আগামী সপ্তাহে চীনে ৫০ টন আম রপ্তানি করবে বাংলাদেশ: কৃষি সচিব
Published: 21st, May 2025 GMT
আম উৎপাদনে শীর্ষ দশে থাকলেও নানা বাধায় রপ্তানিতে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তবে বর্তমান সরকার চীনকে আম রপ্তানির নতুন গন্তব্য বানাতে চায়। এতে রপ্তানিকারকদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। গুণগত মান ঠিক রেখে আম উৎপাদন করে রপ্তানিতে এবার রেকর্ড গড়তে চায় কৃষি মন্ত্রণালয়।
বুধবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে কৃষি সচিব ড.
কৃষি সচিব বলেন, দেশভিত্তিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে কীভাবে আমের রপ্তানি বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। গত বছর ধান আমদানি করতে হলেও, এ বছর আর তা প্রয়োজন হচ্ছে না।
ড. এমদাদ উল্লাহ বলেন, ডলার সংকটের কারণে এক সময় সারের ঘাটতি ছিল, তবে এখন সেই সমস্যা নেই। সরকার নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এই সংকটের সফল সমাধান করেছে। স্মরণকালের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি শাকসবজি উৎপাদন হয়েছে এবং নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
সরকার কৃষি খাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। কৃষিকে জনপ্রিয় করতে অ্যাপসের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এছাড়াও বিমান ভাড়া কমানোর লক্ষ্যে কার্গো বিমান ব্যবস্থার বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, আমাদের ডেল্টা প্ল্যান রয়েছে, সেখানে আমাদের কৃষিকে অঞ্চলভিত্তিক ছয়টি হটস্পটে ভাগ করা হয়েছে। ছয়টি হটস্পটকে আমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে পর্যালোচনা করে দেখেছি। যে নতুনত্বের কথা বলা হচ্ছে, মূল সংযোজন কীভাবে করা যায় এবং কীভাবে অগ্রসর হলে কৃষির সার্বিক উন্নয়ন হবে, সেটিকে আমরা নয়টি থিমেটিক এরিয়ায় শনাক্ত করেছি।
নয়টি থিমেটিক এলাকায় ২৫টি উপখাত নিয়ে ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যদি এগুলোকে বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে বিভিন্ন রকমের পরিকল্পনা ও প্রকল্পের প্রয়োজন। এজন্য সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। যদিও সেটা করতে গিয়ে আমাদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি নির্দিষ্ট কাঠামোগত পরিকল্পনা এখনো তৈরি করতে পারিনি। সেটি নিয়েই আমরা কাজ করছি।
এখন আমরা ২৫ বছরের একটি দীর্ঘমেয়াদি কৃষি কৌশলগত পরিকল্পনা বা পারসপেক্টিভ প্ল্যানের উন্নয়ন ঘটাতে চাই। ২০৫০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর জনসংখ্যা কত বাড়ছে সেটি হিসাব করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বা বিভাগগুলো মৌলিক খাদ্য নিশ্চিতের জন্য যে কাজগুলো করে থাকে তার আইটেমগুলো শনাক্ত করে সেগুলোর চাহিদাকে শনাক্ত করতে চাই, যোগ করেন কৃষি সচিব।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চবিতে ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, একজনের স্থায়ী বহিষ্কার বহাল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের ঘটনায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর তিন ছাত্রীর বহিষ্কারের মেয়াদ দুই বছর থেকে কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। বাকি এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। তিন মাস পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন ও তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখার কারণে সমালোচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন। ছয় মাস বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রীদের দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স আর একজন মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী। আর স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রী আইন বিভাগের।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিজয় ২৪ হলের (পূর্ব নাম জননেত্রী শেখ হাসিনা হল) ঘটনায় যে ১০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, সে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষককে শারীরিক লাঞ্ছনা করা এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের আদেশ বহাল থাকছে। ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি তিনজনের বহিষ্কারাদেশ কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। এই বহিষ্কারের আদেশ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীদের আবাসিক বিজয় ২৪ হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিতণ্ডা হয় আবাসিক ছাত্রীদের। এ সময় সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা এবং ও ধর্ম অবমাননার কারণে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১১ জনই ছাত্রী। এর মধ্যে ১০ জন ছাত্রীকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই বহিষ্কারের ঘটনায় সারাদেশে বিভিন্ন পক্ষের সমালোচনার মুখে ওই ১০ শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়। স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে আজ সিদ্ধান্তে আবারও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় ছাত্রীদের অভিযোগ, তারা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে ছিলেন না। বরং প্রশাসন যেন এটি ভাঙে, সে দাবি করেছিলেন। এ জন্য তারা আগেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবে প্রশাসন সেটি ভাঙেনি। উল্টো মধ্যরাতে একদল শিক্ষার্থী সেটি ভাঙতে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছে। এসব ঘটনায় হলের আবাসিক শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডিকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন রাতে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ড. মোহাম্মদ কুরবান আলির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা যায় এক ছাত্রীকে। এ ছাড়া কয়েকটি ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ওই ছাত্রীদের বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রক্টর উসকানিমূলক বার্তা দিয়েছেন কিছু শিক্ষার্থীকে। ছড়িয়ে পড়া এসব স্ক্রিনশটে ছিল সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী ও নুরুল হামিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর কথোপকথন।
ফেসবুকের মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় দেখা যায়, এই দুই প্রক্টর ওই ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের জন্য ‘প্রশাসনকে চাপ দিতে’ বলেন।