের সড়ক ফাঁকা। সেখানে কোনো লোকজন দেখা যায়নি। তবে ইশরাক সমর্থক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জাতীয়তাবাদী সমর্থিত কর্মচারী সমিতির লোকজন।

অন্যান্য দিনের মতো আজও নগর ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিসে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন তারা। একইসঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, ময়লা পরিবহন কার্যক্রম, নাগরিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ইশর ক হ স ন র জপথ ইশর ক হ স ন সমর থকদ র র জপথ সমর থ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’

ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।

এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’

ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।

কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?

কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।

ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।

সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’

ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ